অর্থপাচার মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের খালাসের রায় বাতিল করে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে তারেকের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। তবে তাকে নিম্ন আদালতের দেওয়া ৪০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড কমিয়ে ২০ কোটি টাকা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে তারেক রহমানের পক্ষে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া আদালতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়নসহ আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৬ জুন শুনানি শেষে বিষয়টি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষামাণ রাখেন আদালত।
সেদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান কবির শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে খুরশিদ আলম খান শুনানি করেন। এই মামলায় তারেক রহমান পলাতক থাকায় তার পক্ষে কোনো আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ নেই। তবে তার বন্ধু মামুনের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল শুনানি করেন।
২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়ে তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অর্থপাচার মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত।
ওই রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি মামুনকে ৪০ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। পাচার করা ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৬১৩ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেন আদালত।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর আপিল করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি এ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তারেক রহমানকে বিচারিক আদালতে আত্মসমপর্ণের আদেশ দেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলাটি করে দুদক। ২০১১ সালের ৮ আগস্ট এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য নির্মাণ কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের মালিক খাদিজাই সালামের কাছ থেকে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা নেন। সিঙ্গাপুরে এই টাকা লেনদেন হয়।
এরপর মামুন ওই অর্থ সিঙ্গাপুরের ক্যাপিটাল স্ট্রিটের সিটি ব্যাংক এনএতে তার নামের ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। এ টাকার মধ্যে তারেক রহমান ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা খরচ করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।