সকল মেনু

টাইগারদের হতাশার হারে স্বপ্নভঙ্গ

ক্রীড়া ডেস্ক : কে এমনটা ভেবেছিল? না হয় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি ম্যাচে টাইগাররা এই ভারতের কাছেই মাত্র ৮৪ রানে অল আউট হয়েছিল। কিন্তু সেই দুঃস্বপ্ন তো গ্রুপপর্বেই মাটি দিয়ে এসেছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। চোখের সামনে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি-ফাইনাল টপকে ফাইনালে খেলার স্বপ্ন। শিরোপা চকচক করে ওঠে চোখের সামনে, কল্পনায়।

কিন্তু এজবাস্টনে আজ বৃহস্পতিবারের সেমি ফাইনালে এভাবে ধুলোয় লুটাবে স্বপ্ন? এভাবে ভাঙবে খেলাঘর? বাংলাদেশের দেওয়া ২৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে শিখর-রোহিত-কোহলি বীরত্বে যে ৯ উইকেটের সহজ জয় তুলে নিল ভারত। মাত্র ৪০.১ ওভারে। বাংলাদেশের বোলিংকে পাড়ার বোলিং বানিয়ে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত উঠে গেলো ফাইনালে। টাইগারদের কাঁদিয়ে। ১৮ জুনের ওভালের শিরোপা লড়াই তাই আরেকটি ভারত-পাকিস্তান মহা দ্বৈরথের উত্তেজনা নিয়ে দাঁড়িয়ে।

বার্মিংহামে এজবাস্টনে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রানে আটকে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। ২৬৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমেছে ভারত। রোহিত শর্মাম ও শিখর ধাওয়ান মিলে দারুণ জুটি গড়ে বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচ বের করে নেন। তবে ভারতের রান ১০০-তে পৌঁছার আগেই ধাওয়ানকে আউট করে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান মাশরাফি।

২৬৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন রোহিত ও ধাওয়ান। এই দুজন একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বাংলাদেশি বোলারদের এলোমেলা করে দেন। মাশরাফির করা ১৫তম ওভারের চতুর্থ বলে মিড অফে মোসাদ্দেকের হাতে ধাওয়ান ক্যাচ দিয়ে ফিরলে স্বস্তি ফিরে আসে বাংলাদেশ শিবিরে। অবশ্য তারপরও চালকের আসনেই থাকে টিম ইন্ডিয়া।

ধাওয়ানের বিদায়ের পর ব্যাট করতে নামেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। দ্বিতীয় উইকেটে রোহিত শর্মার সঙ্গে ১৭৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে এনে দেন কাঙ্খিত জয়। রোহিত শর্মা তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১১তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ১২৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বিরাট কোহলি মাত্র ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন’; অপরাজিত থাকেন ৯৬ রানে।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ মাঝপথের ধসে ২২৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে। অষ্টম উইকেটে মাশরাফি ও তাসকিনের মধ্যকার ৩০ বলে ৩৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে লড়াই করার পুঁজি পায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের হয়ে ওপেনার তামিম ইকবাল ৮২ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৭০ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। মুশফিক ৮৫ বলে করেন ৬১ রান। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২১, সাব্বির রহমান ১৯, মোসাদ্দেক ১৫ এবং মাশরাফি করেন ২৫ বলে ৩০ রান।

ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার, জসপ্রিত বুমরাহ ও কেদার যাদব। রবীন্দ্র জাদেজা নেন একটি উইকেট। ১২৯ বলে ১২৩ রানের ইনিংস খেলা ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। শিরোপা ধরে রাখার মিশনে আগামী রোববার টুর্নামেন্টের ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবেন কোহলিরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ ইনিংস: ২৬৪/৭ (৫০ ওভার)
(তামিম ইকবাল ৭০, সৌম্য সরকার ০, সাব্বির রহমান ১৯, মুশফিকুর রহিম ৬১, সাকিব আল হাসান ১৫, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২১, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১৫, মাশরাফি বিন মর্তুজা ৩০*, তাসকিন আহমেদ ১১*; ভুবনেশ্বর কুমার ২/৫৩, জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ২/৪০, রবীচন্দ্রন অশ্বিন ০/৫৪, হার্দিক পান্ডে ০/৩৪, রবীন্দ্র জাদেজা ১/৪৮, কেদার যাদব ২/২২)।

ভারত ইনিংস: ২৬৫/১ (৪০.১ ওভার)
(রোহিত শর্মা ১২৩*, শিখর ধাওয়ান ৪৬, বিরাট কোহলি ৯৬*; মাশরাফি বিন মর্তুজা ১/২৯, মোস্তাফিজুর রহমান ০/৫৩, তাসকিন আহমেদ ০/৪৯, রুবেল হোসেন ০/৪৬, সাকিব আল হাসান ০/৫৪, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/১৩, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০/১০, সাব্বির রহমান ০/১১)।

ফল: ৯ উইকেটে জয়ী ভারত।

প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: রোহিত শর্মা (ভারত)

বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, তাসকিন আহমেদ, মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান।

ভারতীয় দল: রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি, যুবরাজ সিং, মাহেন্দ্র সিং ধোনি, কেদার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, ভুবনেশ্বর কুমার, রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও জাস্প্রিত বুমরাহ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top