সকল মেনু

ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সখ্য বাড়াতে চায় আ. লীগ

awamiহটনিউজ২৪বিডি.কম : ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও বিশিষ্ট আলেমদের সঙ্গে সখ্য বাড়াতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবেই এ সখ্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে দলের একটি অংশ কাজ করছে। সরকারবিরোধী মহল ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে চায়। ওই ষড়যন্ত্র যেন সফল হতে না পারে, এ লক্ষ্যেই সখ্য তৈরি করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

দলটির শীর্ষ পর্যায়ের দু’জন নেতা বলেন, ধর্ম নিয়ে লেখালেখি ও নেতিবাচক কথাবার্তার কারণে যেকোনও সময়ে দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও আলেম সমাজ সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে বলে মনে করেন ক্ষমতাসীনরা। তাই ধর্মবিরোধী লেখালেখি, কথাবার্তায় লাগাম টানারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই ‘ব্লগার’দের সমালোচনা করেছেন। তিনি চান না অনাকাঙ্ক্ষিত কোনও ঘটনা এখন ঘটুক, দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হোক। তাই ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সখ্যতা বড়িয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা, তাদের সরকারের বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত করতে সখ্য করার এ কৌশল নেওয়া হয়েছে।

নীতি-নির্ধারণী সূত্রগুলো বলছে, সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করা হলেও এটি কোনওভাবেই ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার অংশ নয়। আওয়ামী লীগ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না, আবার ধর্মের অবমাননাও বরদাশত করে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ধর্ম-সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্ম নিয়ে কটূক্তিকারীদের ব্যাপারে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় তাই সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক ও সখ্য বজায় রেখেই দেশ পরিচালনা করছে। ধর্মভিত্তিক রাজনীতিক দল, সংগঠন ও বিশিষ্ট আলেমদের সঙ্গেই সম্পর্ক আওয়ামী লীগের রয়েছে।

অবশ্য প্রভাবশালী এক মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। অনেক কষ্ট করে স্থিতিশীলতা ফেরাতে সফল হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। অযাচিত কোনও ঘটনায় সেই স্থিতিশীলতা নষ্ট হোক তা চায় না সরকার। তিনি বলেন, সরকারবিরোধী শক্তিগুলো আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায়। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোকে উস্কে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামাতে ও ব্যবহার করতে চায়। এ ধরনের খবর আমাদের কাছে রয়েছে। এমন কোনও ষড়যন্ত্র যেন আগামীতে সফল হতে না পারে, সে ব্যাপারে সরকার সতর্ক। তিনি বলেন, বিষয়টিকে সখ্য বলে প্রচার করলে হবে না।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নিজেও দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি এমন একটি নির্দেশ দিয়েছেন। তাই দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফসহ কেন্দ্রীয় নেতারা রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে ধমভিত্তিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও আলেমদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের একাত্ম হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বক্তব্য রাখছেন। শুধু তাই নয়, মাহবুবউল আলম হানিফ চলতি সপ্তাহে কয়েকটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বলেছেন, বিএনপির বিরুদ্ধে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোকে আন্দোলনে নামতে।

ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার কোনও পদক্ষেপ রয়েছে কি না—জানতে চাইলে মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, সবার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে কাজ করাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি। আমরা সে কাজটি করছি।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ধর্ম নিয়ে কটূক্তিকারীদের তীব্র সমালোচনা করে আলেম-ওলামা সমাজ ও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সাধুবাদ কুড়িয়েছেন। এটি সময় ও রাজনৈতিক প্রয়োজনে করা হয়েছে দাবি করেন অনেক কেন্দ্রীয় নেতা। তাদের মতে, সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। এখানে যার যার ধর্ম পালন সে সে করবে। কিন্তু একে অন্যের ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে সম্প্রীতি বিনষ্ট করার গভীর চক্রান্ত চলছে। এটি কোনওভাবেই চলতে দেওয়া যায় না। তাই সম্প্রীতি ধরে রাখা যায় কিভাবে, সরকার ও আওয়ামী লীগ সে চেষ্টাই করে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন বলেন, আওয়ামী লীগ চায় ধর্মভিত্তিক দলগুলো ধর্মের ভাবমূর্তি রক্ষায় এগিয়ে আসুক। একটি মহল ইসলামের ভাবমূর্তি-মর্যাদা ক্ষুণ্ন করছে, কিন্তু ধর্মভিত্তিক দলগুলো নিশ্চুপ রয়েছে। আওয়ামী লীগ চায় শান্তির ধর্ম ইসলামের মর্যাদা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই কাজ করুক। এর মধ্যে কাছে টানা, সখ্য বাড়ানো এগুলো দেখা ঠিক হবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top