সকল মেনু

বাংলা নাটকের স্বতন্ত্র কারিগর

বাংলা নাটকের নিজস্ব স্বর, রীতি বা কৌশলজাত যে ধারা হাজার বছর ধরে আমরা প্রজন্মপরম্পরায় বহন করে চলেছি, তা নিজের ভাবনার দূরবীনে দৃষ্টিপাত করে যিনি শীর্ষস্থানটি নিজের করে নিয়েছেন, তিনি হলেন আমাদের গৌড়জন নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন। বাংলা নাটকের স্বতন্ত্র কারিগর আমাদের প্রিয় সেলিম স্যার। তিনি মানুষের পথে হাঁটতে দুর্দান্ত পছন্দ করতেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়নাভিরাম সবুজ ক্যাম্পাসে শিল্পশিষ্যদের সঙ্গে হাঁটাপথেই মানুষের কথা, জীবনের কথা, দেশের কথা, ভূমির কথা ভাবতেন আর গল্প বুনতেন স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনের এই প্রবাদপুরুষ।

শুধু নাট্যকারই নন, তিনি একাধারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, সংগঠক, নাট্যনির্দেশক এবং শিল্পতাত্ত্বিক। শিল্পাদর্শে দ্বৈতাদ্বৈতবাদী এই নাট্য কারিগর সমকালীন বিশ্বের শিল্পধারণায় নতুন নন-জেনেরিক শিল্পধারার প্রবর্তক। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-পরবর্তী বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বাংলা নাটকের শিকড় ও আঙ্গিক সন্ধানী নাট্যকার অধ্যাপক ড. সেলিম আল দীন বাঙালির নিজস্ব নাটকের আপন বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন নিপুণ কুশলতায়।

২০০৮ সালে ১৪ জানুয়ারি অকালপ্রয়াত এই মহান শিল্পাচার্যের ৬৭তম জন্মদিন আজ। নাট্যকার সেলিম আল দীন জন্মেছিলেন ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনীর সোনাগাজী থানার সেনেরখিল গ্রামে। মফিজউদ্দিন আহমেদ ও ফিরোজা খাতুনের তৃতীয় সন্তান তিনি। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ফেনী, চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও রংপুরের বিভিন্ন স্থানে। বাবার চাকরির সূত্রে এসব জায়গার বিভিন্ন স্কুলে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ১৯৬৪ সালে ফেনীর সেনেরখিলের মঙ্গলকান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৬৬ সালে ফেনী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গিয়ে ভর্তি হন টাঙ্গাইলের করোটিয়ার সা’দত কলেজে। সেখান থেকে স্নাতক পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে নাটক’-এর ওপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

সেলিম আল দীনের লেখক হিসেবে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৮ সালে, কবি আহসান হাবিব সম্পাদিত দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার মাধ্যমে। আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের নিয়ে লেখা তাঁর বাংলা প্রবন্ধ ‘নিগ্রো সাহিত্য’ ছাপা হয় ওই পত্রিকায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই নাটকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন সেলিম আল দীন, যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারে। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষে যোগ দেন বিজ্ঞাপনী সংস্থা বিটপীতে, কপিরাইটার হিসেবে। ১৯৭৪ সালে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ওই বছরই বেগমজাদী মেহেরুন্নেসার সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তাঁদের একমাত্র সন্তান মইনুল হাসানের অকালমৃত্যু হয়। বাংলাদেশে একমাত্র বাংলা নাট্যকোষের প্রণেতা তিনি। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনাচরণকেন্দ্রিক এথনিক থিয়েটারেরও তিনি উদ্ভাবনকারী।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠা সেলিম আল দীনের হাত ধরেই। ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সেলিম আল দীন ১৯৮১-৮২ সালে নাট্য নির্দেশক নাসির উদ্দীন ইউসুফকে সাথি করে গড়ে তোলেন গ্রাম থিয়েটার।

