সকল মেনু

ত্বকের রঙে চুলের রং

বয়স, চেহারার গড়ন, দেহের উচ্চতা, চুলের ধরন- সর্বোপরি লাইফস্টাইলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চুলের রং বাছাই প্রয়োজন। তবে যাদের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে ভিন্ন স্টাইলগুলো মানিয়ে যায় তারা ভিন্নতা আনতেই পারেন।

শারমিন লাকি
উপস্থাপক, মডেল ও বাচিকশিল্পী

গায়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে চুলে রং করলে চেহারাই বদলে যায়। সোজা, কোঁকড়া, ছোট, বড় সব ধরনের চুলেই রং করা যায়। যা অন্য সবার থেকে আপনাকে আলাদা করে তুলতে পারে।

চুলে রং করা নিয়ে এই সময় থেকে যোগাযোগ করা হয় উপস্থাপক, মডেল ও বাচিকশিল্পী শারমিন লাকির সঙ্গে। এ বিষয়ে তার ভাষ্য, ‘প্রাকৃতিক উপাদানের মিশ্রণে তৈরি রংগুলোই চুলের পক্ষে বেশ উপযোগী। তবে কৃত্রিম রং ব্যবহার করলে অবশ্যই নিয়মিত বিভিন্ন হেয়ার প্যাক লাগাতে হবে কিংবা হট অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করতে হবে।’

কার চুলে কেমন রং করতে হবে জানতে চাইলে শারমিন লাকি বলেন, ‘মুখের রঙের সঙ্গে চুলের রঙের সমন্বয় থাকা প্রয়োজন। তাই এমন শেইড নির্বাচন করা ঠিক নয়, যাতে চুলের কারণে ত্বক মলিন লাগে। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের মানুষের ত্বক বা স্কিন টোন যেহেতু শ্যাম বর্ণের হয় তাই এর সঙ্গে ব্রাউন, কপার, জিঞ্জার, বাটার স্কচ, কপার-ক্যারামেল, মিডিয়াম অ্যাশ, বারগেন্ডি

ইত্যাদি শেইডের সংমিশ্রণ ভালো মানায়। আবার বয়স, চেহারার গড়ন, দেহের উচ্চতা, চুলের ধরন’ সর্বোপরি লাইফস্টাইলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চুলের রং বাছাই প্রয়োজন। তবে যাদের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে ভিন্ন স্টাইলগুলো মানিয়ে যায় তারা ভিন্নতা আনতেই পারেন।’

রঙের বাহার!

মুখের গড়ন ও গায়ের রঙের সঙ্গে মিল রেখে চুলের স্টাইলে বাহারি রং নির্বাচন করতে হবে। তবে রং নির্বাচনে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলে কোনো রূপবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।

বারগান্ডি রং: চুলের রঙের জন্য বারগান্ডি রং সবচেয়ে ভালো হয়। কারণ এটি যেকোনো গড়ন ও রঙের স্কিন টোনের সঙ্গে মানিয়ে যায়। এই রংটির বিশেষত্ব হচ্ছে এটি আলোতে নিজস্বতা ফুটিয়ে তুলে। চাকরিজীবীরা অনায়াসে এই রংটি বেছে নিতে পারেন।

রিচ ব্রুনেট:
ব্রুনেট হচ্ছে চকলেটের চেয়েও ডার্ক একটা রং। সাধারণত যাদের ত্বকের রং কালো অথবা শ্যামলা তাদের এই রং বেশ মানিয়ে যায়। এতে তাদের আরো উজ্জ্বল লাগে। লম্বা স্ট্রেইট চুলে কালার করলে সামনের দিকের চুলে লেয়ার করে নিতে পারেন। আবার কার্ল চুলেও অনায়াসে এই রং ব্যবহার করতে পারেন।

ডার্ক চকলেট: চুলের রঙের জন্য ডার্ক চকলেট রং অনেক দিন ধরেই ব্যবহার করা হচ্ছে। যেকোনো রঙের ত্বকেই এটি বেশ মানিয়ে যায়। এক্ষেত্রে চুল লম্বা হলে কালার করার আগে নিচের দিকে লেয়ার, লেজার অথবা স্টেপ লেয়ার কাট দিয়ে নিতে পারেন। এই রঙের একটি বিশেষ সুবিধা হচ্ছে, এটি ব্যবহারে চুলের রঙের পার্থক্য খুব বেশি বোঝা যায় না। ফর্মাল লুক বদলে দিতে চাইলে অনায়াসে এই রং ব্যবহার করতে পারেন।

