সকল মেনু

বাংলাদেশ পঞ্চম সর্বাধিক রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থিতার তালিকায় ব্রিটেনে

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধ: ব্রিটেনে ২০১৬ সালে সর্বাধিক রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের দেশের তালিকায় বাংলাদেশ পঞ্চম স্থানে রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) লন্ডনে সরকারিভাবে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। গত বছর বাংলাদেশিরা ১ হাজার ৯৩৯টি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। তবে মাত্র ছয় শতাংশ বাংলাদেশির রাজনৈতিক আশ্রয় মঞ্জুর করেছে ব্রিটেন।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ২০১৫ সালের চেয়ে বেশি আবেদন করেছেন বাংলাদেশিরা। ২০১৫ সালে বাংলাদেশিদের ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১১০টি।

২০১৬ সালে ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছেন ইরানের নাগরিকরা। ইরানিদের আবেদন সংখ্যা ৪ হাজার ১৯২টি। এরপর বেশি আবেদনের ক্ষেত্রে রয়েছে পাকিস্তান (২,৮৫৭), ইরাক (২,৬৬৬) ও আফগানিস্তানের (২,৩৪১) নাম। এছাড়া আলবেনিয়া ও ভারত থেকে আবেদন এসেছে ১ হাজার ৪৮৮টি করে। এসবের মধ্য থেকে ব্রিটেন ১ হাজার ৫৯১টি আবেদন মঞ্জুর করেছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় ও জাতীয়তা বিবেচনা করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ৮৭ শতাংশই দেশটিতে বাস করছেন। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে বৈশ্বিক ঘটনাবলী। যেমন: যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর সেখানকার নাগরিকদের ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার আবেদন বেড়েছে। ২০১৬ সালে সিরীয়দের কাছ থেকে আবেদন এসেছে ১ হাজার ৪০৯টি। ২০১১ সালের মার্চের শেষদিকে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ১২৫টি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন জমা পড়ার ক্ষেত্রে ব্রিটেনের (৩৯ হাজার) অবস্থান ষষ্ঠ। শীর্ষে আছে জার্মানি (৬ লাখ ৯২ হাজার)। এরপর রয়েছে ইতালি (১ লাখ ১৭ হাজার) ও ফ্রান্স (৮৩ হাজার)।২০১৬ সালের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনের ৭৫ শতাংশ জমা পড়েছে এই তিন দেশেই।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে অভিবাসীর সংখ্যা নেমে এসেছে ২ লাখ ৭৩ হাজারে। এ সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ৪৯ হাজার কম। শোনা যাচ্ছে, যুক্তরাজ্য সরকার অভিবাসীর সংখ্যা রাখতে চায় ১ লাখের ঘরে।

যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয় (ওএনএস) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যের ভিত্তিতে ব্রিটেনে আসা মানুষদের সঙ্গে দেশ থেকে অন্যত্র চলে যাওয়া মানুষের পার্থক্য নির্ণয় করেছে। ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যে ৫ লাখ ৯৬ হাজার মানুষ প্রবেশে করেছেন। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের নাগরিকদের সংখ্যা ২ লাখ ৬৮ হাজার। আর অ-ইউরোপীয়দের সংখ্যা ২ লাখ ৫৭ হাজার। এর মধ্যে ভারতীয় আর বাংলাদেশিরাও রয়েছেন। ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ এসেছেন রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া থেকে। এ সংখ্যা প্রায় ৭৪ হাজার। এর পেছনে গত জুনে ব্রেক্সিটের পক্ষে গণভোটই ছিল মূল কারণ।

ওএনএস-এর আন্তর্জাতিক অভিবাসন পরিসংখ্যান শাখার প্রধান নিকোলা হোয়াইট বলেছেন, ‘ব্রেক্সিটের পক্ষে গণভোটের পর তিন মাসসহ এটাই দীর্ঘমেয়াদে আন্তর্জাতিক অভিবাসনবিষয়ক তথ্য। ইউরোপীয় নাগরিকদের যুক্তরাজ্যে আসা কমলেও রোমানিয়া আর বুলগেরিয়া থেকে অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে এখনই বলা মুশকিল, ব্রেক্সিটের ফলে দীর্ঘমেয়াদে আন্তর্জাতিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে কিনা।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top