সকল মেনু

সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ৩ হত্যাকারীর চেহারা

mito-killing_13859হটনিউজ২৪বিডি.কম : বিশিষ্ট উপপুলিশ কমিশনার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন মিতুর সন্দেহভাজন ৩ হত্যাকারীর চেহারা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। শীঘ্রই তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ রবিবার সকালে চট্টগ্রামে বাসার সামনে মাহমুদা খাতুনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে বাবুল আক্তার সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বিশেষ ভূমিকা রাখায় তাকে আতঙ্কিত করতেই এ হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে বিকেলে দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে মাহমুদা খাতুনের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৬ সালে ঝিনাইদহের মাহমুদা খাতুনকে বিয়ে করেন বাবুল আক্তার। মাহির আক্তার ও তাবাসসুম নামে তাদের দুই সন্তান রয়েছে। সবশেষ পদন্নোতি পেয়ে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দেন বাবুল আক্তার।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার সকাল ৭টার দিকে মাহমুদা খাতুন তার ছেলে মাহির আক্তারকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বাসা থেকে বের হন। বাসার পাশে ও আর নিজাম সড়কে আসার পর হঠাৎ মোটরসাইকেলে করে দুর্বৃত্তরা এসে প্রথমে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে গুলি করে পালিয়ে যায়। ছেলে মাহির আক্তার দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মাহমুদার। পরে তার সন্তানের আর্তনাদে ছুটে আসেন প্রতিবেশিরা।

জানা যায়, চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনের সময় বাবুল আক্তার মাদক ও জঙ্গি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ কারণে তাকে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হুমকিও দেয়া হয়। কিছুদিন পূর্বেই পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দেয়ার আগে তার পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চিঠি দেয় জঙ্গিরা। এরই জেরে তার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, যাদেরকে নিয়ে বাবুল আক্তার কাজ করেছে তাদের মধ্যে থেকে কেউ হতে পারে। এ সড়কে বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরা আছে সেগুলো থেকে ফুটেজ সংগ্রহ করে আশা করি সন্ত্রাসীদের সনাক্ত করা সম্ভব।

সিএমপি উপপুরিম কমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ বলেন, মোটরসাইকেলে ৩ জন ছিল। যিনি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল সে হেলমেট পরা ছিল। বাকিরা হেলমেট ছাড়া ছিল। এ ব্যাপারে পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে কাজ করছে। আশা করি খুব শীঘ্রই এ হত্যাকা-ের সংঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করা হবে। অন্যদিকে নিহতের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানাতে দুপুরে চট্টগ্রামে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এসময় তিনি বলেন, দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বাবুল আকতার একজন পরিশ্রমী, সৎ ও মেধাবী পুলিশ অফিসার’ উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। জঙ্গিদের আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। সম্প্রতি তার কাজের মূল্যায়ন হিসেবে তিনি পদোন্নতিও পেয়েছেন। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পুলিশের অব্যাহত অভিযান বিভ্রান্ত করতেই পরিকল্পিত এ হত্যাকা- চালানো হয়েছে। তবে আমরা এ হত্যাকা-ের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরও শিগগির ধরে ফেলবো।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতেই জঙ্গিরা এ হামলা চালিয়েছে। তাদের ধারণা পুলিশের কাউকে হত্যা করলেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে পুলিশের মনোবল ভেঙে যাবে। কিন্তু পুলিশের তো মনোবল ভাঙবে না। কারা এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে এবং কারা জড়িত তদন্ত করে তাদের বের করা হবে। পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী মিতু হত্যায় গোয়েন্দারা এরইমধ্যে তদন্তে নেমে পড়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পুলিশ পরিবারের সদস্যদেরও অবশ্যই নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই দেশে এ ধরনের টার্গেট কিলিং সংগঠিত হচ্ছে বলে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, দেশের যেসব টার্গেট কিলিং হয়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের অনেককেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদের বিরুদ্ধেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top