সকল মেনু

তৈমূর না হলে কে হবেন বিএনপির প্রার্থী?

ca3041edc10a137abce33537ed62edef-58316979874ed-1হটনিউজ২৪বিডি.কম : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। বিএনপি অংশ নিলেও ধানের শীষ প্রতীক শেষতক কে পাবেন তা নিয়েও সংশয় আরও বেশি। বিএনপির প্রার্থিতার আলোচনায় নতুন নামও শোনা যাচ্ছে। জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে প্রার্থী হতে কেন্দ্র থেকে ‘চাপ’ দেওয়া হচ্ছে বলে শোনা গেলেও তার ‘অনাগ্রহের’ সুযোগে আরও দুইজন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।

বিএনপির প্রার্থিতা পেতে ইচ্ছুকদের একজন হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান। তিনি ২০১৪ সালের এপ্রিলে ৭ খুনের ঘটনার পর বিচার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন। অপরজন হলেন নারায়ণগঞ্জ শহর বিএনপির সেক্রেটারি এটিএম কামাল। সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে কামাল এখন পর্যন্ত ৪০টির মতো মামলার আসামি হয়ে অনেক মাস কারাভোগও করেছেন। তবে এ দুইজন নেতাই দলচ্যুত ছিলেন এক সময়ে।

জানা গেছে, আগামী ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ এখানে বর্তমান মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে মনোনয়ন দিয়েছে। আর বিএনপির প্রার্থিতা নির্ধারণে চলছে বৈঠক।

জানা গেছে, শুক্রবার বিকালে ঢাকায় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যান নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি ও মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক আবুল কালাম, বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির, যুগ্ম সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন খান, নগর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় আগ্রহী প্রার্থীদের সম্পর্কে জানতে চান খালেদা জিয়া। পরে নেতারা তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।

শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল জানান, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় চেয়ারপারসন আমাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। সেখানে তিনি আগ্রহী প্রার্থীদের সম্পর্কে জানতে চান। আমি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান সরাসরি প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছি। তবে দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই আমরা কাজ করবো বলে জানিয়েছি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার সিদ্ধান্ত জানাবেন।’

তবে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সভায় কালাম ও গিয়াসউদ্দিন প্রার্থিতা নিয়ে নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করেনি।

এদিকে বিএনপির হাই কমান্ড চাচ্ছেন এবারও প্রার্থী হন তৈমূর আলম খন্দকার। যদিও ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবরের ভোটের মাত্র ৭ ঘণ্টা আগে দলের নির্দেশে বসে যেতে হয় তৈমূরকে। শুক্রবার রাতে ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে বৈঠকের সময়ে কেন্দ্রীয় নেতারা প্রথম প্রার্থী হিসেবে তৈমূরের নাম প্রস্তাব করেন।

তবে তৈমূর আলম খন্দকার হটনিউজ২৪বিডিকে জানান, ‘শনিবার রাতে আলোচনায় বসা নেতারা আদৌ নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

আবার দলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা বলেন, যেহেতু শুক্রবার দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের দুর্বলতা নিয়ে পরিহাস করেছেন সেহেতু এ কমিশনের অধীনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে অংশ না নেওয়াটাই উচিত।’

তৈমূর জানান, ‘নির্বাচনে অংশ নিতে আমার কোনও আগ্রহ নেই। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আমার কোনও আস্থাও নেই। অনেক মিডিয়াও বিএনপির পক্ষে কথা বলবে না। এসব কারণে নির্বাচনে আমার অনাগ্রহ। আবার, ম্যাডামের ইচ্ছা আমি যেন প্রার্থী হই। আমি পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেছি-এবার ক্ষমা চাই। নির্বাচন করতে চাই না আমি। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে আমি কাজ করবো। তবে আমাকে যদি দেয় তাহলে তো নির্বাচন করতেই হবে।’

এদিকে বিএনপির প্রার্থী হতে ইচ্ছুক সাখাওয়াত হোসেন খান সাত খুনের পর আন্দোলন করতে গিয়ে আলোচনায় আসেন। ওই সময়ে তাকে আওয়ামী লীগের নামধারী নেতা ও সাত খুনের ঘটনার আসামিদের চাপ ও হুমকির শিকার হন। যদিও ২০০৯ সালে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহ করে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির পৃথক কমিটিও গঠন করেন তিনি। এ নিয়ে তাকে বেশ বেগ পেতে হয়। তখন বিদ্রোহী কমিটির সেক্রেটারি ছিলেন সাখাওয়াত আর মূল ধারার নির্বাচিত সেক্রেটারি ছিলেন এটিএম কামাল।

অন্যদিকে এটিএম কামাল বিগত বিএনপি সরকারের শেষের দিকে বিএনপি ত্যাগ করে বিকল্প ধারা ও এলডিপিতে যুক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় নেতা বনে যান। তবে ওয়ান ইলেভেনের পর খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ নেতাদের মুক্তি দাবি করে টানা ১১দিন অনশন করে আবারও বিএনপিতে ফিরে আসেন।

এ ব্যাপারে এটিএম কামাল জানান, ‘বিগত দিনে দলের জন্য আমার ত্যাগ ও কর্মকাণ্ডের কারণে তো মনোনয়ন প্রত্যাশা করতেই পারি। আমি আশা করি দল আমাকে মূল্যায়ণ করবে। তবে নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন আমরা তার পক্ষে কাজ করবো।’

সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে এ নির্বাচনকে আমরা অ্যাসিড টেস্ট হিসেবে এবং চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। দল ও নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top