সকল মেনু

উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী জয়

bd1453896213ক্রীড়া ডেস্ক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২৭ জানুয়ারী : চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিং নিতে কোনো ভুল করেননি বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। দিনের শেষ ভাগে স্পিনাররা উইকেট থেকে সাহায্য পাবে সে চিন্তা করেই আগে ব্যাটিং নেয়া বাংলাদেশের।

টসের সময় বলেছিলেন ২৫০ রান হলেই হবে! দলের উপর কতটা আত্মবিশ্বাস মিরাজের। ৩০০ বলের খেলায় ২৫০ টার্গেট হলেই চলবে! এমন চিন্তা করাটাও অনেকের জন্যে কঠিন, অসম্ভব। কিন্তু সে কাজটাই করে দেখালো মিরাজের দল।

২৫০ এর থেকেও ১০ রানের কম পুঁজি নিয়ে বাংলাদেশ ১১তম যুব বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৩ রানে হারিয়েছে। শিরোপা প্রত্যাশী বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি প্রোটিয়ারা। বাংলাদেশের করা ২৪০ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯৭ রানের বেশি করতে পারেনি।

এ জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ হল। ২১ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ১৪টি। দক্ষিণ আফ্রিকার ৭টি।

শিরোপা পাওয়ার প্রথম মিশনে ব্যাটিংয়ে নামেন সাইফ হাসান ও পিনাক ঘোষ। ব্যাটিংয়ের শুরুতে বাংলাদেশ ছিল ‘অতিরিক্ত সাবধানী’। স্কোরবোর্ডে প্রথম রান তুলতে অপেক্ষা করতে হয় ১৯ বল পর্যন্ত। লুক ফিনল্যান্ডারের করা ইনিংসের ১৯তম বলে লং অফে ঠেলে দিয়ে এক রান নেন পিনাক। বাহাতি এ ওপেনারের ব্যাট থেকে ৫.২ ওভারে আসে প্রথম বাউন্ডারি। ডাউন দ্যা উইকেটে এসে বাউন্ডারি খরা কাটানোর পরের বলে সুপই করে আরেকটি বাউন্ডারি হাঁকান পিনাক।

উইকেটে পিনাক যতটা স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন ঠিক ততটাই উল্টো ছিলেন সাইফউদ্দিন। ১২টি বল ডট খেলার পর এক রান নেন সাইফ। বেশি বল খেলে ঘাবড়ে যাওয়া সাইফ ইনিংসের দশম ওভারে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। উইয়ান মুল্ডারের বলে উইকেট রক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৬ রানে ফিরেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান।

তাঁর বিদায়ের পর পিনাক ঘোষ ও জয়রাজ শেখ ঈমন ৪৪ রান যোগ করেন। তাদের দুজনের ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড সচল থাকে। দুজন বেশ সাবলীলভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণ সামলে নেন। উইকেটের চারপাশে শট খেলতেও কোনো সমস্যা হচ্ছিল না। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রানিংয়ের যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। যার খেসারত দিতে হয়েছে পিনাক ঘোষকে। ভুলবুঝাবুঝিতে পিনাক ঘোষ হাফসেঞ্চুরি থেকে ৭ রান দূরে থেকে আউট হন। ৫১ বলে ৪ ছয় ও ২ ছক্কায় পিনাক ইনিংসটি সাজান। প্রোটিয়া পেসার মুল্ডারকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে পুল করে ২টি ছক্কা হাঁকান পিনাক।

তৃতীয় উইকেটে জয়রাজ শেখ ও নাজমুল হোসেন শান্ত জুটি বাঁধেন। তবে বেশিক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি তাদের জুটি। জয়রাজ শেখ ৪৬ রানে হোয়াইটহেডের বলে আউট হন। তৃতীয় উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরেন প্রোটিয়ারা। মিরাজ ২৩, জাকির হাসান ১৯ ও সাঈদ সরকার ৪ রানে ফিরে যান অল্প সময়ের মধ্যে।

এক প্রান্ত ধরে খেলে যান অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করা নাজমুল হোসেন শান্ত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে নিজের নামের পাশে ১ হাজার ৫৬১ রান যোগ করা শান্ত প্রথম ম্যাচে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন। ৮২ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ইনিংসটি সাজান শান্ত। শেষ দিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ১৭ রানে বাংলাদেশ ২৪০ রানের পুঁজি পায়।

বোলিংয়ের শুরুতেও বাংলাদেশ ছিল দূর্দান্ত। প্রথম ওভারে বোলিংয়ে আসেন অধিনায়ক মিরাজ। প্রথম ওভারটি মেডেন নেওয়ার পর দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পেয়ে যান এ অফস্পিনার। কাইল ভেরেনে মিরাজের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন। দলীয় ২৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। মুল্ডারকে সরাসরি বোল্ড করেন পেস অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন। ডানহাতি এ পেসারের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন প্রোটিয়া অধিনায়ক টনি জর্জি।

পেস আক্রমণের পর সফরকারীদের শিবিরে জোড়া আঘাত করেন স্পিনার সাঈদ সরকার। রিভালদো মুনস্যামি (৫) ও ডায়ান গালিয়েমকে (২২) সাজঘরে ফেরত পাঠান সাঈদ। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে রক্ষণাত্মক হয়ে খেলতে থাকেন ওপেনার লিয়াম স্মিথ। তিনিও ভুল পথে পা বাড়িয়েছিলেন। ৩৩তম ওভারের প্রথম বলে ব্যক্তিগত ৫৬ রানে স্পিনার সঞ্জিতের বলে ক্যাচ উড়িয়ে দিয়েছেন স্মিথ। সাঈদ সরকার ক্যাচটি মিস করে স্মিথকে দ্বিতীয় জীবন দান করেন।

দ্বিতীয় জীবন পেয়ে ফারহান সায়ানভালাকে নিয়ে ৪৮ রানের জুটি গড়ে বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। নিজেদের দিনে বাংলাদেশ কতটা ভয়ংকর তা প্রমাণ দিতে দেরি করেননি জুনিয়র টাইগাররা। বাহাতি স্পিনার সালেহ আহমেদ শাওন গাজীর স্পিনে ফারহান সায়ানভালা (১৭) ও স্মিথ (১০০) রানে আউট হন। সেখানেই শেষ প্রোটিয়াদের প্রতিরোধ। শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে আউট করেন শফিউদ্দিন ও মেহেদি হাসান মিরাজ।

বাংলাদেশের সেরা মিরাজ ও শফিউদ্দিন। ৩টি করে উইকেট নেন দুই টাইগার। ২টি করে উইকেট নেন সাঈদ সরকার ও সালেহ আহমেদ শাওন।

দুই দল বৃহস্পতিবার চলে যাচ্ছে কক্সবাজার। ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার নামিবিয়া।

হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top