তাঁর প্রথম রেডিও নাটক ‘বিপরীত তমসায়’ ১৯৬৯ সালে এবং টেলিভিশন নাটক আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় ‘লিব্রিয়াম’ (পরিবর্তিত নাম ‘ঘুম নেই’) প্রচারিত হয় ১৯৭০ সালে। আমিরুল হক চৌধুরী নির্দেশিত এবং বহুবচন প্রযোজিত প্রথম মঞ্চনাটক সর্পবিষয়ক গল্প মঞ্চায়ন করা হয় ১৯৭২ সালে। তাঁর রচিত ‘হরগজ’ নাটকটি সুইডিশ ভাষায় অনূদিত হয় এবং নাটকটি ভারতের রঙ্গকর্মী নাট্যদল হিন্দি ভাষায় মঞ্চায়ন করেছে।

সেলিম আল দীনের প্রথম দিককার নাটকের মধ্যে সর্পবিষয়ক গল্প, জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন, মূল সমস্যা—এগুলোর নাম ঘুরেফিরে আসে। সেই সঙ্গে প্রাচ্য, কিত্তনখোলা, বাসন, আততায়ী, সয়ফুল মূলক বদিউজ্জামান, কেরামত মঙ্গল, হাত হদাই, যৈবতী কন্যার মন, মুনতাসির ফ্যান্টাসি ও চাকা তাঁকে ব্যতিক্রমধর্মী নাট্যকার হিসেবে পরিচিত করে তোলে। জীবনের শেষ ভাগে ‘নিমজ্জন’ নামে মহাকাব্যিক এক উপাখ্যান বেরিয়ে আসে সেলিম আল দীনের কলম থেকে।

টেলিভিশন নাটক অশ্রুত গান্ধার, শেকড় কাঁদে জলকণার জন্য, ভাঙ্গনের শব্দ শুনি, ছায়া শিকারী, রঙ্গের মানুষ, নকশীপাড়ের মানুষেরা তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা পায়। রেডিও নাটক বিপরীত তমসায়, ঘুম নেই, রক্তের আঙ্গুরলতা, কিত্তনখোলা তাঁর অনবদ্য রচনাকর্ম। এ ছাড়া তাঁর নাটক নিয়ে চলচ্চিত্র চাকা বা কিত্তনখোলা ব্যতিক্রমী শিল্পকর্ম হিসেবে স্বীকৃত। মহুয়া, দেওয়ানা মদিনা, একটি মারমা রূপকথা, কাঁদো নদী কাঁদো, মেঘনাদ বধ, ম্যাকবেথসহ বেশ কয়েকটি গবেষণাধর্মী নাট্য নির্দেশনা দেন তিনি। সেলিম আল দীন তাঁর সামগ্রিক নাট্যকর্মেও স্বীকৃতি হিসেবে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, কথক সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ২০০৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।

সেলিম আল দীন বাংলার নদী, জল, বায়ু, পাখপাখালি আর জোছনাসমেত প্রকৃতিকে মাখামাখি করে বেড়ে উঠেছেন। তাই ঔপনিবেশিকতার শৃঙ্খল ভেঙে বাংলা তথা প্রাচ্য গল্প ভাবনায় বুঁদ ছিলেন তিনি। সহজাতভাবেই প্রাচ্যপুরাণ কথা আত্মস্থ করে ঐতিহ্যের ধারায় সমকালীন বাংলা নাটকের নিজস্ব আঙ্গিক খুঁজে ফেরার প্রয়াসী হন সেলিম আল দীন।

