সকল মেনু

মেলা শুরু, অপেক্ষা বলীখেলার

৫০নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২৪ এপ্রিল : নগরীর কোতোয়ালী মোড় থেকে আন্দরকিল্লা মোড়।  ওদিকে লালদীঘি পাড় থেকে সিনেমা প্যালেস মোড় পর্যন্ত।  সড়কের এই পুরো জায়গাটা এখন কেবল দোকানিদের দখলে।

হাতপাখা থেকে শীতল পাটি-মাটির কলস, চুড়ি-ফিতা থেকে হাতের কাঁকন-নাকের নোলক, মাটির ব্যাংক থেকে বেতের তৈজসপত্র-খাট, সবিই পাওয়া যাচ্ছে প্রায় দুই কিলোমিটারের এই জায়গাজুড়েই।

আনুষ্ঠানিকভাবে রোববার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার ১০৭ তম আসর। তবে শনিবার থেকেই বিভিন্ন পসরা নিয়ে বসে গেছেন দোকানীরা। জমে উঠেছে বেচাকেনাও। রোববার থেকে বাড়বে এই মেলার জায়গার দৈর্ঘ্যও।

মাটির তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্র নিয়ে নিয়ে ঢাকার শাহবাগ থেকে এসেছেন বছর পঞ্চাশের হারুনুর রশিদ।  বসেছেন পূবালী ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে।  গত ৩৫ বছর ধরে জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা চলাকালীন এই জায়গাটিই তার নিয়মিত ঠিকানা।

হারুনুর রশিদ বলেন, ‘৩৫ বছর ধরে জব্বারের বলীখেলা আর বৈশাখী মেলা উপলক্ষে এখানে আসছি।বেশ ভালোই ব্যবসা হয়।তাই আগেভাগে চলে আসলাম। ’

মেলা আয়োজক কমিটি ও স্থানীয় কেউ চাঁদা না নিলেও পুলিশ এসে চা-পানির জন্য টাকা চান বলে দাবি করেন হারুনুর রশিদ।

ঢাকার বিক্রমপুর থেকে এসেছেন শরিফুল ইসলাম।তিনিও বিক্রি করছেন মাটির বিভিন্ন তৈজসপত্র।  তার মধ্যে মাটির ব্যাংক আর বিভিন্ন খেলনা জিনিসরই আধিক্য বেশি।

শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বেশ কয়েকবছর ধরে এখানে আসতেছি।  গত বছর বৃষ্টির কারণে তেমন লাভ করতে পারিনি।  ৪৫ হাজার টাকার জিনিসপত্র এনে মাত্র ৫ হাজার টাকা লাভ করতে পেরেছি। ’

শরিফুলের প্রার্থনা এবার অন্তত বৃষ্টিটা না পড়ুক।

হাজারী লেনের সামনে বেতের তৈরি নানা জিনিসপত্রের পসরা নিয়ে বসেছেন হামিদ উল্লাহ।  তিনি এসেছেন দেশের একেবারে উত্তর পাশ থেকে।  পঞ্চগড় থেকে আসা এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘শুনেছি এই বলীখেলা ও মেলা এই অঞ্চলের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী আয়োজন।এতে ভালো ব্যবসাও হয়।  তাই প্রথমবারের মতো চলে আসলাম।দেখি কী হয়।’

এছাড়া শনিবার বিকেলে মেলাস্থল ঘুরে আরও বিভিন্ন রকমের জিনিসপত্রের বিক্রি করতে দেখা গেছে দোকানিদের।  নানা জাতের ফুল গাছ, কাঠের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের খাট, পুতুল, নকশি কাঁথা, প্লাস্টিক সামগ্রী বেশি দেখা গেছে।

দর্শনার্থীরাও আসতে শুরু করেছেন শনিবার থেকে।তবে তাদের অধিকাংশই কেনার চেয়ে জিনিসপত্র পছন্দ করে রাখছেন।

মেলায় তিন সন্তান নিয়ে ঘুরতে এসেছেন গৃহীনি হালিমা বেগম।তিনি বলেন, ‘জিনিসপত্র দেখে যাচ্ছি।  রোববার অথবা সোমবার কিনবো।  আর বলীখেলা দেখারও অনেক বেশি আগ্রহ আছে।  দেখি দেখতে পারি কিনা।’

বৈশাখী মেলা দাঁড়িয়ে গেছে। তবে মেলার মূল আকর্ষণ বলী খেলা দেখতে আরও বেশ কিছু ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে উৎসুক মানুষদের।  ২৫ এপ্রিল বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে লালদীঘি ময়দানে শুরু হবে বলীখেলা।

এদিকে শনিবার সকালে নগরীর প্রেসক্লাবে বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজক কমিটির সভাপতি জহরলাল হাজারী বলেন, ‘ইতিমধ্যেই সড়কের এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বৈশাখী মেলার আসর বসে গেছে। রোববার থেকে পুরোদমে জমে উঠবে মেলা। তবে মূল আকর্ষণ বলী খেলা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে ২৫ এপ্রিল বিকেল সাড়ে তিনটায়।খেলায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে ১৫০ বলী নিবন্ধন করেছেন। এছাড়া যে কেউ চাইলেই বলী খেলায় অংশ নিতে পারবেন। আমরা আশা করছি ২০০ জন বলী এতে অংশ নেবেন। দেশের ঐতিহ্যবাহী এই লোকজ উৎসব ভালোভাবে সম্পন্ন করতে আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি। ’
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top