সকল মেনু

হায়রে ! অনলাইনে স্বপ্নের টিকিট

রাকিবুল ইসলাম রাকিব,হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা: চলতি মাসের শেষেই ঈদুল ফিতর। দীর্ঘ লাইন,রোজা থেকে সারাদিন অপেক্ষার হেনস্তা ও টিকিট বিক্রেতাদের কালোবাজারি ঠেকাতে, সরাসরি কাউন্টারে টিকিট বিক্রির পাশাপাশি এবার বেশ কিছু বাস কোম্পানি অনলাইনেও তাদের টিকিট বিক্রি করছে। কিন্তু মিলছে কি সেই স্বপ্নের টিকিট? বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের দাবি, চাহিদার মাত্র ১০ থেকে ৩০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে ছেড়েছে বাস কোম্পানিগুলো। আর বাস মালিকরা বলছেন, সম্পূর্ণ অনলাইন সার্ভিস চালু করতে প্রয়োজন আরও অবকাঠামোগত উন্নয়ন।
ট্রাভেলস,টিআর ট্রাভেলসসহ অনেক কোম্পানিই টিকিট বিক্রির জন্য নির্ভর করছে অনলাইনের ওপর । এছাড়া ট্রেনের টিকিটের শতকরা পঁচিশ ভাগ বরাদ্দ রয়েছে অনলাইনে বিক্রির জন্য। তবে যেসব ব্যক্তি নির্বিঘ্নে অনলাইনে টিকিট পেয়েছেন, তারা স্বস্তির কথা বলছেন।

তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের এই যুগে ঘরে বসে বাস কিংবা ট্রেনের টিকিট কাটা খুবই জনপ্রিয় একটি বিষয়। ঈদে মানুষের গ্রামে যাত্রাকে সহজ করতে সহজ ডট কম,বাস বিডি ডট কম-এর মতো ওয়েবসাইট বিভিন্ন বাস কোম্পানির টিকিট অনলাইনে বিক্রি করছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার চেয়ে ঘরে বসে টিকিট কাটতে চান অনেকেই। কিন্তু চাইলেই তো হবে না। বাংলাদেশের মতো দেশে অনলাইনে টিকিট কাটা একদিকে যেমন জনপ্রিয়, অন্যদিকে অনেকের কাছে ভোগান্তির কারণ।

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার মিষ্টি। গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে যাওয়ার জন্য তিনি টিকিট কিনেছেন বাস বিডি ডটকম থেকে। তিনি বলেন, ‘ঘরে বসে সহজেই বাড়ি যাবার টিকিট পেয়ে গেলাম। এই বৃষ্টির মধ্যে বাইরে যেয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হলো না। তবে অনলাইনে টিকিট কাটা নিয়ে এক ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব, সিদ্ধান্তহীনতা ও অনিশ্চয়তা কাজ করে। আর এর জন্য চাই সঠিক মনিটরিং এবং নিশ্চয়তা।’

অনলাইনে টিকিট বিক্রির জনপ্রিয় ওয়েবসাইট সহজ ডট কম এর অপারেশন ম্যানেজার তোফায়েল আহমেদ মজুমদার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এবার ঈদে প্রায় ৪৫টি বাস সার্ভিস আমাদের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করছে। বাস কোম্পানিগুলো অনলাইনে যত বেশি টিকিট দেবে গ্রাহকদের জন্য তত ভালো হবে। বাইরে লাইনে না দাঁড়িয়ে থেকে অনলাইনে টিকিট কেনাটা বুদ্ধিমানের কাজ। তবে মোট টিকিটের মাত্র ১০ থেকে ৩০ ভাগ টিকিট আমাদের দেওয়া হয়। অনলাইনে আরও বেশি টিকিট বিক্রির সুযোগ থাকলে যাত্রীদের ভোগান্তি অনেক কমে যেত। আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সেবা দিতে পারছি না। আমাদের যে সক্ষমতা এবং যে পরিমাণ চাহিদা, তার খুব কমই আমরা পূরণ করতে পারছি।’

সক্ষমতা থাকার পরও কেন অনলাইনে টিকিট বিক্রিতে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না প্রশ্নে বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মারুফ তালুকদার ফয়সাল বলেন, ‘সবার অবকাঠামো আছে এমন না,এটা সক্ষমতার ব্যাপার। আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার ডেভেলপমেন্টের ইতিহাস যদি খেয়াল করেন, তাহলে দেখবেন প্রথমে ছিল হাতে লেখা টিকিট । তারপর আসলো কম্পিউটারাইজড প্রিন্ট করা টিকিট, আর এখন অনলাইন আসছে । আস্তে আস্তে সবাই অনলাইনের দিকে ঝুকছে। সংখ্যা বাড়ছে। এটাতো আর হুট করে হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সারাদেশের সকল কোম্পানি একই দিনে অনলাইনে আসবে সে আশা করাও ঠিক না। আবার সবাই অনলাইনে টিকিট করে স্বস্তি বোধ করেন এমনও না।’

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন মুন্না। তিনি অনলাইনে টিকিট কাটা নিয়ে ভোগান্তির কথা জানালেন। মুন্না আজকের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি সকাল ৭ টায় সহজ ডট কম থেকে গাইবান্ধা যাবার একটি টিকিট কিনি। টিকিট কনফার্ম হবার পর আমি প্রিন্টও দিয়েছি। এর ৩০ মিনিট পর সহজ ডটকম-এর অফিস থেকে কল দিয়ে আমাকে জানানো হয়, আমি যে বাসের টিকিট ক্রয় করেছি সেই বাসটি বাতিল করা হয়েছে। বিকালের মধ্যে আমি আমার টাকা ফেরত পেয়ে যাবো। কিন্তু আমার টিকিটের তাহলে কী হবে। টিকিট কোথায় পাবো? ’

হানিফ, সোহাগ কিংবা শ্যামলীর মতো বড় বড় বাস কোম্পানিগুলো টিকিট বিক্রির জন্য প্রচলিত পদ্ধতিই অবলম্বন করছে। তাদের টিকিট বিক্রি হচ্ছে কাউন্টার থেকেই। অন্যদিকে ট্রেনের টিকিটের মোট ২৫ শতাংশ বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে। এছাড়া মোট টিকিটের পাঁচ শতাংশ ভিআইপিদের জন্য এবং আরও পাঁচ শতাংশ রেলের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। প্রতিদিন সরাসরি এবং অনলাইনে ট্রেনের মোট ২২ হাজার ১২২ টি টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার শিতাংশু চক্রবর্তী বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top