সেলিম আল দীন বলতেন, ‘শিল্পের ভূগোল যদি মানি তবে স্বীকার করতেই হবে, এরও একটা সুনিশ্চিত এনভায়রনমেন্ট আছে। যে দ্রাক্ষা ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুতে সুমিষ্ট-আর্দ্র অঞ্চলে, তা নির্মমভাবে খর। যে ট্র্যাজেডি গ্রিসের এপিডোরাস মঞ্চে জীবনের অবিকল্প পতনকে আবিষ্কার করেছিল, তাকে বাঙালির জীবনের মধ্যে কখনোই খুঁজে পাওয়া যেত না। যদি তা হতো তবে গ্রিক ট্র্যাজেডিগুলো এ দেশেই রচিত হতে পারত। যে জটিল রক্তাক্ত মানুষ শেকসপিয়রের নাটকে ভিড় করেছে, আমরা তাদের মানবযাত্রার এক আশ্চর্য দিক বলে চিহ্নিত করতে পারি। কিন্তু স্বভূমিতে কৃত্রিমরূপে তাকে ফলাতে পারি না এবং তা যে ফলেনি, সে জন্য গ্লানিবোধ এক ধরনের হীনমন্যতাপ্রসূত। ইংরেজদের রক্তচক্ষু আমাদের শিখিয়েছিল যে, আমাদের পক্ষে যা স্বাভাবিক, তা-ই পরিত্যাজ্য। তাদের রচিত ইতিহাসের পথেই আমাদের পুরো জনপদের ইতিহাস। সেখানে দুর্ভিক্ষ নেই, সাম্প্রদায়িকতার কর্কশ হাত থেকে রক্তঝরা নেই, সহস্র বছরের শিল্পরীতির নাড়িছেঁড়া আর্তনাদ নেই।’

আমাদের হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি-বিনাশী এমন ঔপনিবেশিক ধ্যানধারণা, গ্লানি বা হীনমন্যতা ছুঁড়ে ফেলে সেলিম আল দীন হেঁটেছিলেন আবহমান বাংলার পথে। চিরচেনা তবে অনাবিষ্কৃত সেই পথে হাঁটতে হাঁটতে তিনি তাঁর গল্পগাঁথায় এক মহাকাব্যিক দ্যোতনায় নিরন্তর নিরীক্ষা ও গবেষণার পথ বেয়ে বাঙালির নিজস্ব নাট্যকাঠামো দাঁড় করিয়ে গেছেন। খণ্ড খণ্ড ঘটনার বিন্যাসে, কাহিনী, উপকাহিনীর উপজীব্যতায় এক গীতল উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে তাঁর নাট্য আখ্যান পূর্ণতা পায়। সেখানে গল্প-উপন্যাস, সংগীতের ঐকতানিক মূর্ছনা। এর মধ্য দিয়েই সেলিম আল দীন প্রবেশ করেছেন তাঁর নিজস্ব ভাবধারার বাঙালিয়ানার আপন ভূমিতে।

বাঙালির চিরায়ত নিজস্ব রুচিবোধ ও শিল্পরীতিতে গড়া এই নাট্য আঙ্গিককে সেলিম আল দীন নিজেই নামকরণ করেছেন বর্ণনাত্মক রীতি শিরোনামে। এই নাটকের কাঠামোকে তিনি বলেছেন ‘কথানাট্য’।

পাশ্চাত্য শিল্পভাবনাপুষ্ট অপরাপর বাংলা নাট্যকারদের অনুবর্তী না হয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের নাটক তিনি লিখেছেন। তাঁর উৎস ছিল প্রাচ্যপুষ্ট দেশজ স্বজাত্যবোধে উদ্দীপ্ত সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী নাট্যভাবনা।

