সকল মেনু

নোবিপ্রবি’র ছাত্রাবাসে হামলা, আহত ২০ শিক্ষার্থী

6484812f8ed6e451492b279e347d2f8a-5856135582a3bহটনিউজ২৪বিডি.কম : নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলে (ছাত্রাবাস) বহিরাগতরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। এ সময় অন্তত ২০ জন সাধারণ শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে হামলাকারীরা। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। সন্ধ্যায় ইন্দনদাতাদের বহিস্কার ও হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে কর্তৃপক্ষ।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবদুল হামিদ রানার নেতৃত্বে অন্তত ৪০/৫০জন বহিরাগত সন্ত্রাসী রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হলে প্রবেশ করে। একজনের হাতে একটি আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। হামলাকারীরা হলে প্রবেশ করেই এলোপাতাড়ি পিটাতে ও কোপাতে থাকে। তারা ছাত্রাবাসের প্রত্যেকটি কক্ষের দরজা, জানালার গ্লাস, চেয়ার-টেবিল ও ছাত্রদের মোবাইল, ল্যাপটপসহ আসবাবপত্র ব্যাপক ভাঙচুর করে।

হামলাকারীরা ছাত্রদের নগদ টাকা, মোবাইল ও ল্যাপটপ লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় সাধারণ ছাত্ররা বাধা দিলে অনেককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা। এতে বিপ্লব, রিকি, সত্যজিৎ, রাকিব, সায়েমসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে সুধারাম থানা ও ডিবি পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য ক্যাম্পাসে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নাস্তা বিলি নিয়ে ছাত্রলীগের আবদুল হামিদ রানা ও সাজ্জাদ প্রোমেল সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এঘটনায় শুক্রবার বিকেল থেকেই ক্যাম্পাস উত্তপ্ত থাকে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটিকে কেন্দ্র করেও ওই দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকেলে মাস্টার্সের ছাত্র ও ছাত্রলীগের নেতা আবদুল হামিদ বাপ্পির ইন্দনে তার সমর্থক আবদুল হামিদ রানার নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করে এবং ছাত্রাবাসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল হামিদ রানা বাপ্পি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘সাজ্জাদ প্রোমেল ও রিয়েলের নেতৃত্বে বহিরাগতরা হামলা চালিয়েছে।’

আর সাজ্জাদ প্রোমেল বলেন, ‘বহিরাগত সন্ত্রাসীরা ছাত্রাবাসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। হামলায় তার কয়েকজন সমর্থকসহ সাধারণ ছাত্ররা গুরুতর আহত হয়েছে।’

এ বিষয়ে ভাষা শহীদ আবদুস ছালাম ছাত্রাবাসের হল সুপার (প্রভোস্ট) ড. ইউসুফ মিঞা ঘটনার সত্যতার স্বীকার করে বলেন, ‘বিজয় দিবসে নাস্তার বিলি-বণ্টন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডার জের ধরে এ হামলা করেছে বহিরাগতরা। তারা ব্যাপক ভাঙচুর করে বিশ্ববিদ্যালয় আর্থিক ক্ষতি করেছে। এছাড়া তাদের হামলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও আহত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। হামলাকারী ও ইন্দনদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পুলিশ ক্যাম্পাসে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top