সকল মেনু

ক্যান্টন ফেয়াররে রপ্তানির আদেশ পেলো ওয়ালটন

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: বিশ্বের বৃহত্তম বানিজ্য মেলা চীনের ক্যান্টন ফেয়ারে বিশ্ব ক্রেতাদের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছে ওয়ালটন। বিভিন্ন দেশের ক্রেতাদের কাছ থেকে ইতোমধ্যে বিশাল অঙ্কের রপ্তানি আদেশ পেয়েছে ওয়ালটন। অনেক ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শনে আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাদের কাছ থেকেও রপ্তানির আদেশ পাবে বলে আশাবাদী ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
ওয়ালটন সূত্র জানায়, সার্বিক বিবেচনায় দ্বিতীয়বারের মতো চীনের ক্যান্টন ফেয়ারে অংশগ্রহণ করে শতভাগ সফলতা নিয়েই ফিরেছে ওয়ালটন। যা শুধু ওয়ালটনের জন্যই নয়; বাংলাদেশের প্রযুক্তি পণ্য রপ্তানি খাতেও এক বিশাল মাইলফল।
জানা গেছে, সবচেয়ে বড় রপ্তানি আদেশ এসেছে লেবানন থেকে। দেশটির ‘মোহাম্মদ এন্ড আলী মোবারক’ কোম্পানির কাছ থেকে ১০ কন্টেইনার নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ রপ্তানির আদেশ পেয়েছে ওয়ালটন। যেটির শিপমেন্ট খুব শীগ্রই সম্পন্ন হবে। মায়ানমারের ব্যবসায়ী মায়িন্ট ইয়েন উল্লেখযোগ্য পরিমান ফ্রস্ট ফ্রিজ আমদানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও, ওয়ালটন ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্য আমদানির প্রতি ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন ফিজির মুনেশ প্রাসাদ ও ঘানার তাজেদ্দিন হিচাম নামক দু’জন ব্যবসায়ী।


লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা ও ব্র্যাজিলের ব্যবসায়ীরাদের মাঝেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ওয়ালটন পণ্য। আর্জেন্টিনার ব্যবসায়ী সিনথিয়ার ওয়ালটনের হোম এ্যাপ্লায়েন্স আমদানির কথা নিশ্চিত করেছেন। আর ব্র্যাজিলের ব্যবসায়ী মার্টিনস এ্যাগুলিয়ার ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেবেলযুক্ত ওয়ালটন কম্প্রেসার আমদানি করার কথা জানিয়েছেন। কম্প্রেসার নেবেন থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ী কোসিন। শীগ্রই সেদেশের ব্যবসায়ী দল বাংলাদেশে ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শনে আসছেন।
ওয়ালটন পণ্য আমদানির উদ্দেশ্যে কারখানা পরিদর্শন করার প্রস্তাব দিয়েছেন পেরু, আমেরিকা, থাইল্যান্ড সেনেগাল, রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ত্রিনিদাদ এর বেশ কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী। এদের মধ্যে পেরুর জেবিয়ার ও ত্রিনিদাদের ভিজাই ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর আমদানির আগ্রহ দেখিয়েছেন। আর ওয়ালটন ব্র্র্যান্ডের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য আমদানির কথা জানিয়েছেন আমেরিকার মাহমুদ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মোহাম্মেদ। এলইডি টিভি ও ফ্রিজের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন রাশিয়ার রুডোমান ইগোর ও সেনেগালের ওয়্যাল ফাওজি। ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা- তাদের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের রপ্তানি আদেশ আসবে।
চীনের গুয়াংজু শহরে এপ্রিলের ১৫ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে ১২১ তম ক্যান্টন ফেয়ার। যার অফিসিয়াল নাম চায়না আমদানি-রপ্তানি মেলা। বিশ্বের মেগা পণ্যমেলা হিসেবে এটি পরিচিত। এবারের মেলায় পৃথিবীর প্রায় ২ শ’টি দেশের ৩ লক্ষাধিক ক্রেতা অংশ নেন। এর বাইরে আরো প্রায় ৩ লাখ ছিলেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি। পৃথিবীর প্রায় সকল শীর্ষ ব্র্যান্ডের পণ্য প্রদর্শিত হয় এখানে। আসেন বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ক্রেতা-ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে যেন বানিজ্যের এক মহাযজ্ঞ। মেলার ৬০ বছরের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটেছে বলে জানিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ।


বাংলাদেশী ইলেকট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারার হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো ক্যান্টন ফেয়ারে অংশ নিয়েছে ওয়ালটন। মেলার আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়নে স্থাপন করা হয়েছিল ওয়ালটনের দৃষ্টিনন্দন মেগা প্যাভিলিয়ন। প্রদর্শিত হয়েছে বাংলাদেশে তৈরি ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, রিচার্জেবল ফ্যান, সিলিং ফ্যান, রাইসকুকার, ব্লেন্ডার, গ্যাস স্টোভ, ইলেকট্রিক সুইস-সকেট, ইন্ডাকশন কুকার, এসিড লেড রিচার্জেবল ব্যাটারি, বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তিতে তৈরি কম্প্রেসর ও এর আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ সহ বিভিন্ন হোম ও ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস।
জানা গেছে, ওয়ালটনের প্রতিটি পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়াসহ গুণগতমান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ক্রেতারা। বিশেষ করে পণ্যের নিখুঁত ফিনিশিং, সাশ্রয়ী মূল্য এবং ব্যতিক্রমী ডিজাইন তাদের মন কেড়েছে।
চীনে নিযুক্ত ওয়ালটনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও ক্যান্টন ফেয়ারের সমন্বয়ক মীর আবুল হাছান বলেন, ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ক্রেতারা ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেছেন। যাচাই-বাছাই শেষে বেশিরভাগ ক্রেতাই ওয়ালটন পণ্যের মান ও দাম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের প্রধান রকিবুল ইসলাম বলেন, ক্যান্টন ফেয়ারে ওয়ালটনের প্রধান লক্ষ্য ছিলো- রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ করা। সেদিক থেকে আমরা শতভাগ সফল হয়েছি।
#

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top