সকল মেনু

করোনামুক্তির প্রার্থনায় গির্জায় গির্জায় পালিত হচ্ছে বড়দিন

বৈশ্বিক মহামারি করোনা থেকে মুক্তি লাভের আশায় বড়দিনের প্রার্থনায় সামিল হয়েছেন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা। সারা বিশ্বের মানুষের মঙ্গল কামনা এবং দেশ ও জাতির শান্তি কামনায় শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার গির্জা ও উপাসনায়ে প্রার্থনা শুরু হয়েছে।

সকালে রাজধানীর তেজগাঁও ক্যাথলিক চার্চে নব অভিষিক্ত আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ ক্রুজ প্রার্থনা পরিচালনা করেন এবং খ্রিষ্টযোগে অংশ নেন। আর্চ বিশপ এসময় বলেন, ‘আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেই তার পুত্রকে, আমাদের মুক্তিদাতা, ত্রাণকর্তাকে, তিনি যখন পাঠিয়েছেন, তিনি তখন দেহ ধারন করেছেন। তিনি মানুষ হয়েছেন আমাদের মুক্তির জন্য। আর এই মুহূর্তে আমরাসহ সারাবিশ্ব শঙ্কিত, ভীত করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে। আমরা প্রার্থনা করি যাতে সারাবিশ্ব এবং প্রতিটি মানুষ এই মহামারি থেকে মুক্তি লাভ করে, করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি লাভ করে। যাতে আবার আমরা সুখে শান্তিতে একাত্মতার মধ্যে জীবন যাপন করতে পারি।’

সকাল সাড়ে ৮টায় কাকরাইলের সেন্ট ম্যারিস ক্যাথেড্রাল চার্চে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। চার্চের ফাদার বিমল ফ্রান্সিস গোমেজ বলেন, যিশুখ্রিস্ট এ পৃথিবীতে এসেছিলেন শান্তির বারতা নিয়ে। আমাদের প্রার্থনা ছিল সারা বিশ্বের মানুষের মঙ্গল এবং দেশ ও জাতির শান্তি কামনা। একই সঙ্গে সমগ্র বিশ্ব যেন করোনামুক্ত হয় সেটিও আমাদের প্রার্থনা।

একই সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী সবার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে বড়দিন উৎসব উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন চার্চ ও গির্জায় গির্জায় বর্ণিল আলোকসজ্জা করা হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী জাঁকজমকপূর্ণ এই সাজসজ্জায় গোশালা স্থাপন, রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে দৃষ্টিনন্দনভাবে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে।

দুই হাজার ২০ বছর আগের ২৫ ডিসেম্বর জন্ম নেন খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, পৃথিবীতে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়া, মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করা এবং সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার করতে পৃথিবীতে তাঁর আগমন ঘটেছিল। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্ট ধর্মানুসারীরা আজ যথাযথ ধর্মীয় আচার, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করবেন। তবে মহামারি করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বড়দিনের উত্সব উদযাপনের আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।

ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পাস্টার লিওনার্ড বিধান রায় বলেন, ‘বড়দিন হচ্ছে, বিশ্বের সমগ্র মানবজাতির পাপমুক্তির দিন। এদিনে প্রভু যিশু স্বর্গধাম থেকে ধরাধামে এসেছিলেন। মানবজাতির মুক্তির জন্য জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এ জন্যই আমরা বড়দিন উদযাপন করি।’ তিনি বলেন, বড়দিন উপলক্ষে আলোকসজ্জাসহ সব আয়োজন হবে। তবে করোনার জন্য কিছু প্রস্তুতি সীমিত করা হয়েছে। বহিরাগতরা গির্জায় প্রবেশ করতে পারবে না। নগর কীর্তন হবে না। শুধু প্রার্থনা, কেক কাটা ও ধর্মীয় আরাধনাসংগীতের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ হবে। করোনা প্রতিরোধে গির্জায় হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবস্থা, উপাসনায় দেড় থেকে দুই ফুট দূরত্ব বজায় রাখা ও অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করে প্রবেশ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top