সকল মেনু

সাবেক রাষ্ট্রদূত জামান নিখোঁজ

হটনিউজ ডেস্ক: সাবেক রাষ্ট্রদূত এম মারুফ জামান একদিন ধরে নিখোঁজ বলে তার পরিবার জানিয়েছে।মারুফ জামান সর্বশেষ ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ধানমণ্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পারভেজ ইসলাম মঙ্গলবার রাতে বলেন, বিদেশ ফেরত মেয়েকে আনতে সোমবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ধানমণ্ডির বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে বের হন মারুফ জামান। তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পেয়ে মেয়ে একাই বাসায় চলে আসেন।

একদিনেও বাবার খোঁজ না পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ধানমণ্ডি থানায় জিডি করা হয়েছে বলে মারুফ জামানের মেয়ে সামিহা জামান জানিয়েছেন।

এরপর রাতে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে পূর্বাচলমুখী তিনশ ফুট সড়কে মারুফ জামানের গাড়ি পাওয়া গেছে বলে পরিদর্শক পারভেজ জানিয়েছেন।

তবে তার অবস্থান সম্পর্কে এখনও কিছু জানতে পারেনি পুলিশ।

সামিহা জামান বলেন, বড় বোনের সঙ্গে দেখা করতে কয়েক সপ্তাহ আগে বেলজিয়াম গিয়েছিলেন। সোমবার রাত ৮টায় ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।

“বাবার জন্য দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে তাকে না পেয়ে চাচার সঙ্গে কথা বলে ধানমন্ডির বাসায় চলে আসি। বাবা নিজেই গাড়ি চালিয়ে বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। সেটি অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হলেও বাবার সন্ধান মেলেনি।”

খিলক্ষেত থানা পুলিশ রাত ১০টার দিকে তিনশ ফুট সড়ক থেকে মারুফ জামানের গাড়িটি উদ্ধার করে বলে ধানমণ্ডি থানার ওসি মো. আবদুল লতিফ জানিয়েছেন।

ধানমণ্ডিতে পৈত্রিক জমিতে করা ছয়তলা ভবনের তৃতীয় তলায় মারুফ জামান থাকেন। ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় থাকেন তার ছোট ভাই রিফাত জামান।

তিনি বলেন, মারুফ জামান ১৯৭৭ সালে সেনাবাহিনীতে সিগন্যাল কোরের ‘ষষ্ঠ শর্ট কোর্সে’ ক্যাপ্টেন হিসেবে যোগ দেন। পরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ওই চাকরি থেকে চলে আসেন।

“১৯৮২ সালে আর্মি থেকেই ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন ভাই। প্রথম দিকে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি ছিলেন। পরে ২০০৭ সালের পর থেকে কাতারে এবং তারপর ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।”

ভাইয়ের দেওয়া তথ্য মতে, মারুফ জামান সর্বশেষ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্ট্যাডিজে (বিআইএসএস) অতিরিক্ত মহাপরিচালক ছিলেন। ২০১৩ সালে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর চাকরি থেকে অবসরে যান তিনি।

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গাড়ি নিয়ে বেরোনোর ঘণ্টাখানেক পর মারুফ জামান বাসায় ফোন করে কয়েকজন লোক গেলে তাদের কাছে তার ল্যাপটপ দিতে বলেছিলেন বলে জানান রিফাত জামান।

“পরে তিনজন ‘সুঠামদেহী’ লোক বাসায় আসে, যাদের দুজন ইয়াং। তারা একটি ল্যাপটপ, কম্পিউটারের সিপিইউ, ক্যামেরা ও একটি স্মার্টফোন নিয়ে যায়, উনার ঘরে তল্লাশিও করে।”

রিফাত বলেন, ২০১২ সালের এপ্রিলে তাদের মা মারা যান। এরপর ওই বছর ডিসেম্বরে ভাইয়ের স্ত্রীর মৃত্যু হয়। পরের বছর বাবা মারা গেছেন।

“এসব কারণে ভাই (মারুফ জামান) মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।” মারুফ জামানের দুই মেয়ের মধ্যে একজন প্রবাসী বলে জানান তিনি।

গত অগাস্ট থেকে চার মাসে ঢাকায় রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী মিলে ডজনখানেক মানুষ নিখোঁজ হন। তাদের মধ্যে ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ রায়সহ চারজন পরিবারের কাছে ফিরে এলেও অধিকাংশের এখনও সন্ধান জানা যায়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top