সকল মেনু

এবার মুক্তিযোদ্ধারা ৫ বছর মেয়াদী ভারতীয় ভিসা পাবেন: শ্রিংলা

খুলনা প্রতিনিধি: এবার ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, ‘এখন থেকে সব মুক্তিযোদ্ধা মাল্টিপল-এন্ট্রি সুবিধাসহ পাঁচ বছর মেয়াদী ভারতীয় ভিসার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। একই সঙ্গে ভারতের হাসপাতালগুলোতে প্রতি বছর ১শ’ মুক্তিযোদ্ধাকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।’ সোমবার (১০ জুলাই) দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধাদের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী সন্তানদের মধ্যে ভারতীয় সরকার কর্তৃক শিক্ষাবৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মুক্তিযোদ্ধা স্কলারশিপ স্কিম’ প্রকল্পের আওতায় ভারতীয় হাইকমিশন ও মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ একাডেমির চেয়ারম্যান ড. আবুল আজাদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মো. এনায়েত আলি।

ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘মংলা বন্দরের উন্নয়নে কাজ করবে ভারত। ভারত সরকার সাফল্যের সঙ্গে খুলনা-মংলা রেললাইন স্থাপনের কাজ করছে। খুব শিগগির খুলনায় একটি ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন চালু হচ্ছে এবং দক্ষতা বৃদ্ধির একটি প্রতিষ্ঠানও খুলনায় তৈরি করা হচ্ছে। নগরীর খালিশপুরে কলেজিয়েট বালিকা বিদ্যালয়ে নতুন ভবন স্থাপনের জন্য খুলনা সিটি করপোরেশনকে ১২ কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যেই এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরকালে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী খুলনা-কলকাতা সরাসরি ট্রেন ও বাস সেবা উদ্বোধন করেছেন।’
শ্রিংলা আরও বলেন, ‘ভারত সরকার ২০০৬ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরীদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষাবৃত্তি প্রকল্প চালু করে। এ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থীকে ১৫ কোটি টাকার বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্প আরও পাঁচ বছরের জন্য সম্প্রসারিত করা হয়েছে। যার আওতায় আরও ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে ৩৫ কোটি টাকার বৃত্তি দেওয়া হবে। নতুন প্রকল্পের অধীনে প্রতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী প্রতি এককালীন ২০ হাজার টাকা এবং স্নাতক পর্যায়ে এককালীন ৫০ হাজার টাকা করে মোট ১ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হবে।’

মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শ্রিংলা বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তির জন্য মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনারা এক সঙ্গে রক্ত দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্কের বীজ বপন করেছিলেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এ সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।’ দু’দেশের এ সম্পর্ক চিরদিন অবিচ্ছেদ্য থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুস সামাদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা মহানগর ইউনিটের কমান্ডার অধ্যাপক আলমগীর কবীর। অনুষ্ঠানে খুলনা অঞ্চলের ২৭ জন শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষাবৃত্তি তুলে দেওয়া হয়।

এদিকে চুকনগর গণহত্যা-৭১ স্মৃতি বধ্যভূমি পরিদর্শন এবং স্মৃতিস্তম্ভে শহীদদের স্মরণে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় দিকে তিনি চুকনগর বধ্যভূমিতে আসেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজার ব্রি. জে. এস নন্দা, হেড অব চ্যাসেয়ার মিস টিসেন নর্ডন কারগিল, দিবাকর মোহান্ত, স্টাফ মেম্বার শ্রী রতন মণ্ডল, যোগেন্দর শিং, যতিন কুমার, প্রেম বাহাদুর, মুক্তিযুদ্ধ একাডেমির চেয়ারম্যান ড. আবুল কালাম আজাদ, প্রফেসর আহম্মেদ রেজা, সাহিদা সৈয়দা, অধ্যাপক আলমগীর কবীর, খান মোহাম্মদ আলী, মুন্সি আইয়ুব আলী, খুলনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব খান, ডুমুরিয়া থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাস, প্রকৌশলী আ. জব্বার, গণহত্যা-৭১ স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ এ বি এম শফিকুল ইসলাম, এরশাদ আলী মোড়ল, প্রভাষক মনিরুল ইসলাম ব্রাউনসহ আরও অনেকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top