সকল মেনু

এবার আলোর মুখ দেখছে দোহাজারি-গুমদুম রেলপথ

tran-asian_37018হটনিউজ ডেস্ক : অবশেষে আলোর পথ দেখছে দীর্ঘ প্রত্যাশিত দোহাজারি-গুমদুম রেলপথ প্রকল্প। মেঘা এ প্রকল্পের জন্য এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা (১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) অনুমোদন করেছে। পর্যটন শহর কক্সবাজার এবং বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের মধ্যে কানেকটিভিটির জন্য ৫৮ বছর আগে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে ইতোমধ্যে দোহাজারি-রামু-কক্সবাজার এবং রামু থেকে মায়ানমারের সীমান্ত বরাবর গুমদুম পর্যন্ত ডুয়াল গেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করেছে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৬ হাজার ৩৪ কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার এবং ১২ হাজার কোটি টাকা দেবে এডিবি। এডিবি সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) রেলওয়ে কানেকটিভিটি ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের অধীন ট্রান্স এশিয়ান রেললাইন নেটওয়ার্ক-এর জন্য ৪ কিস্তিতে ১.৫ বিলিয়ন ডলার ছাড় করবে। এই প্রকল্প আগামী বছরের জুন মাস নাগাদ শুরু হবে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্পের উপপরিচালক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান জানান, এডিবি তাদের বোর্ড মিটিংয়ে প্রকল্পের জন্য ১.৫ বিলিয়ন ডলার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তাদের ওয়েবসাইটে এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেছে। তিনি জানান, এডিবি প্রথম পর্যায়ে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা, তৃতীয় পর্যায়ে ৪ হাজার কোটি টাকা এবং চতুর্থ পর্যায়ে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ছাড় করবে। তিনি জানান, আমরা জমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় সম্পন্ন করেছি। প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যেই টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। টেন্ডার দাখিলের সময়সীমা আগামী ২৮ নভেম্বর। টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ আগামী বছরের মাঝামাঝি সম্পন্ন হতে পারে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ২০১৭ সালের জুলাই মাস নাগাদ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে এডিবি’র একটি টিম প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন করেছে। এ রেলপথের দৈর্ঘ হবে ১২৮ কিলোমিটার। এটা যাবে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগড়া উপজেলা এবং কক্সবাজারের চকোরিয়া, রামু, কক্সবাজার সদর ও উখিয়া উপজেলা এবং বান্দরবানের গুমদুম উপজেলার মধ্য দিয়ে। এ প্রকল্পের আওতায় দোহাজারি থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার, রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এবং রামু থেকে গুমদুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে।
১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই করে। এরপর ১৯৭১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ মার্চের মধ্যে জাপান রেলওয়ে টেকনিক্যাল সার্ভিসও একটি সম্ভাব্যতা যাচাই করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রকল্পটি আর গ্রহণ করা হয়নি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে আরেক দফা সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়।
২০১০ সালের ৬ জুলাই দোহাজারি থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে গুমদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল-লাইন মিটার গেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প একনেক-এ অনুমোদিত হয়। ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সরকার সিঙ্গেল-লাইন মিটার গেজ থেকে ডুয়াল গেজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। প্রায় ১ হাজার ৭৪২ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য জনগণকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top