সকল মেনু

সালথায় নিজস্ব নিয়মে চলছে আব্বাছিয়া দাখিল মাদ্রাসার কার্যক্রম!

1-287সালথা (ফরিদপুর) সংবাদদাতা: ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নে অবস্থিত পশ্চিম বিভাগদী আব্বাছিয়া দাখিল মাদ্রাসা কার্যক্রম নিজেদের মনগড়া নিয়মে চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত মাদ্রাসার কার্যক্রম চলার কথা থাকলে এখানে চলছে ভিন্ন নিয়মে। প্রতিদিন সকাল ১০ টায় মাদ্রাসার কার্যক্রম শুরু হলেও দুপুর দুই টায় ছাত্রছাত্রীদের ছুটি দিয়ে মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষনা করা হচ্ছে। শিক্ষকরাও নিয়মিত মাদ্রাসায় আসছে না। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।
জানা গেছে, ঈদের লম্বা ছুটির পরেও গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর বিকাল ২ টায় শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয় শিক্ষকরা। শুধু ১৯ আর ২০ সেপ্টেম্বর নয় প্রায় দিনই এভাবে মাদ্রাসার বন্ধ ঘোষনা করা হয়। এনিয়ে স্থানীয় অভিভাবকদের সাথে মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিরোধও চলছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার হাজী হাফেজ মাওলানা মো. ফিরোজ আলমসহ মাদ্রাসার অধিকাংশ শিক্ষক ঠিক মত মাদ্রাসায় আসছে না। এখানে মোট ১৪ জন শিক্ষক রয়েছে। এর মধ্যে নিয়মিত ৭-৮ জন শিক্ষক মাদ্রাসায় এসে ক্লাস নেয়। বাকিরা যার যার নিজের কাজে ব্যস্ত থাকে। কিন্তু শিক্ষকরা মাদ্রাসায় অনিয়মিত আসলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেখান হয় নিয়মিত। এতে শিক্ষকদের মধ্যে কোন সমস্যা হয় না। কারণ বাড়তি ছুটি সবাই একে আপরের সহযোগিতায় নিয়ে থাকে। এদিকে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার একজন হজ্ব এজেন্সী তাই প্রতিবছর হজ্ব পালনের সময় মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদ কমিটির সভাপতিকে ম্যানেজ করে তিনি দেড় মাসের ছুটি নিয়ে মক্কায় যান। বর্তমানেও তিনি ছুটিতে রয়েছেন। মাদ্রাসায় চাকুরী করার মধ্যে অন্যকর্মে দায়িত্ব পালন করায় সুপারের প্রতি অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যে কারণে মাদ্রাসার কার্যক্রম আরো ব্যাহত হয়।
গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, মাদ্রাসার কোন সাইন বোড নেই। সব কিছুতে এলোমেলো ভাব। ১৪ জন শিক্ষকের মধ্যে মাত্র ৭ জন শিক্ষক অফিস কক্ষে বসে আছেন। আর শিক্ষার্থীরা যার যার মত করে এদিক ওদিক ঘুরাফেরা করছে। খোজ নিয়ে জানা যায়, মাদ্রাসার সহসুপার সিদ্দিকুর রহমান একটি শ্রেণী কক্ষের মধ্যে ঘুমিয়ে আছে। সেখানে গেলে সাংবাদিকদের উপস্থিত টের পেয়ে তিনি তাড়াঘুড়া করে ঘুম থেকে উঠেন। ক্লাস টাইমে কেন ঘুমাচ্ছেন এমন প্রশ্ন করা হলে মাদ্রাসার সহসুপার বলেন, আমি কই ঘুমাচ্ছি, আমি তো রেস্ট নিচ্ছি, আর এখন তো লাঞ্চের টাইম। নাম প্রকাশে না করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, ভুয়া সার্টিফিকেটধারী কয়েক শিক্ষক এ মাদ্রাসায় চাকুরী করছেন। সংশ্লিষ্টরা যদি সঠিকভাবে তদন্ত করে তাহলে এসব শিক্ষকদের সার্টিফিকেটের বিষয় সব বেরিয়ে আসবে। এ ছাড়া মাদ্রাসার কাজের একটি ল্যাবটপ রয়েছে যা সভাপতির বাড়িতে থাকে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয় পশ্চিম বিভাগদী আব্বাছিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদ কমিটির সভাপতি আলিম মোল্যা বলেন, দুপুর ২ টায় মাদ্রাসা বন্ধ করার বিষয়টি আমি জানার পর শিক্ষকদের আমি চাপ সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা নিয়মানুযায়ী বিকাল ৪ টায় মাদ্রাসা ছুটি দেন। আর ল্যাবপটসহ অন্যান্য বিষয় তার কিছু জানা নেই বলে তিনি জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিনয় কুমার চাকী বলেন, দুপুরে মাদ্রাসার বন্ধ করে দেয়ার নিয়ম নেই। সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম চলবে। এ মাদ্রাসায় যা হচ্ছে তা মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিজস্ব নিয়মে হচ্ছে। বিষয় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top