সকল মেনু

নারী উন্নয়নের অদম্য কর্মী মুন্নি

৩৭.নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ৯ মার্চ : এক হাতে সামাল দিতে হয় সংসার। স্বামী ও সন্তানের পাশাপাশি দেখভাল করেন শ্বশুর-শাশুড়ির। এরপর ছোটেন চাকরিতে।

মূলত চাকরিটা নামমাত্র হলেও তার লক্ষ্য পিছিয়ে পড়া, অধিকারহীন, অসচেতন নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, স্বাস্থ্য সচেতন করে তোলা ও নারী উন্নয়ন।

আর এরই মাধ্যমে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার নারী উন্নয়ন কর্মী নাইমা জান্নাত মুন্নি নিজেকে করে তুলেছেন সবার থেকে আলাদা। হয়ে উঠেছেন উপজেলার নারীদের আপনজন।

সেইসঙ্গে সংসার সামলেও প্রান্তিক নারীদের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে নিজেকে উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন মুন্নি।

জানা যায়, নিত্যদিনই সকাল হলেই গ্রামের আর দশটা গৃহবধূর মতো ঘরের কাজ শুরু করেন মুন্নি। সন্তানকে দেখাশুনাসহ পরিবার-পরিজনদের খবার তৈরি করেন। এরপর নেমে পড়েন তার কাজে।

একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় নামমাত্র বেতনে কাজ করছেন তিনি। প্রতিদিন কাজের জন্য তাকে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটতে হয়। বেশ আগ্রহ নিয়েই মুন্নি কাজ করে চলেছেন নারী স্বাস্থ্য ও অধিকার নিয়ে। পাশে দাঁড়াচ্ছেন অসহায় ও নির্যাতিত নারীদের। বাল্যবিয়ে ও নারীর প্রতি সহিংসতারোধে গড়ে তুলছেন সচেতনতা।

পাথরঘাটা উপজেলায় ইউনিয়নভিত্তিক কাজ করছেন মুন্নি। প্রতি বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রসূতি নারীর সংখ্যা সংগ্রহ করা এবং তাদের শরীরের যত্ন নিতে পরামর্শ দেন তিনি। কখনো কখনো প্রয়োজনে অসহায় প্রসূতি নারীদের নিজেই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যান।

এর বাইরেও প্রসূতি নারীদের গর্ভকালীন চিকিৎসা ও সেবার পরামর্শ দেন তিনি। নারীদের নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে জানান স্বাস্থ্য ও নারী অধিকারের কথা, দেন পরামর্শ।

কাজের অংশ হিসেবে মুন্নি মাতৃমৃত্যু ও জন্ম নিবন্ধন বিষয়ে সচেতন করেন। মাতৃমৃত্যু রোধে ও জন্ম নিবন্ধনের গুরুত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষদের বোঝান তিনি।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নারীপক্ষের সহযোগিতায় স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা সংকল্প ট্রাস্ট্রের বাস্তবায়নে বরগুনার পাথরঘাটায় দীর্ঘদিন ধরে নারী স্বাস্থ্য ও অধিকার সংক্রান্ত অ্যাডভোকেসি পার্টনারিশিপ প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পে নাইমা জান্নাত মুন্নি একজন অ্যাডভোকেসি অর্গানাইজার হিসেবে কাজ করছেন।

তিনি বলেন, কাজের প্রতি আন্তরিকতা না থাকলে কাজ করতে ভালো লাগে না। আর ইচ্ছাশক্তি ও মনোবল নিয়ে কাজ করলে সফল হওয়া সম্ভব।

তিনি বলেন, আমি কত টাকা বেতন পাই সেটি বড় নয়, আমি সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি ও তাদের কিছুটা হলেও উপকারে আসতে পারি; এটিই আমার পরম পাওয়া।

নাইমা জান্নাত মুন্নির শাশুড়ি রিজিয়া বেগম এমন পুত্রবধূকে নিয়ে গর্বিত। তিনি বলেন, আমি মুন্নির প্রতি সন্তুষ্ট। সে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কিছুটা হলেও উপকার করছে এটি আমাদের গর্ব।

হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top