সকল মেনু

কোথায় কোন নেতার ঈদ

Al-bnp-japa-sm20130807123653হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা:আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিকটবর্তী হওয়ায় ঈদের উৎসবে এবার থাকছে নির্বাচনী আমেজ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির তিন প্রধান নেতা ছাড়া সিনিয়র নেতাদের বেশিরভাগই নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ উৎসবে অংশ নিচ্ছেন।অনেকে ইতোমধ্যেই পৌঁছে গেছেন নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায়। ঈদের পরও কয়েকদিন নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করে তারা টানা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ
সরকারি দল আওয়ামী লীগের নেতারা ঈদকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার পাশাপাশি এলাকার মানুষকে কাছে টানতে চাইছেন। অধিকাংশ নেতা তার নির্বাচনী
এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। নির্বাচনকে টার্গেট করে উঠোন বৈঠক, কর্মীসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তারা।

অনেকে আবার ঢাকায় ঈদ করবেন বলে আগেই নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি ঈদ করবেন ঢাকায়। আর এ কারণেই গত কয়েকদিন ধরেই নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। ঈদের আগের দিন তিনি ঢাকায় আসবেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।

উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য তোফায়েল আহমেদ এমপি প্রতিবারের মতো এবারও তার নির্বাচনী এলাকা ভোলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবেন। ইতোমধ্যেই তিনি ভোলা চলে গেছেন।

উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপিও সুনামগঞ্জে তার নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করবেন বলে জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমপি ঈদ করবেন ঢাকায়। তবে তিনি এখন নির্বাচনী এলাকায় রয়েছেন। বুধবার তার ঢাকায় ফেরার
কথা রয়েছে।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ঈদ উপলক্ষে কয়েক দফায় এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। তিনি ঢাকায় ঈদ করতে পারেন বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা মাহফুজুল হক হটনিউজকে জানিয়েছেন।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ঈদ করবেন সিরাজগঞ্জের তার নিজ এলাকায়। আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা এখন ভারতে রয়েছেন। ঈদের আগেই তার ফিরে আসার কথা রয়েছে।

সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন হটনিউজকে জানান, তিনি নিজ এলাকা মুন্সীগঞ্জে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ করবেন।

এছাড়া কাজী জাফরুল্লাহ ঈদ করবেন তার নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরে। সভাপতিমণ্ডলীর অন্য সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাহারা খাতুন ঈদ করবেন ঢাকায়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি ঢাকায় ঈদ করবেন বলে তার ব্যক্তিগত সহকারী তোফাজ্জল হোসেন হটনিউজকে জানিয়েছেন। ঈদ উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের নির্বাচনী এলাকায় কয়েক দফায় বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশও নিয়েছেন তিনি। এ সময় তিনি বেশ কিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডেরও উদ্বোধন করেন।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ঈদ করবেন নিজ এলাকা কুষ্টিয়ায়। তিনি ১২ আগস্ট পর্যন্ত সেখানে থাকবেন বলে হটনিউজকে জানান।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি ঈদ করবেন ঢাকায়। তিনি এ মুহূর্তে বিদেশে রয়েছেন। ঈদের আগের দিন তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ঈদ করবেন ঢাকার মোহাম্মদপুরে তার নির্বাচনী এলাকায়।

এছাড়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দিনাজপুরে, আহমদ হোসেন নেত্রকোনায় এবং বিএম মোজাম্মেল ও আফম বাহাউদ্দিন নাছিম ঈদ করবেন শরিয়তপুরে। সাংগঠনিক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জয়পুরহাটে ও মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ঈদ করবেন সিলেটে।

রমজান ও ঈদকে কাজে লাগিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর পাশাপাশি জনমত গঠনে সব নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সর্বশেষ সোমবারের মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক থেকেও তিনি একই নির্দেশ দেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব না কমালে মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেও ইতোপূর্বে সর্তক বাণী উচ্চারণ করেন তিনি।

সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতারাই ঈদ করছেন ঢাকার বাইরে তাদের নির্বাচনী এলাকায়। যারা এলাকায় ঈদ করতে পারছেন না তারা ঈদের আগে ও পরে এলাকায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সময় দিচ্ছেন। একই সঙ্গে জনমত গঠনে কাজ করছেন তারা।

বিএনপি
৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন উজ্জীবিত। তারা মনে করছেন, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারাই আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন তারাই জিতেছেন। এবার হবে ঠিক তার উল্টো। এবার বিএনপির মনোনয়ন মানেই বিজয়। আর মনোনয়ন পেতে হলে নেতাকর্মী ও জনগণের কাছে যেতে হবে। আর নেতাকর্মী ও জনগণকে কাছে টানতে ঈদকে কাজে লাগাতে চাইছেন দলটির নেতারা।

