সকল মেনু

নেতাজি’র গোপন নথি প্রকাশ করলেন নরেন্দ্র মোদী

1453579517আন্তর্জাতিক ডেস্ক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২৪ জানুয়ারী : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১১৯তম জন্মদিনে তাঁর সম্পর্কিত ১০০টি গোপন নথি প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত শনিবার ভারতের সরকারি ওয়েবসাইটে নথিগুলোর ডিজিটাল কপি ছাড়া হয়। দেশটির রাষ্ট্রীয় মহাফেজখানায় নথিগুলো এতদিন গোপনে রাখা হয়েছিলো। এর আগে গেল বছরের সেপ্টেম্বরে নেতাজি নিখোঁজ হওয়ার সত্তর বছর পূর্তিতে তাঁর সংক্রান্ত ৬৪টি  গোপন নথি প্রকাশ করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।

ভারতের এনডিটিভি’র এক খবরে বলা হয়েছে, গত অক্টোবরে বসু পরিবারের সদস্য ও গবেষকদের সঙ্গে এক সাক্ষাতে নেতাজি সংক্রান্ত গোপন নথিগুলো প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিলেন মোদী। গতকাল সকালে টুইটে মোদী বলেন, আজ সব ভারতবাসীর জন্য একটি বিশেষ দিন। আজ থেকে নেতাজির নথি প্রকাশ হওয়া শুরু হলো। এই উদ্দেশ্যে জাতীয় মহাফেজখানায় যাচ্ছি। দিল্লিতে ভারতের জাতীয় মহাফেজখানার ওই অনুষ্ঠানে নেতাজির পরিবারের ১২ জন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন। এখন থেকে প্রতিমাসে সরকারি ওয়েবসাইটে নেতাজি সংক্রান্ত ২৫টি গোপন নথি প্রকাশ করার পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটির জাতীয় মহাফেজখানা। এদিকে এই নথি প্রকাশের পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নেতাজিকে জাতীয় নেতা উপাধি দেয়ার আহবান জানিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদীর নথি প্রকাশের পর তিনি এই আহবান জানান বলে এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে নেতাজির শেষদিনের সত্যতা তথ্য-প্রমাণের সঙ্গে সামনে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। মমতা বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে সত্য তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব। তিনি আরো বলেছেন, নেতাজি রাশিয়াতেই ছিলেন। রুশ সরকার ফাইল প্রকাশ করলেই অনেক তথ্য সামনে আসবে। রাশিয়া থেকে ফাইল আনা হোক।

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি ফাইল থেকে জানা গেছে, নেতাজির মেয়ে অনিতাকে স্বাধীন ভারতের সরকার পেনশন দেয়া শুরু করেছিলো। স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবার হিসেবে বছরে ৬০০০ টাকা করে পেনশন দেয়া হতো অনিতাকে। তবে ১৯৬৫ সালে নেতাজির কন্যার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর সেই পেনশন বন্ধ হয়ে যায়। প্রথমে এই পেনশন নেতাজির স্ত্রীকেই দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ভারত সরকার। কিন্তু তিনি পেনশন নিতে অস্বীকার করায় মেয়ে অনিতার নামে পেনশন দেয়া শুরু হয়। আরও অনেক নথি রয়েছে সদ্য প্রকাশিত ১০০টি ফাইলে। সে সব তথ্যও একে একে সামনে আসতে চলেছে। কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও মহাত্মা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বসু ১৯৪৫ সালে ফরমোসাতে (বর্তমান তাইওয়ান) বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন। এখনো পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু রহস্যাবৃত রয়েছে। এসব নথির মধ্যে অন্যতম হলো ১৯৬২ সালের ১৩ মে লেখা তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর লেখা একটি চিঠি। নেতাজির পরিবারের সদস্য সুরেশ বসুকে লেখা সেই চিঠিতে নেহরু জানান, নেতাজির মৃত্যু নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই। যা আছে তা পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ। সেসব তথ্যপ্রমাণ এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই নেতাজি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলো বলে তাঁর বিশ্বাস। তবে নেতাজির এক নাতি এ বিষয়ে বলেন, ওই বিমান দুর্ঘটনার তত্ত্ব আমি বিশ্বাস করি না। আজ আমরা হয়তো সব উত্তর পাবো না, কিন্তু কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। তবে জার্মানিতে বসবাসকারী নেতাজির মেয়ে অনিতা বসু জানিয়েছেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি বিশ্বাস করেন তাঁর বাবা বিমান দুর্ঘটনাতেই মারা গেছেন।

হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top