সকল মেনু

পথশিশু ব্যাংকে লেনদেন করে পৌনে ৪ হাজার

হটনিউজ ডেস্ক: সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন পথশিশুরাও এখন ব্যাংকে লেনদেন করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ৭২৫ জন পথশিশু ব্যাংকে লেনদেন করেছে। এই পথশিশুরা ২৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকারও বেশি পরিমাণ অর্থ জমিয়েছে ব্যাংকে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘পথশিশু ও কর্মজীবী শিশু-কিশোররাও এখন ব্যাংকে টাকা রাখে।এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগের ফলে।’ তিনি বলেন, ‘পথশিশুদের মধ্যে সঞ্চয় প্রবণতা তৈরি, কষ্টে উপার্জিত অর্থের সুরক্ষা, পথভ্রষ্ট হওয়ার প্রবণতা রোধ করতে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ১০ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক হিসাব খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলেছে। অধিকাংশ পথশিশুর কোনও অভিভাবক না থাকায়, এনজিও প্রতিনিধিরা তাদের অভিভাবক হয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করছেন।দেশের ১৩টি এনজিও শিশুদের জন্য এ কাজ করছে।
কেন্দ্রীয় তথ্য মতে, পথশিশুদের সবচেয়ে বেশি হিসাব খুলেছে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক। এই ব্যাংকটি ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭ জন পথশিশুর হিসাব খুলেছে। রূপালী ব্যাংকে তাদের জমা হয়েছে ১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা। ৫৪৬ জন পথশিশুর হিসাব খুলে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বেসরকারি পূবালী ব্যাংক। এই ব্যাংকে তাদের জমার পরিমাণ প্রায় ৪ লাখ টাকা।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ১০ টাকার বিনিময়ে পথশিশুদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ করে দিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।এই নির্দেশনার পর মাত্র দুই বছরের কম সময়ে প্রায় চার হাজার পথশিশুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকারও বেশি পরিমাণ অর্থ জমা হয়।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান  বলেন, ‘পথ শিশুরা ফেলনা নয়। তারাও আমাদের মতোই মানুষ। সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন এই পথশিশুরা শীতে কষ্ট পায়। গরমেও মানবেতর জীবন যাপন করে।’ সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে পথশিশুদের ব্যাংকিং সেবায় আনা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি উল্লেখ করেন, ‘যারা জীবনে কখনও ব্যাংকিং সেবা পেত না। এমনকি এই পথশিশুরা কখনও ব্যাংকে ঢুকতে পারতো না।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে প্রাথমিকভাবে ১০টি ব্যাংক পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব খোলার দায়িত্ব নেয়। পরে আরও ৭টি ব্যাংক এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়। এগুলো হলো-সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক সোসাল ইসলামী ও উত্তরা ব্যাংক।
যে ১৩টি এনজিও পথশিশুদের ব্যাংক হিসাব দেখভাল করছে তারা হলো- মাসাস, সাফ, উদ্দীপন, অপরাজেয় বাংলাদেশ, ব্র্যাক, নারী মৈত্রী, সিপিডি, প্রদীপন, সাজিদা ফাউন্ডেশন, এএসডি,শক্তি বিদ্যালয়,ইবিসিআর প্রকল্প ও পরিবর্তন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top