সকল মেনু

বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হলো কলেজ ছাত্রী লাবনী

2013-07-15-05-06-35-51e3835b95624-kushtia_mapকাঞ্চন কুমার,কুষ্টিয়া থেকে:বখাটেদের ধারাবাহিক উত্ত্যক্ত, অপহরণের চেষ্টা এবং হত্যার হুমকিতে তটস্থ কলেজ ছাত্রী লাবনী ইয়াসমিনের লেখাপড়া এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বখাটেদের ভয়ে নিজ বাড়িঘর ছেড়ে বাধ্য হয়ে সে এখন আশ্রয় নিয়েছে নানার বাড়িতে। থানায় অপহরণ মামলার বয়স ১ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো কোন আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মোকারমপুর ইউনিয়নের ফকিরাবাদ বখশীপাড়া গ্রামে। লাবনীর পরিবারের অভিযোগ, এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল বখাটেদের পক্ষ নেয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের ফকিরাবাদ বকসিপাড়া গ্রামের মুন্তাজের ছেলে শফিকুল এবং একই গ্রামের কুদ্দুস আলীর ছেলে সুমন দুবছর আগে থেকে একই গ্রামের এলটন আলীর মেয়ে লাবনী ইয়াসমিনকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো। চলতি বছরে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে লাবনী ইয়াসমিন পাশ করলে ওই বখাটেরা আরও বেশী করে উত্ত্যক্ত শুরু করে এবং বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাক্ষান করে লাবনীর পরিবার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৫জুন বিকেলে লাবনী তার বাড়ির পেছনের বাগানে লেবু তুলে ফেরার পথে বখাটে শফিকুল পেছন থেকে মুখ, হাত চেপে ধরে জোর পুর্বক অপহরণের চেষ্টা চালায়। এসময় তার ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশী রঙ্গিলা খাতুন ছুটে এসে তাকে বখাটের হাত থেকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়। পরদিন লাবনী ইয়াসমিন বাদি হয়ে ভেড়ামারা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শফিকুল ও সুমনকে আসামি করে একটি মামলা করে। যার নং ১৬ তারিখ-১৬ /০৬/২০১৩। এখানেই শেষ নয়, মামলা রেকর্ড হওয়ার পর থেকেই বখাটেরা ধারাবাহিক উত্ত্যক্ত এবং হত্যার হুমকিতে তটস্থ করে রেখেছে লাবনী ও তার পরিবারকে। তারা হুমকি-ধামকি দিয়ে মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছে। নিরুপায় হয়ে লাবনীর অবিভাবকরা তার নানা মুক্তিযোদ্ধা সামছের আলীর ফকিরাবাদ গ্রামের বাড়িতে লাবনীকে রেখে আসে। বখাটেদের ভয়ে লাবনী কলেজে পর্যন্ত যেতে পারছে না। এ দিকে মামলা দায়েরের একমাস অতিবাহিত হলেও এখনো কোন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। লাবনী ইয়াসমিন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলে, নবম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে স্থানীয় বখাটে শফিকুল রাস্তায় একা পেয়ে নানা ধরনের বিব্রতকর এবং আপত্তিকর কথা বলত। তার হয়ে সুমন নামে ওর বন্ধু আমাকে মাঝে মধ্যে কুরুচিপুর্ণ কথা বলে বিরক্ত করত। সে হুমকি দিয়ে বলতো, শফিকুলকে বিয়ে করতে হবে, নইলে এসএসসি পরীক্ষা দিতে দিবে না। এ বিষয়ে আমার পরিবার তাদের অবিভাবকদের জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উপরন্তু তাদের উত্ত্যক্ত, হুমকি-ধামকি বেড়ে যায়। অবশেষে ১৫ জুন একা পেয়ে শফিকুল আমাকে অপহরণের চেষ্টা করে। আমার পড়াশুনা বন্ধ হয়ে গেছে, এমনকি তাদের ভয়ে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। লাবনীর বাবা এলটন আলী বলেন, বিয়ে দেয়া এবং মামলা তুলে নেয়ার জন্য এলাকার একজন প্রভাবশালীর মদদে বখাটেরা ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। পুলিশ তাদের কথার বাইরে যাবে না বলেও তারা দম্ভক্তি দেখাচ্ছে। আবারও তুলে নিয়ে যাবে বা ক্ষতি করবে এমন হুমকি দেয়ায় মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবে তার নানার বাড়িতে রেখে আসতে বাধ্য হয়েছি। প্রভাবশালীর মদদ থাকায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। এ বিষয়ে ভেড়ামারা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, লাবনী ইয়াসমিনের অভিযোগ আমলে নিয়ে বখাটেদের গ্রেপ্তারে কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশী অভিযান অব্যহত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top