নিজস্ব প্রতিবেদক :  বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর দরকার ক্ষমতা, সেজন্য তিনি ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সবচেয়ে বড় পথের কাঁটা মনে করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে। তাই তাকে রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে তাকে সরিয়ে দেয়ার জন্য চক্রান্ত চলছে।

জাতীয় সংসদে বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসনকে জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রিজভী আহমেদ এ সব কথা বলেন।

বিবৃতিতে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সবসময় একটাই যু্‌ক্িত, সেটি হলো বিরোধী দল শূন্য দেশ। একদলীয় একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা। এই আকাঙক্ষা বাস্তবায়িত করতেই তিনি অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বসে আছেন। তিনি তো জনগণের, দেশ-বিদেশের বিশিষ্টজনদের, সুশীল সমাজ কারো যুক্তিই মানেন না। তার ক্ষমতাক্ষুধা এতো তীব্র তিনি জনগণের মনের ভাষা বুঝতে অক্ষম। কারণ তিনি মনে করেন, দেশের মালিক তো তিনি নিজেই-জনগণ নয়।

তিনি বলেন, সেজন্য ভোটারবিহীন একটি সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়ে উচ্ছিষ্টভোগী লোকদের নিয়ে দুঃশাসন চালানোর অকাট্য যুক্তিটাই তিনি বিশ্বাস করেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত যুক্তিটা তিনি বা তার দল কখনোই গ্রহণ করতে পারেনি। সেজন্যই বারবার বাকশালের পূণরাবৃত্তি।

রিজভী আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সবচেয়ে বড় পথের কাঁটা মনে করেন বেগম খালেদা জিয়াকে। সেজন্য রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে তাকে সরিয়ে দেয়ার জন্য ধারাবাহিক চক্রান্তের অংশ হিসেবে তাকে গ্রেফতারের আরেকটি চক্রান্তের নাটক মঞ্চস্থ করার আয়োজন চলছে।

তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দেশব্যাপী ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনে নেতাকর্মীদেরকে অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন করা, ঢালাও মিথ্যা মামলা, নির্বিচারে গ্রেফতার ও বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করে রক্তের স্বাদ নিতে নিতে এখন আপনারা জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রধান প্রতিনিধি বেগম খালেদা জিয়াকে টার্গেট করেছেন। এটি আপনাদের শেষ মরণছোবল।

রিজভী আহমেদ সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগুন নিয়ে খেলবেন না, মহাদুর্যোগ ঘনিয়ে তোলবার চেষ্টা করবেন না, দেশের আন্দোলনরত সকল গণতন্ত্রকামী জাতীয়তাবাদী শক্তি জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার পাশে থাকবে।

তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ধিক্কার জানিয়ে বলেন, আপনারা এখন রাষ্ট্রের সংস্থা নন। সরকার আপনাদেরকে আওয়ামী আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বানিয়ে ছেড়েছে। আপনাদের দিয়ে তারা বিরোধী দলের কর্মীদের রক্তে সারাদেশ ভিজিয়ে তুলেছে। আপনারা শতকরা ৫ ভাগের জনসমর্থিত সরকারের নির্দেশ মানছেন। আপনাদেরকে দিয়ে বিরোধী দলের ওপর যে অমানবিক নারকীয় আক্রমণ করানো হচ্ছে তাতে জনগণের কাছে আপনারা পরিণত হয়েছেন ভয়াল আতঙ্কের প্রতীক হিসেবে। আপনারা যদি বিরোধী দলের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়ণ বন্ধ না করেন তাহলে আপনাদের পরিণতি সুখকর হবে না।

বিএনপির এই নেতা চলমান অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি হরতালে বুধবার গ্রেফতারকৃত বিএনপি নেতা ও স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোঃ রহমত উল্লাহ এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামালসহ সারাদেশ থেকে ৭৫০ জনের অধিক নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।