সকল মেনু

অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে অনুরোধ বাংলাদেশের

হটনিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ ২০১১ সালের জানুয়ারিতে দুই দেশের সম্মতি অনুযায়ী তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি করতে নয়াদিল্লির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। শনিবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে  ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আলোচনার পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মোদির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ অনুরোধ জানান। নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে দ্রুত চুক্তি সম্পাদনে তার সরকার ভারতে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কাজ করছে।’ এতে আরও বলা হয়, দুই প্রধানমন্ত্রী ফেনী, মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা ও দুধকুমার নদীর মতো অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।

দুই প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ভারতের একটি কারিগরি দলের সফর, গঙ্গা বাঁধ প্রকল্প সংক্রান্ত জয়েন্ট টেকনিক্যাল সাব-গ্রুপ গঠন এবং উজান এলাকায় নৌ-সীমান্তে সমীক্ষাকে স্বাগত জানিয়েছেন। দুই নেতা অবিলম্বে বৈঠকে বসতে সাব গ্রুপের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। উভয় পক্ষের অব্যাহত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি এগিয়ে যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় নেতা সন্ত্রাসকে এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তারা সব ধরনের প্রকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দৃঢ় অঙ্গীকার করেন। দুই প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা ইস্যুতে উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা করেন তারা।

দুই প্রধানমন্ত্রী এই অঞ্চলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিস্তার রোধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে উভয় দেশের আইন প্রয়োগকারী, গোয়েন্দা এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে সহযোগিতা আরো বৃদ্ধির দৃঢ় সংকল্পও প্রকাশ করেন তারা।

দুই প্রধানমন্ত্রী সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (সিবিএমপি) কার্যকর বাস্তবায়ন নিয়েও মতবিনিময় করেন। অপরাধ মুক্ত একটি সীমান্ত নিশ্চিতকরণে সিবিএমপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। তারা সীমান্তে নিহতের সংখ্যা শূন্য পর্যায়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে তাদের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন। এ ব্যাপারে কাজ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

উভয় নেতা বিজিবি’কে সীমান্ত চৌকি নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে ভারতের সীমান্ত সড়ক ব্যবহারে বিএসএফ ও বিজিবি’র মধ্যে স্বাক্ষরিত এসওপি চুক্তির প্রশংসা করেন। এ চুক্তির ফলে বিজিবি প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে চিকিৎসা সুযোগ সুবিধাও পাবে।

দুই নেতা পরস্পরের স্বার্থে ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ব্যাপারে একমত হন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ অভিযানের মাধ্যমে এই সহযোগিতার সূচনা হয়। তারা বলেন, গত বছরের নভেম্বরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেন। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রশিক্ষণ ও সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সামরিক বাহিনীর বিনিময়ের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার ও সংহত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর তারা গুরুত্বারোপ করেন। দুই নেতা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ডিফেন্স লাইন অব ক্রেডিট এবং বিভিন্ন প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মধ্যে এমওইউ সম্পন্নকে স্বাগত জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top