সকল মেনু

শত শত মণ পঁচা ইলিশ আসছে: ভালো ইলিশের দাম এখনো কমেনি

unnamedশাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর:  চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে প্রতিদিন শত শত মণ পঁচা ইলিশ লবণজাত করা হচ্ছে। এ বছর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদী ও সমুদ্র এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। ওই ইলিশ চাঁদপুর মাছঘাটে আসতে সময় লেগে যাচ্ছে ২/৩ দিন। যার ফলে সমুদ্র আর নদীতে ট্রলারে থাকা অবস্থায় বরফ গলে যাওয়ায় ইলিশ মাছগুলো পচে গলে যাচ্ছে। এ পচা ইলিশ চাঁদপুর মাছঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ীরা লবণজাত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। মাছঘাটের বাইরে পরিত্যক্ত রেল লাইন সংলগ্ন স্থানে বড় লম্বা আকারের সামিয়ানা তৈরি করে দিয়েছে মাছ কাটার জন্যে। প্রতিদিন শত শত মণ পচা ইলিশ মাছ কেটে লবণজাত করছে শ্রমিকরা। এসব মাছ লবণজাত করতে বিভিন্ন জেলা থেকে নারী-পুরুষ ভাড়া করে আনা হয়েছে। ৩০/৪০ জন শ্রমিককে চুক্তিভিত্তিক এনে মাছ কাটার ও লবণ দেয়ার কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে। এসব লোনা ইলিশ পাঠানো হবে জামালপুর, শেরপুর এবং ময়মনসিংহসহ উত্তর বঙ্গের জেলাগুলোতে।
দক্ষিণাঞ্চল থেকে ট্রলারযোগে ইলিশ আসতে সময় লেগে যাওয়ায় মাছগুলো পচে যাচ্ছে। এসব মাছ ঘাটে উঠালে মৎস্য ব্যবসায়ী চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস গাজী, দেলোয়ার খাঁ, বাবুল হাজীসহ অন্যান্যরা কিনে জামালপুর ও শেরপুর থেকে লোকজন ভাড়া করে এনে মাছ কেটে লবণ দেয়ার কাজে ব্যবহার করছে। গত ক’দিন ধরে জামালপুরে ৩টি ও শেরপুরের ১৪টি টিমে প্রায় ৭৫ জন লোক চাঁদপুরে এসে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মাছ কেটে লবণ দিয়ে লোনা তেরির কাজে নিয়োজিত রয়েছে। জামালপুরের লোকজন কম থাকায় তারা চাঁদপুরের ৩০-৪০জন শিশু ও নারীকে মাছ কাটার কাজে ব্যবহার করছে। এদেরকে প্রতিদিন ৫শ’ টাকা করে হাজিরা দেয়া হয়। গ্রুপভুক্ত করে ৪জন নারী কমপক্ষে দিনে ২০ মণ মাছ কাটতে পারে।  কমপক্ষে প্রতিদিন ৫০-১শ’ মণ মাছ কেটে লবণ দেয়া হচ্ছে। তার জন্য জামালপুর থেকে আসা লোকজন জনপ্রতি ১ হাজার টাকা করে হাজিরা নিচ্ছেন।

unnamed
এ লোনা ইলিশ জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে প্রকার ভেদে ২শ’ থেকে ৭শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হবে। জামালপুর ও ময়মনসিংহে লবণ মাখা ইলিশে চাহিদা প্রচুর। এ লোনা ইলিশ চাঁদপুর থেকে জামালপুরে নিয়ে পুনরায় মাছগুলোকে প্রসেজ করা হবে। সেখানে বড় বড় কুয়া তেরি করে মাছগুলো রাখা হবে। লবণের গরম পানি ঠান্ডা করে ওই কুয়াতে মাছের উপর দেয়া হবে। এতে করে এ লোনা মাছ ২-৩ বছরেরও নষ্ট হবে না। চাঁদপুর যেসব ইলিশ মাছ কেটে লবণ দেয়া হচ্ছে সেসব মাছ একেবারেই পচে যাওয়া।
জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহে নতুন বর বাড়িতে আসলে এ লোনা মাছ দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়ে থাকে। তাছাড়া ওইসব এলাকায় তাজা ইলিশের চেয়ে লবণ দেয়া ইলিশের চাহিদা অনেক বেশি রয়েছে।
এদিকে চাঁদপুরের বাজারে এখনো ইলিশের দাম সেই আগের মতোই রয়ে গেছে। ভালো ও তাজা ইলিশের দাম ৭শ’ খেকে ১ হাজার ২শ’ টাকা পর্যন্ত। নরম হয়ে যাওয়া ইলিশ অবশ্য ৪শ’ থেকে ৯শ’ টাকার ভেতর পাওয়া যাচ্ছে। নিন্ম আয়ের সাধারণ মানুষ নরম হয়ে যাওয়া বরফজাত ইলিশ দিয়েই ইলিশের স্বাদ নিচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top