সকল মেনু

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরায় নারী-শিশুসহ নিহত ৬, বাড়িঘর বিধ্বস্ত

হটনিউজ ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে উপকূলীয় তিনজেলায় নারী ও শিশুসহ ৬জন নিহত হয়েছে। কক্সবাজার, ভোলার মনপুরা ও রাঙামাটিতে মোরার প্রভাবে ঝড়ে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ঘূর্ণিঝড়ে মহেশখালীর শাহপরীর দ্বীপসহ বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার শহর, মহেশখালী, শাহপরীর দ্বীপ ও কুতুবদিয়ায় বহু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ায় উড়ে গেছে অনেক বাড়িঘরের টিনের চাল। উপড়ে পড়েছে প্রচুর সংখ্যক গাছপালা।

  আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য
কক্সবাজার: চকরিয়া থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বখতিয়ার আহমদ জানিয়েছেন, চকরিয়ায় গাছ চাপা পড়ে রহমত উল্লাহ (৫০) ও সায়রা খাতুন (৫৫) নামের দু’জনের মৃত্যু হয়। রহমত উল্লাহ ডুলাহাজারা পূর্ব জুমখালী এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে এবং সায়রা খাতুন বড় ভেওলা ইউনিয়নের সিকদার পাড়া এলাকার মৃত নুরুল আলমের স্ত্রী। রাতে বাতাসে গাছ ভেঙে বাড়িতে পড়লে এ দু’জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া বিভ্ন্নি স্থানে আহত ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অপরদিকে, কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে এসে ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মরিয়ম বেগম (৪৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি নুনিয়ারছড়া এলাকার বদিউল আলমের স্ত্রী।

 

রাঙামাটি: মোরা’র আঘাতে রাঙামাটির আসাম বস্তির নারিকেল বাগান এলাকার হাজেরা বেগম (৪৫) ও রাঙামাটি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ও ভেদভেদি এলাকার মাহিমা আক্তার (১৩)।

রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার মো. তৈয়ব নিহতদের স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, ঝড়ে হাজেরা বেগমের ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়ে। এসময় ঘরের ভেতরে থাকা হাজেরা বেগম গাছ চাপায় নিহত হন এবং তার ছেলে জুনায়েদ (৫) আহত হয়। অন্যদিকে ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়ায় মাহিমা নিহত হয়। এসময় মাহিমা ছাড়া কেউ ঘরে ছিল না।

ভোলা: ভোলার মনপুরা আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে মায়ের কোলে থাকা এক বছর বয়সি এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

কলাতলীর চর সিপিপি ইউনিট টিম লিডার মো. নাজিমউদ্দিন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরা আতঙ্কে স্থানীয় আবাসন বাজার থেকে ছালাউদ্দিনের স্ত্রী জরিফা খাতুন তার এক বছর বয়সি ছেলে রাশেদমনিকে কোলে নিয়ে সোমবার রাত ১টার সময় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। মনির বাজারের কাছে মনপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে প্রচণ্ড বৃষ্টি ও ঠাণ্ডা বাতাসে শিশুটির ঠাণ্ডা লেগে যায়। ঠাণ্ডায় শিশুটি আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথেই মারা যায়।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’: নারী-শিশুসহ নিহত ৬, বাড়িঘর বিধ্বস্ত

মহাবিপদ সংকেত প্রত্যাহার

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করার পর ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ দুর্বল হয়ে পড়ায় মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, কক্সবাজার ও খেপুপাড়া রাডার পর্যবেক্ষণ থেকে দেখা যায় যে, উপকূল অতিক্রমরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’ উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে আজ সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টার মধ্যে কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এটি বর্তমানে স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে রাঙ্গামাটি ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। স্থল গভীর নিনম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের পার্থক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমু্দ্র বন্দরসমূহকে দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে আজ রাত ৯ টা পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে পরবর্তীতে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top