সকল মেনু

রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংক চাঙ্গা করতে নড়েচড়ে বসছে সরকার

আফিফা জামান,ঢাকা, ২০ আগস্ট: রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংক চাঙ্গা করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।রাষ্ট্র মালিকানাধিন সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের খেলাপি ঋণ, জালিয়াতি এবং আর্থিক ভিত দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে সরকার উদ্যোগগুলো নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।এরই ধারাবাহিকতায় রোববার রাষ্ট্রখাতের বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি দূর করতে অর্থ সরবরাহ করবে সরকার। বিশ্বস্ত একটি সূত্র মতে- মূলধনের পরিমান হতে পারে ৫ হাজার কোটি টাকা। প্রায় এক হাজার কোটি টাকা মূলধন ঘাটতির বিপরীতে এ অর্থ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

ব্যাংক ছয়টির বিনিয়োগযোগ্য তারল্যের ঘাটতি কমাতেও অর্থমন্ত্রনালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সুদৃষ্টি বাড়াবে। একই সঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে বা গ্রাহকদের সামান্য চাপ বাড়লেও ব্যাংকগুলোকে কলমানি মার্কেটে যাতে করে হাত পাততে না হয় সে ব্যাপারে সরকার বেশ নড়েচড়ে বসেছে বলে জানা গেছে।

এছাড়াও ব্যাংকিং খাতের কেলেঙ্কারি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্ষমতা ইতিমধ্যে বাড়িয়ে জাতীয় সংসদে ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৩’ পাস করেছে সরকার।
এর ফলে ব্যাংকিংখাতে সুশাসন জোরদারসহ জবাবদিহিতা বাড়বে বলে মনে করেছেন ব্যাংক নির্বাহীদের শীর্ষ সংগঠন এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এর সভাপতি ও এনসিসি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুল আমিন।

তিনি হটনিউজকে বলেন, ব্যাংকিংখাতে এ আইন বাস্তবায়ন হলে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারিসহ সকল ব্যাংকেই সুশান ও জবাবদিহিতা বাড়বে। একই সঙ্গে ব্যাংকখাতের দুর্দিন স্থায়ীভাবে কেটে যাবে বলে আশাবাদি এ ব্যাংকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫২ হাজার ৩১০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ হাজার ৩১০ কোটি টাকা বেশি।
অর্থাৎ ব্যাংকগুলোতে এক বছরের ব্যবধানে ২৩ হাজার ৩১০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এরমধ্যে শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত ৪ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। কেবল সোনালী ব্যাংকের খেলাপী ঋণের পরিমাণই প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা।

এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। খেলাপি ও আর্থিক জালিয়াতি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর মুনাফায় বড় ধস নেমেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা অর্থমন্ত্রীর নিকট জমা দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলোকেও পৃথকভাবে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার কারণ ও অবস্থা উত্তরণের কৌশল জানাতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ হটনিউজকে বলেন, সরকারের আন্তরিকতার অভাব, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা ব্যর্থতার কারণেই রাষ্টায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

ব্যাংকগুলো ঋণগ্রহীতা নির্বাচনেই ভুল করে। দুর্নীতি, প্রভাব খাটানো, অদক্ষতা প্রভৃতি বিষয় এক্ষেত্রে কাজ করে।

ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে যাওয়ার পেছনে খেলাপী ঋণ বৃদ্ধি অন্যতম কারন বলেও মনে করেন এ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ।bank20130820043029 (1)

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top