সকল মেনু

জম্মু ও কাশ্মীরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক মোদির

হটনিউজ ডেস্ক:

জম্মু ও কাশ্মীরে নির্বাচনের পথে প্রথম পদক্ষেপ নিল মোদি সরকার। জম্মু ও কাশ্মীরের নেতাদের বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বৃহস্পতিবার সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ডিলিমিটেশন বা নির্বাচন কেন্দ্রের পুনর্বিন্যাস নিয়ে কথা বলতে পারেন।

বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এই পুনর্বিন্যাস জরুরি বলে কেন্দ্রীয় সরকারের দবি। তবে কংগ্রেসসহ বেশ কয়েকটি দলের দাবি, জম্মু ও কাশ্মীরকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে।
২০১৮ সালের জুন মাসে জম্মু ও কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় শাসন চালু হয়। তার পরের বছর অর্থাৎ, ২০১৯-এ ৩৭০ ধারা বিলোপ করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরকে ভেঙে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ। জম্মু ও কাশ্মীরে প্রচুর সেনা ও আধা সেনা নিয়োগ করা হয়। ৩৭০ ধারা বিলোপের ফলে জম্মু ও কাশ্মীর বিশেষাধিকার হারায়। সেই সময় সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি, ফারুক আবদুল্লাহ, ওমর আবদুল্লাহকে দীর্ঘদিন ধরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল।

মোদি সরকার মনে করছে, এখন কাশ্মীরের পরিস্থিতি অনেকটা ভালো। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ কমেছে। এর আগে পঞ্চায়েত ও পৌর ভোট করা হয়েছে। এবার বিধানসভা ভোটের প্রক্রিয়া শুরুর চিন্তাভাবনা চলছে। তারই অংশ হিসেবে নির্বাচন কেন্দ্রগুলির ডিলিমিটেশন হবে। তাই এই বৈঠক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কাশ্মীরে মেহবুবা মুফতির পিডিপি, ফারুক আবদুল্লাহ’র ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং আরো কয়েকটি দল মিলে গুপকর জোট তৈরি করেছে। জোটের আলোচনায় ঠিক হয়েছে, তারা বৈঠকে যোগ দেবেন। তারা আগে শুনবেন প্রধানমন্ত্রী কী বলেন।

তবে কংগ্রেস ঠিক করেছে, তারা পূর্ণ রাজ্যের দাবি করবে। এমনিতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভা থাকতে পারে। যেমন দিল্লির আছে। কিন্ত সেখানে নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা খুবই কম থাকে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই সমস্যায় জেরবার। কংগ্রেসের তরফে গুলাম নবি আজাদ বৈঠকে যাবেন এবং তিনি পূর্ণ রাজ্যের দাবি করতে পারেন। তবে কংগ্রেস ৩৭০ ধারা আবার ফিরিয়ে আনার দাবি করবে কি না, তা জানায়নি। কিন্তু গুপকর জোট এই দাবিতে অনড় থাকতে পারে। তারা আগে জানিয়েছিল, ৩৭০ ধারা আবার ফিরিয়ে আনতেই হবে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুধবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। কাশ্মীরে নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। প্রচুর পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর সেনাকে মোতায়েন করা হয়েছে। বুধবার ডিলিমিটেশন কমিশনও জম্মু ও কাশ্মীরের সব জেলার ডেপুটি কমিশনারের সঙ্গে ভিডিও-বৈঠক করেছে। তাদের সঙ্গে ডিলিমিটেশন নিয়ে আলোচনাপর্ব সেরে রেখেছে কমিশন। ফলে কেন্দ্রের তরফে প্রস্তুতি শেষ।

দীর্ঘদিন পরে কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। কোনো সন্দেহ নেই এটা বড় পরিবর্তন। যে নেতাদের অনেককে প্রায় এক বছর ধরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল, আজ তাদের সঙ্গেই বৈঠক করবেন মোদি। এর আগে ফারুকের বাবা শেখ আবদুল্লাহ’র সঙ্গেও এটাই ঘটেছিল। তাকে জেলে বন্দি করা হয়েছিল। তারপর মুক্তি দিয়ে আবার তার সঙ্গে আলোচনা করে কাশ্মীরে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করেছিল সেসময়ের কংগ্রেস সরকার।

ডিলিমিটেশনের ফলে কী হতে পারে? বিজেপি নেতা বিজয় সোনকর শাস্ত্রী বলেছেন, জম্মু ও কাশ্মীরে ডিলিমিটেশন হলে দলিত ও আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ২৫টি বেড়ে যাবে।

মেহবুবা মুফতি বলছেন, তিনি এই পরিকল্পনার কথা শুনে বিপন্ন বোধ করছেন। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, তারা ডিলিমিটেশনের বিরোধ করবেন।

সেক্ষেত্রে বৈঠক থেকে কতটা লাভ হতে পারে? প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা জানিয়েছেন, ”কাশ্মীরের নেতারা যদি ৩৭০ নিয়ে তাদের আগেকার অবস্থানে অনড় থাকেন, তাহলে অচলাবস্থা জারি থাকবে। কারণ মোদি সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ৩৭০ ফিরিয়ে আনার কোনো সম্ভাবনা নেই। জম্মু ও কাশ্মীরের দলগুলি যদি এই অবস্থান মেনে নিয়ে ডিলিমিটেশনে সায় দেয়, তাহলেই প্রক্রিয়া এগোবে। কিন্তু তার সম্ভাবনা কম। মোদি সরকারও ডিলিমিটেশনের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।”

সূত্র: ডয়েচে ভেলে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top