গোল্ডেন কপার: এই রং উজ্জ্বল ত্বকের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মানানসই। বিশেষ করে যাদের

গোলাপি, পার্পেল ও সবুজ রঙের পোশাকে অনেক ভালো লাগে। কারণ চুলের এই রংটি সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে মানায় না। বিশেষ করে কার্ল মাঝারি সাইজের চুলে এই রং বেশ ভালো লাগবে।

ভেজিটেবল ডাই: মেহেদি বা হেনার পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করা পেস্ট এক ঘণ্টা লাগিয়ে রাখলে চুলে কালার ধরে যায়। সাধারণত লালচে কালার হয়। সিন্থেটিক হেনা প্রোডাক্টগুলো হেনা এবং মেটালিক ডাইয়ের সংমিশ্রণ। এতে লাল শেডের কালার পাওয়া যায়।

হাইলাইটস: গোলাপি আভা কিংবা হলুদাভ ত্বকের ক্ষেত্রে কমলা রং এড়িয়ে চলুন।  অলিভ বা কালচে ত্বক যাদের তারা গাঢ় ডাই ব্যবহার করবেন এবং লো-লাইটস করবেন। যাদের চুল কালো এবং ‘ডার্ক ব্রুনেট’ তাদের চুলে শুধু রং লাগালেই যথেষ্ট নয়। কালো চুল হাইলাইটস করার ক্ষেত্রে বিশেষ পদ্ধতি জানা প্রয়োজন। চুলে একটু গর্জিয়াস লুক আনতে চাইলে সফট ব্রোঞ্জ রঙের সঙ্গে গোল্ডেন হাইলাইট রং পছন্দ করতে পারেন। এই রং উজ্জ¦ল ত্বকের মেয়েদের অনেক ভালো লাগে।

স্থায়ী না অস্থায়ী?

শ্যাম্পু করলে রং ধুয়ে যায়। কারণ রঙের কণার আকার বড় হলে হেয়ার কিউটিকল বা মাথার বাইরের চামড়ার স্তরের ভেতরে রং ঢুকতে পারে না। পানি বা ঘামে দ্রবীভূত হয়ে সহজেই ধুয়ে যেতে পারে। এতে নানা রকম কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয়। যেমনÑ অ্যাজো, অ্যাঞ্জামিনোন, ট্রাইফিনাইন, মিথেল ইত্যাদি। নীল, সবুজ, লাল, কমলা, হলুদ, বেগুনি যেকোনো রং করা যায়। লিকুইড রিনজ, জেল, স্প্রে হিসেবে পাওয়া যায়। এগুলো চুলের তেমন কোনো ক্ষতি করে না। টেক্সটাইল ডাই কয়েকবার শ্যাম্পু করলে উঠে যায়। বেশ কয়েক রকম ডাই একত্রে মিশিয়ে ব্যবহার করলে তবেই মনের মতো রং পাওয়া যায়। এগুলো লোশন, শ্যাম্পু হিসেবে পাওয়া যায়। চুলের রঙের টোনিংয়ের জন্য এটি খুবই ভালো।

জেনে নিন
গরমের দিনে ঘামে ও কড়া রোদে রং করা চুল সহজেই খারাপ হয়ে যায়। আলট্রাভায়োলেট ফিল্টার সমৃদ্ধ হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে। এটি আপনার চুলকে রক্ষা করবে। গোসল বা সাঁতার কাটার পর চুল ভালো করে ধুয়ে নেবেন। পারলে এর আগে চুলে কন্ডিশনার বা তেল লাগিয়ে নিতে পারেন। রং করা চুলের জন্য বিশেষ শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। হালকা হাতে টাওয়েল দিয়ে চুল মুছে নিন। জোরে ঘষে মুছলে চুলের কিউটিকল নষ্ট হয়ে রং হালকা হয়ে যাবে। মাসে অন্তত একবার কন্ডিশনিং হেয়ার ট্রিটমেন্ট করুন। দক্ষ কারো কাছ থেকে চুল কালার করবেন এবং ভালো ব্র্যান্ডের হেয়ার কালার ব্যবহার করবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top