সকল মেনু

মীর কাসেমের রিভিউ খারিজের রায় ট্রাইব্যুনালে

 ae2f07935e24ff6724e8a91324242880-kasem

রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে একাত্তরের গুপ্তঘাতক কুখ্যাত আলবদর বাহিনীর নেতা মীর কাসেম আলীর করা আবেদন খারিজের রায়ের অনুলিপি ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রায়ের অনুলিপি ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন আপিল বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মেহেদি হাসান।

এর আগে আজ বিকেলে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. সাব্বির ফয়েজ প্রথম আলোকে বলেন, রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে মীর কাসেম আলীর করা আবেদন খারিজের ২৯ পৃষ্ঠার রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। রায়ের অনুলিপি ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার পর সেখান থেকে তা কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেমের করা আবেদন আজ খারিজ করে দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সকালে এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দুটি অভিযোগে মীর কাসেমের ফাঁসি ও আটটি অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়। ওই বছরের ৩০ নভেম্বর আপিল করেন মীর কাসেম।

চলতি বছরের ৮ মার্চ আপিলের রায়ে ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে হত্যার দায়ে মীর কাসেমের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন সর্বোচ্চ আদালত। অন্য ছয়টি অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে তাঁর কারাদণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৬ জুন প্রকাশিত হয়। ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৯ জুন আবেদন করেন মীর কাসেম। তাঁর আবেদনের ওপর ২৪ আগস্ট শুনানি শুরু হয়।

মীর কাসেম আলীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল।

জামায়াত নেতা মীর কাসেম দলটির অর্থের জোগানদাতা হিসেবে বেশি পরিচিত। বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বন্ধের ষড়যন্ত্রের সঙ্গেও তিনি যুক্ত বলে অভিযোগ আছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াতের এই নেতা ১৯৭১ সালে ছিলেন দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের চট্টগ্রাম শহর শাখার সভাপতি। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন কুখ্যাত গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান।

মীর কাসেমের নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় মুক্তিযুদ্ধকালে চট্টগ্রাম শহরের আন্দরকিল্লা এলাকার ডালিম হোটেলে স্থাপিত হয় আলবদর বাহিনীর ক্যাম্প ও নির্যাতনকেন্দ্র।

একাত্তরে চট্টগ্রামে এই ডালিম হোটেলকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হতো সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ, যার তত্ত্বাবধানে ছিলেন মীর কাসেম। এর ফলে ডালিম হোটেল মানুষের কাছে পরিচিতি পায় ‘হত্যাপুরী’ হিসেবে। আর নৃশংসতার জন্য মীর কাসেমের পরিচয় হয় ‘বাঙালি খান’।

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top