সকল মেনু

নডাইলে পালিত হলো এস এম সুলতানের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী

unnamedউজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইল:  {১০-১০-১৬} কিংবদন্তী চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী। এই শিল্পস্রষ্টার মৃত্যুর দু’দশক পেরিয়ে গেলেও তিমিরেই রয়ে গেছে মানবতার কল্যাণে আজন্ম লালিত তার সকল ভা জেলা প্রশাসক মো. হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন এস এম সুলতান বেঙ্গল আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ অশোক কুমার শীল, এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের সাবেক সদস্য সচিব এডভোকেট ইকবাল হোসেন সিকদার, চিত্রশিল্পী বলদেব অধিকারী, জেলা কালচারাল অফিসার হায়দার হোসেন প্রমুখ। জেলা প্রশাসক মো. হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন এস এম সুলতান বেঙ্গল আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ অশোক কুমার শীল, এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের সাবেক সদস্য সচিব এডভোকেট ইকবাল হোসেন সিকদার, চিত্রশিল্পী বলদেব অধিকারী, জেলা কালচারাল অফিসার হায়দার হোসেন প্রমুখ।বনা ও উপলব্ধি। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের পাঠানো তথ্যর ভিতিতে জানা যায়,{১০-১০-১৬} সোমবার সকালে এ উপলক্ষে নড়াইল জেলা প্রশাসন ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল কোরআনখানি, শিল্পীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মাজার জিয়ারত, শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও পুরস্কার বিতরণী। সকাল ৮টায় শিল্পীর মাজারে জেলা প্রশাসন, এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন, নড়াইল এসএম সুলতান শিশু চারু ও কারুকলা ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে শিশুস্বর্গে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন এস এম সুলতান বেঙ্গল আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ অশোক কুমার শীল, এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের সাবেক সদস্য সচিব এডভোকেট ইকবাল হোসেন সিকদার, চিত্রশিল্পী বলদেব অধিকারী, জেলা কালচারাল অফিসার হায়দার হোসেন প্রমুখ। পরে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। ভক্ত অনুরাগীদের অভিযোগ, শিল্পীর আবাসস্থল ঘিরে কিছু নির্মাণকাজ আর জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালনেই এখন সীমাবদ্ধ সুলতানের স্মৃতিরক্ষা পর্ব। তবে জেলা প্রশাসকের দাবি, সুলতানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার।

১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল শহরের মাছিমদিয়া এলাকায় এক দরিদ্র রাজমিস্ত্রির ঘরে জন্ম নেন এস এম সুলতান। ছবি আঁকার প্রতি প্রচণ্ড ঝোঁকই কৈশোর থেকে একটু আলাদাভাবে ভাবতে শেখায় তাকে। ফলাফল, মাত্র ২৫ বছর বয়সেই সুলতানের ছবি ঠাঁই পায় পিকাসো, সালভাদর দালির সাথে লন্ডনের ভিক্টোরিয়া, অ্যামবেকমেন্ট ও লেস্টারের মতো গ্যালারিগুলোতে। তবে কিংবদন্তী এই শিল্পীর স্মৃতি রক্ষায় তার আবাসস্থলে কিছু অবকাঠামো নির্মিত হলেও, এস এম সুলতানের চেতনায় ভাস্বর একটি জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্ন আজো পূরণ হয়নি বলে মনে করেন তার ভক্ত অনুরাগীরা। বরঞ্চ মুখ থুবড়ে পড়েছে নতুন প্রজন্মের মেধা ও মনন বিকাশে তার নেয়া নানা উদ্যোগ। আর নৌ-বিহারে শিশুদের চিত্রাঙ্কন শিক্ষা তো এখন শুধুই স্মৃতি। তবে এস এম সুলতানের চেতনাকে ধারণ করে সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের কথা জানালেন নড়াইল জেলা প্রশাসক মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ। এক নজরে এস এম সুলতানের সংক্ষিপ্ত জীবন পুরো নাম: শেখ মোহাম্মদ সুলতান। পারিবারিক ডাক নাম: লাল মিয়া। যে নামে পরিচিত: এস এম সুলতান। জন্ম: ১০ আগস্ট ১৯২৩ সালে নড়াইলের মাসিমদিয়া গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে। এস এম সুলতানের পিতা মেছের ধাউড়িয়া পেশায় একজন প্রান্তিক কৃষক ও কাঠ মিস্ত্রী ছিলেন। এস এম সুলতানের মা ছিলেন গৃহিণী, সুলতানের শৈশবেই তিনি মারা যান। তার নাম জানা যায়নি। এসএম সুলতান সৎমার কাছে বড় হোন। পড়াশোনা:

১৯৮২ সালে নড়াইল ভিক্টোরিয়া স্কুলে ভর্তি হয়ে পঞ্চম শ্রেণী পাস করেন। এরপর বাবার ইচ্ছায় ভর্তি হোন মাদ্রাসায়। সেখানে সপ্তম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় কলকাতায় চলে যান। ১৯৪১ সালে কলকাতা আর্ট কলেজ ভর্তি হোন। আর্ট কলেজে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত পড়েছিলেন তিনি। পেশা: চিত্রশিল্পী।কার্যকাল: জাতীযতা: বাংলাদেশি। চিত্র প্রদর্শনী: এস এম সুলতানের প্রথম চিত্র প্রদর্শনী ১৯৪৫ সালে ভারতের সিমলাতে। পরে ১৯৪৮ ও ১৯৪৯ সালে লাহোর ও করাচিতে। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে তার মোট বিশটি, এর মধ্যে একটি যৌথ প্রদর্শনী ছিল যেখানে পাভলো পিকাসো, সালভাদর দালি, মাতিস, ব্রাক ও ক্লির মতো বিশ্বনন্দিত শিল্পীদের চিত্রকর্মের সঙ্গে ছিল এস এম সুলতানের চিত্রকর্ম। ১৯৭৬ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে তার প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে শিল্পকলা একাডেমি। ১৯৮৭ সালে জার্মান কালচারাল ইনস্টিটিউট এবং সর্বশেষ চিত্র প্রদর্শনী হয় ১৯৯৪ সালে ঢাকার গ্যালারি ‘টোনে’। উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্ম: জমি কর্ষণ-১, জমি কর্ষণ-২ (তেল রং ১৯৮৬, ১৯৮৭), হত্যাযজ্ঞ (তেল রং ১৯৮৭), মাছ কাটা (তেল রং ১৯৮৭), জমি কর্ষণে যাত্রা-১ এবং ২ (তেল রং ১৯৮৭, ১৯৮৯), যাত্রা (তেল রং ১৯৮৭), ধান মাড়াই (তেল রং ১৯৯২), গাঁতায় কৃষক (তেল রং ১৯৭৫), প্রথম বৃক্ষ রোপন (তেল রং ১৯৭৬ ), চর দখল (তেল রং ১৯৭৬) পৃথিবীর মানচিত্র (তেল রং) ইত্যাদি। পুরস্কার ও সম্মাননা: বাংলাদেশের একুশে পদক, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার সহ দেশে বিদেশে নানা পুরস্কার ও সম্মাননা। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৯৮২ সালে তাকে এশিয়ার ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা করে। চারুকলা ইন্সটিটিউটের ৫০ বছর পূর্তিতে মরণোত্তর সম্মাননা দেয়া হয়। মৃত্যু: ১০ অক্টোবর ১৯৯৪ সালে যশোরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তাকে যশোরে সমাহিত করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top