নব্বইয়ের গণআন্দোলনকালে ‘চাকা’ নাটক রচনার সময় বাংলাদেশে ছিল সামরিক বুটের প্রচণ্ড দাপট। বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান লিখে নূর হোসেনরা রক্ত দিচ্ছেন। সে সময় বিভিন্ন স্থানে ছাত্র, পেশাজীবীসহ অনেক অজ্ঞাত মানুষের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের হাত। নাট্যকার এই অজ্ঞাত মানুষকে পৌঁছে দিতে চান জ্ঞাত ঠিকানায়। কিন্তু পথ চলতে চলতে দেখা যায়, সেই মরদেহগুলোই মানুষের বুকে স্বজন হারানোর বেদনা জাগিয়ে তোলে। পাঠক-দর্শককে নাট্যকার স্মরণ করিয়ে দেন, রাষ্ট্র যখন বিশেষ বাহিনীর হাতে পরিচালিত, সে সময় সাধারণ মৃত্যুর উৎসবেই জীবনের মানে খোঁজা আর মৃত্যুর মিছিলেই মুক্তির সন্ধান লাভের কথা।

রাষ্ট্র নিয়ে সেলিম আল দীনের সেই উপলব্ধি সমকালেও বড় প্রাসঙ্গিক।

‘রাষ্ট্রের দেহ আছে। মনুষ্যদিগেরও আছে।

কিন্তু রাষ্ট্রের দেহ ছেদবিচ্ছেদে নিত্যই পূর্ণ।

যেমন ছোটোকালে পারদ দেখিয়াছিলাম আধুলির সমান।

তা কচুপাতায় রাখিলে অখন্ড আবার কচুপাতা হইতে ঝরিয়া পড়িলে অনতিবিলম্বে বহুসংখ্যক

রূপালি বিন্দুতে পরিণত হইয়া বিচ্ছিন্নভাবে সম্পূর্ণতা লাভ করে।

রাষ্ট্র সেইরূপ।’

যৌবনে বিদেশ অনুপ্রাণিত নিরীক্ষাকে ভর করে নাট্য রচনা শুরু করলেও, তা বর্জন করে বাংলার মধ্যযুগীয় নাট্যরীতি উদ্ধারের মাধ্যমে আপন ঐতিহ্যের সঙ্গে সারা বিশ্বের অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে গড়ে তোলেন নিজস্ব ধরন। শিল্পের সমগ্রতায় পৌঁছানোর মাধ্যমে স্বদেশের উন্মোচন ছিল তাঁর নাট্যভাবনার প্রধান সুর। এমন এপিক ভাবনা, এতটা নান্দনিক আয়োজন বাংলা নাটকেই এক অদ্বিতীয় বলেই নাট্যতাত্ত্বিকরা মানেন, যা সেলিম আল দীন তথা বাংলা নাটককেই আপন মহিমায় ভাস্বর করেছে।

সেলিম আল দীন রচিত নাটক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠসূচির অন্তর্ভুক্ত। নাটকে ফিউশনতত্ত্ব এবং নিউ এথনিক থিয়েটারের উদ্ভাবক সেলিম আল দীন তাঁর জীবনব্যাপী ধ্যান, গবেষণা ও প্রজ্ঞায় পাশ্চাত্য শিল্পরীতির সব বিভাজনকে বাঙালির সহস্র বৎসরের নন্দনতত্ত্বের আলোকে অস্বীকারপূর্বক বাংলা সাহিত্যে এক নবতর শিল্পরীতির প্রবর্তন করেছেন। অধ্যাপক সেলিম আল দীনের শিল্পশীষ্য হিসেবে আমরাও সর্বান্তকরণে সেই শিল্পরীতিরই অনুবর্তী।

‘তোমার সম্মুখে অনন্ত মুক্তির অনিমেষ ছায়াপথ’

‘গঠিত হই শূন্যে মিলাই’—

এমন দার্শনিক কথার কারিগর, আমাদের প্রিয় শিক্ষক ও নবজন্মের পিতৃপুরুষ নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের আজ জন্মদিন। এই শিল্পতাত্ত্বিকের প্রতি প্রাণান্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি! শিল্পগুরু সেলিম আল দীন স্মরণের অন্তিম প্রশস্তি হোক মহাকবি আলাওলের সুরে।

তবেত প্রভুর ভান্ড কভু নহে ঊন

যতো হরে ততো বাড়ে এই তার গুণ।।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top