সকল মেনু

বিএনপি-জামায়াত গুপ্তহত্যায় নেমেছে : প্রধানমন্ত্রী

3010527b-072e-4f48-a7d9-a1693e4e83fe গৌরাঙ্গ লাল দাস,গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার উৎখাত করতে না পেরে বিএনপি জামায়াত এখন গুপ্ত হত্যা করছে। মানুষ পুড়িয়ে মারা ও ধ্বংস ছাড়া তারা কিছুই করতে পারে না। বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে গীর্জা, প্যাগোডা, মন্দির মসজিদে বোমা হামলা হয়েছে। তারা দেশে উন্নয়ন চায় না, এটাই বাস্তবতা। জাতির পিতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, আমরাই দেশে উন্নয়ন করেছি-করে যাচ্ছি।
আজ শনিবার গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়ায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সুধী সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সমাবেশের আগে তিনি বিশ্ব মানের অত্যাধুনিক এ হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। পরে মোনাজাতে অংশ নেন।
একই স্থানে প্রধানমন্ত্রী ফিতা টেনে মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত চাঁপাইল ব্রিজ, টুঙ্গিপাড়া প্রধান ডাকঘর, গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা সংস্থার নব নির্মিত ভবন,গোপালগঞ্জ জেলা শিশু একাডেমি কমপ্লেক্সের উদ্বোধন এবং শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ, গোপালগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, গোপালগঞ্জ ১০ কিলো ওয়াট এফএম রেডিও ষ্টেশন, গোপালগঞ্জ-কাশিয়ানী-গোবরা নতুন রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প, টুঙ্গিপাড়া, মুকসুদপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য গোপালগঞ্জ সদর আসনের এমপি শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাছিম, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, দুর্নীতি করে ভাগ্য গড়তে আসিনি। পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের এ কলংক দেয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিলো। তাই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছি। বিএনপি-জামায়াত পদ্মাসেতু নিয়ে যদি ষড়যন্ত্র না করতো তবে এ সেতুর কাজ এতো দিনে আরও এগিয়ে যেতো। আমি জাতির পিতার কন্যা। রাজনীতি করছি নিজের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য নয়, মানুষের কল্যাণে। বাকিটা জীবন সেটাই করে যাবো। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দেশের সুষম উন্নয়ন করা।
শেখ হাসিনা বলেন, এই দেশের মানুষের জন্য আমার বাবা-মা-ভাই-বোন সবাই জীবন দিয়ে গেছেন। আমি সব হারিয়েছি, আমার তো আর হারাবার কিছু নেই। চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। এখন এদেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।
‘বাংলাদেশের উন্নয়নকে অনেকে বিস্ময় বলেন, আমি বলি এটি বিস্ময় নয়, বিশ্বাস। দেশের জনগণের প্রতি আমার বিশ্বাস রয়েছে। আমার প্রতিও দেশের মানুষের আঘাত বিশ্বাস বয়েছে। এই বিশ্বাস আছে বলেই দেশের উন্নতি করতে পারছি। আন্তরিকতার ত্যাগের মহিমা নিয়ে নিয়ত ভালো রেখে কাজ করছি বলেই যেখানেই হাত দিচ্ছি, সেখানেই সাফল্য অর্জন করছি’।
স্বাস্থ্যখাতে তার সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখাতে উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আরও তিনটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ করছি। এছাড়া প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে। গণমুখী স্বাস্থ্য নীতি দিয়েছিলাম, সে অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি। এখন এমন সময় এসেছে যেখানে নার্সরাও পিএইচডি করতে পারবেন, আমরা সে সুযোগ করে দিয়েছি।
‘বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায়-জেলায় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। উচ্চ শিক্ষাপর্যন্ত মেধাবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি ১ কোটি ৭০ লাখ ছাত্র-ছাত্রীকে। আজকে বই-খাতা কিনতে হয় না, আমরা সবই দিচ্ছি। দেশে এখন ৩ কোটি ৮৪ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য নিরাপত্তা হয়েছে। মানুষের চাহিদা বদলে গেছে কারণ পেটে খাবার আছে। এখন মানুষ বিদ্যুৎ চায়, স্কুল চায়- আর আমরা তাই করছি’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় গোপালগঞ্জবাসী বৈরিতার শিকার ছিল। অবহেলিত ছিল। সেটি হয়েছিল একটি বিশেষ কারণে। সে সময় বাজেটে টাকা দেওয়া হতো, তবে কাজ ও উন্নয়ন হতো না। এক সময় এখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ও সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
নতুন প্রতিষ্ঠিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, আশা করি এই চিকিৎসাকেন্দ্র মানবসেবায় অবদান রাখবে। আমি আরেক দিন এসে এখানে চোখ দেখিয়ে যাবো।
এ দিন সকাল ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পৌছে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে বঙ্গবন্ধু কন্যা পবিত্র ফাতেহাপাঠ ও বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া বিশেষ মোনাজাত করবেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক পথে গোপালগঞ্জ থেকে দুপুর সাড়ে ১২টায় কোটালীপাড়ায় এসে পৌঁছান। এ সময় রাস্তার দু’পাশে দাড়িয়ে হাজার হাজার নারী-পুরুষ হাত নেড়ে তাদের প্রিয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
কোটালীপাড়া পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাপার্ডে জোহরের নামাজ ও মধ্যাহ্ন ভোজ শেষে দুপুর আড়াইটায় শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে একটি মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড সুভাষ জয়ধরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি,আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠা মন্ডলীর সদস্য ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, কর্নেল (অব)ফারুক খান এমপি,কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ,আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এম কামাল,ঊম্মে রাজিয়া কাজল এমপি,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান,উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার,পৌর মেয়র এইচ এম অহিদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
উপজেলার আওয়ামী লীগের আয়োজনে এই মতবিনিময় সভা বিশাল সভায় পরিনত হয়। বৈশাখের প্রচন্ড গরমকে উপেক্ষা করে হাজার হাজার নারী-পুরুষ তাদের প্রিয় নেত্রীকে দেখার জন্য শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে ছুটে আসেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কোটালীপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করবেন। পরে তিনি সেখানে কোটালীপাড়ার ১শ’ টি প্রাথমিক ও ১৪ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ এবং মাল্টি মিডিয়া প্রজেক্টর বিতরন করেন।
# ৩০.০৪.২০১৬

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top