নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ১২ মে : রমজান মাসের আগে থেকেই পণ্যের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। কিছু পণ্যের দাম ভোক্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সংশ্লিষ্টদের মতে, এর নেপথ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট।
জানা গেছে, গত কয়েক বছর যাবৎ সরকার রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কঠোর অবস্থানে ছিল। এ কারণে ব্যবসায়ীরা কৌশল পরিবর্তন করেছেন। তারা আগেই সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে রমজানে স্থিতিশীল রাখার পরিকল্পনা করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, এ ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাজার মনিটরিংয়ে আরো কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার। শিগগিরই কড়াকড়ি হচ্ছে সরকারের বাজার মনিটরিং অভিযান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৬তম বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রমজানে ছোলা, পেঁয়াজ, চিনি ও ভোজ্যতেলের মতো বেশি ব্যবহৃত পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এই বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে বেড়ে যায় পণ্যের দাম। তবে রমজানের আগেই বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্য আমদানি এবং চাহিদার চেয়ে মজুদ ভালো থাকায় এসব পণ্যের ঘাটতি কিংবা দাম বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এবার রমজানে দেড় হাজার টন চিনি, সয়াবিন তেল ৫০০ টন, মসুর ডাল ১ হাজার ১০০ টন, ছোলা দেড় হাজার টন বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। ডিলারের পাশাপাশি সারা দেশে ১৭৪টি ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করবে সংস্থাটি।
এদিক রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজান মাস যত কাছে আসছে, নিত্যপণ্য বা যেসব দ্রব্যের চাহিদা বিশেষ সময়ে বাড়ে, সেগুলোর দাম বাড়তে শুরু করেছে। ছোলা, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, মরিচ, বেগুনের দাম বাড়তির দিকে। এরই মধ্যে কোনো কোনো পণ্য কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকার বেশি বেড়েছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে ভোজ্যতেলের দাম।
গত ২৪ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা কমিটির বৈঠকে ব্যবসায়ীরা রমজানে পণ্য সরবরাহ ঠিক রেখে দাম না বাড়ানোর যে অঙ্গীকার করেন, তার মিল বাজারে দেখা যায় না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে স্বীকার করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারে এ পরিস্থিতি। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক ও যেসব পণ্য এখনো আটক আছে সেগুলো দ্রুত ছাড় হয়ে গেলে রমজানে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকার প্রত্যাশা পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের।
জাতীয় সংসদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা মন্ত্রণালয় থেকে খোঁজ নিয়ে দেখেছি যে, এবার যথেষ্ট পরিমাণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুত রয়েছে। তাই দাম বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। তা ছাড়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি টিম প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করবে।’
এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বিকেলে কথা হয় কারওয়ান বাজারের খান অ্যান্ড সন্স বণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী গৌতম বাবুর সঙ্গে। রমজান সামনে রেখে দাম বাড়ানোর অভিযোগকে অস্বীকার করে তিনি বলেন, কোনো পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয়, কারণ পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে স্থিতিশীল থাকলে রামজানে আর দাম বাড়বে না।
পণ্যের দাম ভোক্তার নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে কাউকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তবে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান থাকবে, যেন রমজানে কোনো কারণ ছাড়া দাম না বাড়ানো হয়।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।