সকল মেনু

খুলনার জাহিদ হত্যা মামলার ১ আসামি গ্রেপ্তার

মেহেদী হাসান,খুলনা থেকেঃ আমার ছেলেকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে মারছে। ছেলেকে হাসপাতালে রেখে তারা পালিয়ে যায়। তাকে ডেকে নিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটায়। এরকম অভিযোগ মৃত জাহিদের মা রাবেয়া খাতুনের। গত শুক্রবার রাত আনুমানিক ৯টায় খুলনা সদর থানার ওসি মিজানুর রহমানকে এ কথা বলে তিনি তার ছেলের হত্যার বিচার চেয়ে হত্যা মামলা করেন।মামলায়, জাহিদের সহ ধর্মিনী উম্মে রুম্মান, বোন পারভিন ও দুলা ভাই মমিনুল ইসলাম কে আসামি করে মামলা নিয়েছে সদর থানা।

ওসি মোঃ এম.এম.মিজানুর রহমান, জানান, ৩০৬/৩৪ ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলাটি এস আই মোঃ কামাল হোসেনের কাছে তদন্তর জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় ১নং আসামি উম্মে রুম্মানকে আটক করা হয়েছে। বাকি দুই আসামি কে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান।

মৃত জাহিদের মা রাবেয়া খাতুন শোকাহত কান্নায় ওসি কে বলেন, শনিবার জাহিদকে তার স্ত্রী উম্মে রুম্মান খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করার পর পালিয়ে যায়।আমরা হাসপাতালে যেয়ে দেখি জাহিদ একাই ছিল। ওখানকার লোকজন বলে একটা মহিলা ও একজন মরুব্বী আপনার ছেলেকে ভর্তি করান। তার পর থেকে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিছে।

জাহিদের ছোট বোন আইরিন বলেন, হাসপাতালে গিয়ে দেখি, ভাইয়ের পোড়া শরীর সামনের দিক থেকে দেখে আমি চিনতে পারিনি। একাধিকবার চিকিৎসকদের বলেছি ও আমার ভাই না। পরে তার পেছন সাইট দেখে চিনতে পারি ও আমার ভাই। হাসপাতালে কে ভর্তি করিয়াছে, তখন বলে এক মহিলা ও সাথে এক লোকছিল। তারাই বলেছে গ্যাস সিলিন্ডার ব্লাস্ট হয়ে তার গায়ে আগুন লেগে যায়।গত রোববার রাত ৯টার দিকে ঢাকা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার ভাই মারা যায়। ভাইয়ের ব্যবহৃত দামি দুইটি মোবাইল সেট ও ম্যানিব্যাগের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। আমার ভাইয়ের কাছ থেকে সোনা ও টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার পর উম্মে রুম্মান ভাইকে ডিভোর্স দিছে। তার যা নেয়ার দরকার সবতো পেয়ে গেছে। এখন তার ভাইকে প্রয়োজন শেষ হওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন আইরিন।গত মঙ্গলবার এশার বাদে ভাইয়ের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। বড় ভাই সবুজ রাত ৮টার পর খুলনায় এসে পৌছান। তার উপস্থিতিতেই জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন উম্মে রুম্মানের বড় বোন পারভিন বলেন, জাহিদ তার বাপের বাড়িতে আমাদের দেয়া জামা-কাপড় দিতে আসে। একটি ব্যাগের মধ্যে জামা-কাপড় ছিল। ওই ব্যাগের মধ্যে প্যাট্রোল ছিল, জাহিদ ওটা নিজের গায়ে ঢেলে ম্যাচলাইট দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এটা তার ছোট বোন উম্মের কাছ থেকে জানতে পেরেছি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সন্ধ্যায় জাহিদ হোসেন তার শ্বশুর বাড়ি নিরালা বাগমারা সবুরলেনে গেলে তার শরীর আগুন পুড়ে ঝলসে যায়। তার স্ত্রী উম্মে রুম্মান তাকে খুমেক হাসপাতালে ভর্তির সময় তাকে গ্যাস সিলিন্ডার বাস্ট হয়ে আগুন লেগেছে ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। ভর্তির পর রুম্মান ২-৩ ঘন্টা খুমেক হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যান। কয়েক ঘন্টা পর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নিজেও আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন। খুলনা থানার ওসি হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন। তারা জাহিদকে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক ঢাকায় রেফার্ড করেন। ওই দিন রাত থেকে জাহিদের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের হেফাজতে নিয়ে হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।গত রোববরা রাত ৯টার দিকে বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা চিকিৎসাধীন জাহিদকে মৃত ঘোষনা করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top