সকল মেনু

কওমিপন্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রার নির্দেশে ক্ষুব্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা নববর্ষকে বরণের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা বাধ্যতামূলক  করায় ক্ষব্ধ হয়েছে কওমিপন্থী ওলামা, সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো। সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিও তুলেছে তারা। সরকার সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো।

জানা গেছে, মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায়, চলতি বছর বর্ষবরণের আয়োজনে এ শোভাযাত্রা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকারের এ ঘোষণার পর কওমিপন্থী আলেমরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখছেন। হেফাজতে ইসলাম ও অন্যান্য সংগঠনগুলো ওয়াজ মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রার সমালোচনা করে বক্তব্য রাখছেন। দেশের বেশ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠন মঙ্গল শোভাযাত্রা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক  করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতিও দিয়েছে।

সম্প্রতি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,দেশের সব স্কুল ও কলেজে আড়ম্বরপূর্ণভাবে বর্ষবরণ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ১৬ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। মাউশি’র সহকারী পরিচালক (এইচআরএম) আশেকুল হক স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলা নববর্ষ ১৪২৪ আয়োজন উপলক্ষে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পহেলা বৈশাখে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ও আড়ম্বরের সঙ্গে বাংলা বর্ষবরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করায় বিষয়টি গুরুত্বসহ উদযাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বর্ষবরণে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রার নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন চরমোনাইপীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতির নামে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশ প্রদান করেছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা হিন্দুদের পূজার একটি অংশ। পূজা করার নির্দেশ দিয়ে সরকার আজ বাংলাদেশের মুসলমানের হৃদয়ে চরমভাবে আঘাত দিয়েছে। দিল্লির সংস্কৃতি এই বাঙলার জমিনে চলতে দেওয়া হবে না। অনতিবিলম্বে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমবিরোধী উদ্যোগ থেকে বিরত না হলে আগামী ২১ এপ্রিল  মহাসমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’ গত শুক্রবার দলের এক অনুষ্ঠানে এসব কথা কলেন রেজাউল করীম।
খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের আমির ও গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালক  মুফতি রুহুল আমীন বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা সহকারে নববর্ষ পালনের নির্দেশ মুসলমানের আকিদা-বিশ্বাসের পরিপন্থী।শোভাযাত্রার মাধ্যমে বর্ষবরণের কথা বলে দেশের ছেলে-মেয়েদের রাস্তায় নামিয়ে শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করবে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, অর্জিত সুনাম ব্যহত করতে অতি উৎসাহী কিছু ব্যক্তি ভিন্ন কারও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এ ধরনের নির্দেশ দিয়েছেন।’
মঙ্গল শোভাযাত্রা ইসলামি মূল্যবোধ ও ইসলামি সভ্যতা সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছে সম্মিলিত উলামা মাশায়েখ পরিষদ।সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, কোনও মুসলমানই বিন্দুমাত্র ঈমান থাকতে মঙ্গল শোভাযাত্রা করতে পারে না। কেউ কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রা বাধ্যতামূলক পালনের জন্য সরকারি সার্কুলারের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। যা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা কতিপয় ইসলামবিদ্বেষী মহল দেশকে অস্থিতিশীল করতে ও সরকারের অর্জন ক্ষুণ্ন করতে ষড়যন্ত্র ও উসকানি দিচ্ছে। বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি মাওলানা আতাউল্লাহসহ শতাধিক নেতা স্বাক্ষর করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top