সকল মেনু

আওয়ামী লীগের মতবিনিময়ে প্রার্থী চূড়ান্ত করাই লক্ষ্য

Flag20130903202500নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, ৪ সেপ্টেম্বর:  আসন্ন দশম জাতীয় সংসদ নিবার্চনকে সামনে রেখে জমে উঠছে রাজনৈতিক মাঠ। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ শুরু করেছে আগাম নির্বাচনী প্রচারণা।

জনসভা করে নৌকায় ভোট চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে আজ থেকে শুরু হচ্ছে প্রার্থী মনোনয়নে তৃণমৃল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, মহানগর ও পৌর কমিটিগুলির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে মতিবিনিময়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করাই এর লক্ষ্য। আজ বুধবার থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে শুরু হচ্ছে এ কমসূচি। পরবর্তী সভাগুলি হবে ৮, ৯ ও ১১ সেপ্টেম্বর।
এদিকে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচনী প্রচার, দলীয় প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাই, এমপি, মন্ত্রী ও দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দল ও দূরত্ব কমাতে দেশব্যাপী সফর শুরু করেছে আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দ।
সফর শুরুর চারদিন পর দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সম্পর্কে খোঁজখবর ও তথ্য সরবরাহের কাজও শুরু করেছে দলটি। এদিকে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগও দেশব্যাপী সাংগঠনিক কমসূচি শুরু করবে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে।
উদ্দেশ্য আগামি নির্বাচন। পর্যবেক্ষকদের মতে, আওয়ামী লীগের এই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা এখনও পুরোপুরি সম্পৃক্ত হতে পারেনি যদিও দলের নীতিনির্ধারকরা নির্বাচনমুখী কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে।
আওয়ামী লীগ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কঠোর অবস্থান থাকলেও বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের প্রধান দল বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর অধীন নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিপক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে।
দলটি বলছে তারা কোনভাবেই একতরফা নির্বাচন হতে দিবে না। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণারও কঠোর সমালোচনা করছে বিএনপি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। এই অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি-না তা নিয়ে তারা সংশয়গ্রস্ত। অপরদিকে আওয়ামী লীগ ১২ সেপ্টেম্বরের সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়ে সমঝোতা ও আলোচনার প্রস্তাব দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছে বিএনপিকে।
তবে বিএনপি আওয়ামী লীগের প্রস্তাবকে আমলে নিচ্ছে না। তাদের দাবি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে থামে এখনও তা অনিশ্চিত।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের এই অবস্থানকে দ্বিমুখী বলছে বিএনপি। তাদের মতে, দলটি একদিকে যেমন নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমে পড়েছে তেমনী বিএনপিকে আলোচনার প্রস্তাবও দিচ্ছে। কোন সমাধান ছাড়াই দেশে কোন নির্বাচন হবে না বলে মনে করছে বিএনপি।
দলীয় সূত্রগুলি বলছে ,আওয়ামী লীগ নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায় উন্নয়ন ও জনকল্যাণমুখী কর্মকান্ডের উপর ভর করে। এর আগে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনে তারা।
সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে আগামি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে আওয়ামী লীগ। তারা এখন পর্যন্ত সেই অবস্থানে অনড় আছে ।
এদিকে বুধবার গণভভনে যে সাতটি জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রাথী মনোনয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মতবিনিময় করবেন সেগুলি হলো দিনাজপুর, জামালপুর, ভোলা, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, গাজীপুর।
এসব জেলাধীন, উপজেলা ও প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার নেতৃবৃন্দ মতবিনিময়ে অংশ নেবেন। দলীয় সূত্রগুলি বলছে এই মতবিনিময়েই দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
দলীয় সূত্রে আরো জানা যায়, দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীর সম্ভাব্য তালিকা চূড়ান্ত করা হয়ে যাবে এই সভায়।
এছাড়াও নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে বর্তমান এমপি ও মন্ত্রীদের কর্মকা-সহ তাদের ভাবমূর্তি ও জনপ্রিয়তার দিকটি খোঁজ নেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস।
বৈঠকের ব্যাপারে জানতে চাইলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ রাইজিংবিডিকে বলেন, গণভবনে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে জানি কিন্তু প্রার্থী মনোনয়নের ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না।
সভায় কি আলোচনা হয় পরে বলা যাবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বলেন, দেখি যাই, কি সিদ্ধান্ত হয় পরে বলবো। সামনে নির্বাচন।
এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আর সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সভানেত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে সংগঠনের স্বার্থে কাজ করবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেন, ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো সারাদেশে সাংগঠনিক সফর শুরু করে দিয়েছে।
দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন জনসভায় আগামি নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার সুযোগ চাইছেন। এছাড়া দলীয় ইশতেহার তৈরীর কাজসহ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টাকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top