সকল মেনু

আহমেদ রাজু’র প্রতারণার শিকার বুয়েটের অধ্যাপক

 নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন সময় ডট কম এর নির্বাহী সম্পাদক আহমেদ রাজু’র প্রতারণা শিকার হয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী।

উল্লেখ্য, দেশীয় ব্র্যান্ড ও দেশীয় শিল্পের ক্ষতি     সাধনের অপচেষ্টায় গত ২৬ এপ্রিল আহমেদ রাজু’র নতুন সময় ডট কমে ওয়ালটন টিভি নিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর সব তথ্য দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যেখানে দেশপ্রেমিক ক্রেতাদের বিভ্রান্ত করতে আহমেদ রাজু’র নোংরামি থেকে বাদ যায়নি বুয়েটের অধ্যাপকও। দেশের অত্যন্ত স্বনামধণ্য এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী’র বক্তব্যকেও সম্পূর্ণ বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যা একজন সংবাদ কর্মীর কাছ থেকে কখনোই কাম্য নয়। এটি সাংবাদিকতা পেশার পরিপন্থী এবং হলুদ সাংবাদিকতা।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদটি গভীরভাবে বিশ্লেষণের সময় দেখা যাচ্ছে, নিউজটির শেষের আগের প্যারায় লেখা আছে, “বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, ওয়ালটনের ত্রুটি আছে। চীন থেকে আমদানি করা পণ্য না কেনাই ভালো। আমাদের দেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য তেমন কোনো পরীক্ষাগার নেই। ফলে দেশে অনেক নি¤œমানের পণ্য ঢুকে যাচ্ছে।”

ড. মোহাম্মদ আলী’র মন্তব্যটির স্বচ্ছতা যাচাই করতে গিয়েই ধরা পড়ে আহমেদ রাজু’র প্রতারণার চিত্র। অধ্যাপক মো. আলী’র সাথে কথা বলতে গত সপ্তাহের প্রথম দিকে আহমেদ রাজু’র নতুন সময় ডট কম এ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কর্মরত মো. সালেহ উদ্দিন নামে এক প্রতিবেদক যান। যিনি কিনা অধ্যাপককে তার অফিসিয়াল ভিজিটিং কার্ড দেয়ার সময় নতুন সময় ডট কমের পরিচয় গোপন করে ‘দি বাংলাদেশ টুডে’র স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে ভিজিটিং কার্ড প্রদান করেন। যা অধ্যাপক মো. আলী’র কাছ থেকে ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদটিতে প্রকাশিত মো. আলী’র মন্তব্যটি তার দৃষ্টিগোচর করা হলে তিনি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে বলেন, এটি সম্পূর্ণ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এ সময় অধ্যাপক আলী বলেন, প্রতিবেদক শুরুতেই আমার কাছে ওয়ালটনের পণ্য সম্পর্কে বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করতে থাকে। আমার মুখ থেকে ওয়ালটন পণ্যের মান সম্পর্কে সুকৌশলে নেতিবাচক মন্তব্য বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু, রিপোর্টার ব্যর্থ হন।

তিনি জানান, ওয়ালটন সম্পর্কে প্রতিবেদকের নেতিবাচক মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই তিনি সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেন। প্রতিবেদককে স্পষ্টভাবে বলি, বিভিন্ন উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশেই ফ্রিজ, এসি, টেলিভিশনের মতো পণ্য উৎপাদন করছে ওয়ালটন। যা অবশ্যই প্রসংসার দাবিদার এবং বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। ওয়ালটনের দেখাদেখি অনেকেই আজকে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে আসছে। সদ্য পাশ করা প্রকৌশলীদের জন্য দেশেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। যা অত্যন্ত প্রসংশনীয় একটি কাজ।

তিনি আরো বলেন, চীন থেকে আমদানি করা নি¤œমানের পণ্য দেশে আমদানি হচ্ছে কিনা? প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের উত্তরে বলি, অবশ্যই আমদানিকৃত পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত হয়েই ক্রেতাদের পণ্য কেনা উচিৎ। প্রতিবেদকের এই প্রশ্নটি ওয়ালটনকে নিয়ে করা হয়নি এবং আমিও ওয়ালটনকে উদ্দেশ্য করে বলিনি। কিন্তু, আমার বক্তব্যটি সুকৌশলে এমনভাবে লেখা হয়েছে যেন, এই মন্তব্যটি আমি ওয়ালটনকেই উদ্দেশ্য করে বলেছি। এটি অত্যন্ত গর্হিত একটি কাজ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রতিবেদককে এও বলেছিলাম যে, আমার নেতৃত্বে বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একদল শিক্ষার্থী গাজীপুরের চন্দ্রায় স্থাপিত ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করেছেন। উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশেই ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য উৎপাদনে ওয়ালটনের ব্যাপক উদ্যোগ আমাদের সকলকেই অভিভূত করেছে।

তিনি আরেকটি বিষয়ে জানান, প্রকাশিত রিপোর্টে আমার মন্তব্যের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, আমাদের দেশের  ইলেকট্রনিক্স  পণ্যের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য তেমন পরীক্ষাগার নেই। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি তথ্য। এ ধরণের মন্তব্য আমি করিনি। কেননা, বুয়েটেই  এসি, ফ্রিজ ও টেলিভিশন পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট দেয়া হয়।

অধ্যাপক মো. আলী অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানায়, একজন সংবাদকর্মীর কাছ থেকে এই ধরণের কাজ অপ্রত্যাশিত। ভবিষ্যতে, কোনো সংবাদকর্মীর কাছে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবেন বলেও জানান তিনি।

নতুন সময় ডট কমের প্রতিবেদক মো. সালেহ উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অধ্যাপকের মন্তব্য নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। এও স্বীকার করেন যে, অধ্যাপক মো. আলী ওয়ালটন সম্পর্কে ব্যাপক প্রসংশা করেন। কিন্তু, এগুলো প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়নি কেন বললে মো. সালেহ উদ্দীন বিষয়টি এড়িয়ে যান।

উল্লেখ্য, নতুন সময় ডট কমে প্রকশিত উদ্দেশ্যমূলক রিপোর্টটির পাঠকদের মন্তব্যের ঘরে ৮০ শতাংশই ওয়ালটন পণ্য সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top