বেশিরভাগ নেতা ঈদ উদযাপন করছেন তাদের নির্বাচনী এলাকায়। বাদ যাননি পাতি নেতারাও।

বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া ঈদের দিন সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশিষ্ট নাগরিক, রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এরপর একই স্থানে কূটনীতিবিদদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।

সেখানে যাওয়ার আগে জিয়ার মাজার জিয়ারত করবেন খালেদা জিয়া।

দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঈদ করবেন ঢাকায়। উত্তরা ৪নং সেক্টর জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। এরপর বিএনপি প্রধান খালেদার অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

মির্জা ফখরুল বিকেলে রাজনীতিক, বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাবেন।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশররফ হোসেন ঈদের নামাজ পড়বেন তার নিবার্চনী এলাকা কুমিল্লার দাউদকান্দিতে।

ঈদের দিন সকালে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে তিনি কুমিল্লার দাউদকান্দি যাবেন। এরপর দাউদকান্দি ঈদগাহ মাঠে নামাজ আদায় করবেন।

নামাজ শেষে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, সাধারণ নাগরিক ও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। দুপুরেই ঢাকায় ফিরবেন মোশররফ।

ড. আর এ গনি ঈদের নামাজ পড়বেন রাজধানীর ধানমণ্ডি ঈদগাহ মাঠে। ঈদের নামাজ শেষে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে।

ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ঈদের নামাজ পড়বেন ঢাকার ইস্কাটনের জামে মসজিদে। এরপর তিনি তার নিবার্চনী এলাকা পল্লবীতে যাবেন। সেখানে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

এম কে আনোয়ার ঈদ করবেন তার নিবার্চনী এলাকা কুমিল্লার হোমনায়। স্থানীয় জামে মসজিদে নামাজ আদায় শেষে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এমপি নামাজ পড়বেন ধানমণ্ডির ৭ নম্বর রোডের জামে মসজিদে। এরপর বাসায় আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান ঈদের নামাজ পড়বেন তার নিবার্চনী এলাকা নরসিংদীর বেলাবো ঈদগাহ মাঠে।

নামাজ শেষে তিনি নিবার্চনী এলাকার বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। ঈদের দু’দিন আগেই এলাকায় যাচ্ছেন তিনি। ঈদের পরের দিন ঢাকায় ফিরবেন।

মির্জা আব্বাস শাজাহানপুরের শহীদবাগ জামে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়বেন। নামাজ শেষে সাধারণ জনগণের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অধিকাংশই ঈদ করবেন যার যার নিবার্চনী এলাকায়।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা এ বছর যার যার এলাকায় যাবেন। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে তারা আগামী নিবার্চনী প্রচারণার কাজটি করবেন বলে সূত্র জানায়।

জাতীয় পার্টি
দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার ঢাকার নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করবেন। ঈদের নামাজ আদায় করবেন গুলশান আযাদ মসজিদে। নামাজ শেষে যাবেন বনানীস্থ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে।

সেখানে বিকেল পর্যন্ত সর্বস্তরের জনগণ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।

পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদ ঈদের নামাজ আদায় করবেন নিজ গ্রাম কুমিল্লার চিওড়ার রাজার মাঠে।

মঙ্গলবারই চিওড়া গেছেন তিনি। ঈদের পরেও বেশ কয়েক দিন তিনি সেখানে অবস্থান করবেন।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার তার নির্বাচনী এলাকা বরিশালের বাকেরগঞ্জে ঈদ উৎসব পালন করবেন। ঈদের আগের দিন তিনি সেখানে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যরিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ঈদ উৎসব উদযাপন করবেন নিজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে। ঈদের নামাজ পড়বেন হাটহাজারী মাদ্রাসায়। নামাজ শেষে নির্বাচনী এলাকার সাধারণ জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।

প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক গোলাম হাবিব দুলাল ঈদ করবেন নির্বাচনী এলাকা কুড়িগ্রামের চিলমারীতে। মঙ্গলবার তিনি চিলমারীতে পৌঁছেছেন। অংশ নিচ্ছেন কর্মীসভা ও ইফতার কর্মসূচিতে। ঈদের পর আরও ৩ দিন সেখানে অবস্থান করবেন। অংশ নেবেন বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে।

প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান নির্বাচনী এলাকা ঢাকার বনশ্রীতে, জিয়াউদ্দিন বাবলু গুলশানে ও কাজী ফিরোজ রশীদ ধানমণ্ডিতে ঈদ উদযাপন করবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top