সকল মেনু

সুন্দরগঞ্জে হরিজন সম্প্রদায়ের কিশোরী ধর্ষণের বিচার দাবি

হটনিউজ ডেস্ক:
প্রেমের পর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে আটকে রেখে টানা দেড় মাস ধরে ধর্ষণ এবং শালিসের নামে মাতবরদের যৌন হয়রানীর বিচার ও শাস্তির দাবীতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে যৌথভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ রবিদাস ফোরাম এবং বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে ঘন্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে বক্তৃব্য দেন- হরিজন যুব ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রাজেশ বাসফোর, সুন্দরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রী কলেজ উপাধ্যক্ষ নাসরিন সুলতানা, রাজনীতিক বীরেন সরকার মিন্টু, কৃষ্ণ সরকার, পুজা উদযাপন পরিষদের উপজেলা সভাপতি নিমাই চন্দ্র ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ বর্মন প্রমূখ।

বাংলাদেশে হরিজন জনগোষ্ঠীর মানুষ অত্যন্ত প্রান্তিক অবস্থায় থাকেন উল্লেখ করে বক্তরা, নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী পরিবারের নিরাপত্তাসহ ওই ঘটনার সাথে যুক্ত সকল আসামীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থাসহ শাস্তি নিশ্চিতের দাবী জানান। পুলিশ সুপারের নির্দেশে থানা পুলিশ তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করা না হলে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ধর্মঘটে যাবেন।

উল্লেখ্য, উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের হরিজন সম্প্রদায়ের এক কিশোরীকে প্রেমের পর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তুলে নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী মোতালেব মিয়া রাজধানী ঢাকার এশটি ভাড়া বাসায় আটকে রেখে টানা দেড় মাস ধর্ষণ করেন। এরপর গত ১৩ জুন আব্দুল মোত্তালেব ঢাকা থেকে গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষীপুর বাজারে কিশোরীকে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়। নিরুপায় হয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী অটোবাইকযোগে ধনিয়ারকুড়া বাজারে এসে মায়ের সহযোগিতায় স্থানীয় এক খলিফার বাড়িতে উঠেন। কিন্তু লোকজন জানতে পেরে ওই বাড়িতে থাকতে না দেয়ায় পরদিন ১৪ মে হায়দার মেম্বারের বাড়িতে রাখা হয় নির্যাতিত ওই কিশোরীকে। রাতে হায়দার মেম্বার নিজেই তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে ধনিয়ারকুড়া বাজারের নাইটগার্ড আব্দুল মতিনের কাছে সাহায্য চাইলে তিনি মোফাজ্জলের বাড়িতে রাখার কথা বলে নিয়ে যাওয়ার সময় পথে ধর্ষণের চেষ্টা চালান।

এরপর ওই কিশোরীকে মোফাজ্জলের বাড়িতে রাখা হলে পরের দিন রাতে তিনিও তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। ভোর রাতে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আবারও ধনিয়ারকুড়া বাজারে আসে নির্যাতিতা কিশোরী। পরে তার মা এলাকায় বিচার চাইলে শালিস বৈঠকে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে গত শুক্রবার (১৮জুন) বিকালে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায় পুলিশ এবং সে রাতেই অপহরণ, ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও সহায়তা করার অপরাধে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতার মা। অভিযুক্ত চারব্যক্তি হলেন, উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের পশ্চিম রামজীবন গ্রামের মৃত ঠ্যাংভাঙ্গা জামালের ছেলে আব্দুল মোত্তালেব (৩৬), মৃত আমির উদ্দিনের ছেলে হায়দার মেম্বার (৫০), তালুক বাজিত গ্রামের ইসি আকন্দের ছেলে আব্দুল মতিন (৫২) ও পশ্চিম রামজীবন গ্রামের মৃত মছির উদ্দিনের ছেলে মোফাজ্জল হোসেন (৪৫)।

সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহিল জামান জানান, তদন্ত চলছে। আসামি ধরতে পুলিশ ব্যাপক তৎপর রয়েছে

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top