সকল মেনু

এবার সবজি ও মশলা উৎপাদন করে ভাগ্য খুলেছে অনেক কৃষাণীর

ফরিদপুর প্রতিনিধি : এবার faridpurabnews24_48039সবজি ও মশলা জাতীয় ফসল চাষ করে ভাগ্য খুলেছে ফরিদপুর জেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের বরেন বিশ্বাসের ডাঙ্গীর ২৫জন কৃষাণীর। যৌথ ভাবে কৃষিকাজ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন তারা। সবজি চাষ গত তিন বছরে অনেক কৃষাণীর ভাগ্যেরও পরিবর্তন ঘটেছে। তাদের উৎপাদিত সবজি স্থাীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে ঢাকায়। আর এই কৃষাণীদের পিছনে থেকে সবসয় সহযোগিতা করেছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা বিএফএফ। দিয়েছে সুদ মুক্ত ঋণ। নিজেদের কঠোর পরিশ্রম, সঞ্চয় ও বিএফএফ এর পরামর্শ সুদ মুক্ত ঋণ তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। চলতি শীত মৌসুমের আগেই কৃষানীরা শুরু করেছেন সবজি চাষ। একই জমিতে আবাদ করেছিলেন লাল শাক, পালং শাক, মরিচ, ধনে পাতা। ইতিমধ্যেই লাল শাক, পালং শাক বিক্রয় করা শেষ হয়েছে। এখন চলছে ধনেপাতা বিক্রির কাজ। ধনেপাতা বিক্রি শেষ হওয়ার সাথে সাথে মরিচ বিক্রিও শুরু হবে। লাল শাক, পালংশাক ও ধনেপাতা বিক্রি করে ভালই লাভবান হয়েছেন বলে জানালেন কৃষানীরা।

বর্তমানে এই কৃষাণীদের যৌথ কৃষি খামারে লাল শাক, বেগুন, মুলা, মটর কলাই শাক, ধনে পাতা, শিম, ফুল কপি, বাঁধা কপি, লাউ, মিষ্টি আলু, টমেটো, আলুসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি শোভা পাচ্ছে। শুধু সবজি চাই নয়। চাষাবাদ করছেন পেয়াজ, রসুন এর মতো মশলা জাতীয় ফসল। সম্পূর্ণ রাসায়নিক সার ও কিটনাশক মুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন এই কৃষাণীরা। নিজেরাই উৎপাদন করছেন ভার্মী কম্পোজ (কেচো) সার। পোকা-মাকড়ের হাত থেকে সবজি ক্ষেত রক্ষা করতে ব্যবহার করছেন জৈব বালাইন নাশক। আর এ সকল গ্রামীন নারীদের উন্নয়নের লক্ষে সরাসরি কৃষিকাজে নিয়ে এসেছেন বেসরকারি উন্নয় সংস্থা বেনিফিসিয়ারিজ ফ্রেন্ডশীপ ফোরাম (বিএফএফ) আর সহযোগিতা করছেন এ এল আর ডি ঢাকা। গ্রামীন নারীদের উন্নয়নের লক্ষে প্রথমে দল গঠণ করেন। নারীদের সঞ্চয়ী মনোভাব তৈরীর লক্ষে প্রথমে মুষ্টি চাল দিয়ে সঞ্চয় শুরু করেন। মাস শেষে সঞ্চয়ের চাল বিক্রিয় করে যে টাকা সঞ্চয় হয়, তা দিয়ে যৌথভাবে শুরু করেন ভার্মী কম্পোজ সার তৈরী। সার বিক্রিয় করে বেশ লাভবান হন তারা। সার বিক্রির টাকায় লীজ নেন কৃষি জমি। শুরু করের সবজি চাষ। গত তিন বছরে এই কৃষানীরা ব্যপাক সফলতা পেয়েছেন। চলতি বছর সবজি চাষের পাশা পাশি শুরু করেছেন মশলা জাতীয় ফসল পেয়াজ ও রসুন এর চাষ। কৃষাণী জরিনা, নাজমা, নাসিমা বলেন, বিএফএফ আমাদের স্বাবলম্বী করছে। তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় আমরা এই পর্যন্ত এসেছি। বিএফএফ সুদ বিহিন লোন দিয়ে আমাদের সবসময় সহযোগিতা করছে। আমরাও সবজি বিক্রিয় করে লোনের টাকা পরিশোধ করছি। এখন আমরা স্বচ্ছল ভাবে জীবন যাপর করছি। তাদের উৎপানিত কৃষিপন্য বিক্রির জন্য বিন্ন একটি বাজার স্থাপনের দাবীও করেন কৃষানীরা। বিএফএফ এর নির্বাহী পরিচালক আ ন ম ফজলুল হাদী সাব্বির বলেন, গ্রামীন নারীদের উন্নয়নের লক্ষেই  কাজ করে যাচ্ছি। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ গুলো যাতে ভাল থাকে, ভাল থাকতে পারে এটাই আমার চাওয়া। তিন বছর আগে মুষ্টি চাল দিয়ে শুরু হয়ে ছিল এই কৃষাণীদের পথচলা। তিন বছর পরিশ্রম করে প্রতিটি কৃষানী এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন। এক খন্ড জমি দিয়ে শুরু করেছিলেন চাষাবাদ। এখন তারা একরের পর একর জমি চাষাবাদ করছেন। এদিকে উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আবুল বাসার মিয়া বলেন, আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ। এখন আমাদের লক্ষ নিরাপদ সবজি উৎপাদন। আর নিরাপদ সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে কৃষক-কৃষানীদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে থাকি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top