সকল মেনু

শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব বিসর্জনের মধ্যেদিয়ে

bishorjon_38353হটনিউজ ডেস্ক : সারাদেশে প্রিয়দেবী দুর্গা মা’কে বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সনাতন ধর্মাম্বলীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো। বিজয়া দশমীতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চোখের জলে আজ মঙ্গলবার মা দেবী দুর্গাকে বিদায় জানালেন। আজ মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিভিন্ন নদী, খাল, বিল, পুকুর ও জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৫ দিনের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী ও মহানবমীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার নারী-পুরুষ ধর্মীয় নানা আচার অনুষ্ঠান পালন করেন। বিজয়া দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে তারা এ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন। বিজয়া দশমী উপলক্ষে আজ ছিল সরকারি ছুটির দিন।
আজ বিজয়া দশমীর পূজা আরম্ভ হয় সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে এবং পূজা সমাপন ও দর্পন বিসর্জন হয় সকাল ৯ টা ৪৯ মিনিটে। রাজধানীর পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমে মূলত সকালেই দেবীর শাস্ত্রীয় বিসর্জন সম্পন্ন হয়। বিকালে শুধু আনুষ্ঠানিক শোভাযাত্রা সহকারে দেবী দুর্গা ও অন্যান্য দেব-দেবীর বিসর্জন দেয়া হয়। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পক্ষ থেকে বিজয়া দশমীর এ বৃহৎ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বিকেল ৪টায় বের করা হয়। দেবী দুর্গাসহ অন্যান্য দেব-দেবীকে শোভাযাত্রাসহ সদরঘাট নৌ-টর্মিনালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিসর্জনের মাধ্যমে দেব-দেবীদের আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানো হয়। এর মধ্যদিয়ে দেবী মর্ত্যলোক থেকে আবার স্বর্গলোকে গমন করলেন।
ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গন থেকে কেন্দ্রীয় বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রা বের করার আগে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিমা জড়ো হতে থাকে ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণ ও পলাশী মোড়ে। পরে পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বুড়িগঙ্গার তীরে এসে শেষ হয় এ শোভাযাত্রা। শংখ, উলু ধ্বনি, খোল-করতাল, ঢাক-ঢোল ও কাঁসার বাজনার সঙ্গে দেশি-বিদেশি গানের মিউজিক বাজিয়ে দুর্গাভক্তরা দেবী বন্দনার গান গেয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক পদক্ষিণ করে বুড়িগঙ্গার প্রতিমা ঘাটে নিয়ে যায় দুর্গা মাকে।
রাজধানীর অধিকাংশ মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হয় সদরঘাট বুড়িগঙ্গা নদীতে। প্রতিমা ঘাটে নিয়ে আসার পর শেষবারের মতো ধুপধুনো নিয়ে আরতিতে মেতে ওঠেন ভক্তবৃন্দ। শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে নৌকায় তুলে বিসর্জন দেয়া হয়। বিসর্জনের এ পর্ব রাত পর্যন্ত চলবে। বিশুদ্ধ পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে মর্তলোকে (পৃথিবী) এসেছিলেন। আবার বিদায় নিলেন সেই ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়েই।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের হিসাব অনুযায়ী, এবার সারাদেশে ২৯ হাজার ৩৯৫টি স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। যা গত বছরের তুলনায় ৩২৪টি বেশি। আর রাজধানী ঢাকায় পূজা অনুষ্ঠিত হয় ২২৯টি মন্ডপে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার এবং জাতীয় দৈনিকগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করে।
পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তে এ পূজার আয়োজন করায় এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধারে যাত্রার আগে শ্রীরাম চন্দ্র দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালের অমাবশ্যা তিথিতে। এ জন্যই দেবীর শরৎকালের এ পূজাকে অকাল বোধনও বলা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top