সকল মেনু

চিরিরবন্দরে আউশ মৌসুমে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ড্রাম সিডার

চিরিরবন্দর(দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে আউশ মৌসুমে ড্রাম সিডার পদ্ধতিতে ধান বপন করছেন কৃষকেরা। এই পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি না করে সরাসরি খেতে ধান বপনের মাধ্যমে চাষাবাদ হয়ে থাকে। সময়, খরচ ও শ্রম কম দিয়ে সনাতন পদ্ধতির চেয়ে বেশি ফসল পাওয়ায় চিরিরবন্দর কৃষকদের মধ্যে ড্রাম সিডার পদ্ধতিতে আউশ নেরিকা ধান চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দুপাশে প্লাস্টিকের দুটি চাকার ভেতর একটি লোহারর মধ্যে সারিবদ্ধভাবে নির্দিষ্ট দূরত্বে ছোট আকৃতির ছয়টি প্লাস্টিকের ড্রাম থাকে। প্রতিটি ড্রামে থাকে কয়েকটি করে ছিদ্র। প্লাস্টিকের চাকার সঙ্গে লাগানো থাকে একটি হাতল, যেটি ধরে একজন কৃষক সহজেই যন্ত্রটি টানতে পারেন। ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা হলেই যন্ত্রটি বানানো যায়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ড্রাম সিডারের মাধ্যমে একজন কৃষক এক দিনে দুই একর জমিতে ধান বপন করতে পারেন। কিন্তু সনাতন পদ্ধতিতে এই ধানের চারা রোপণ করতে অন্তত ২৫ জন শ্রমিক লাগত। তাই কৃষক ঘরে রসুন তুলে বোরো ধানের সাথেই যেন নেরিকা ধান ঘরে তুলতে পারে সেজন্যই ড্রাম সিডার ব্যবহার দিনে দিনে কৃষকেরা এর প্রতি ঝুঁকছেন।চিরিরবন্দর নশরতপুর ইউনিয়নের ডাক্টারপাড়া গ্রামের কৃষক শহীদ ইসলাম, রফিকুল ইসলাম ও নুরজামান। তাঁরা প্রত্যেকে এক একর করে জমির রসুন ঘরে তুলে বর্তমানে বোরো আাবাদের সাথে আউশ মৌসুমে খুব তারাতাড়ি যেন ধান বপন করতে পারে তাই এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করেছেন। তাঁদের দেখে এখন উপজেলার অনেক কৃষকই এই প্রযুক্তি ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ওই তিনজন কৃষক জানান, ড্রাম সিডার দিয়ে ধান চাষ করায় তাঁদের উৎপাদন খরচ ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমে এসেছে। তাঁরা জানান, সনাতন পদ্ধতিতে এক একর জমিতে ২০ কেজি বীজ লাগে। বীজ বপনের ৩০ থেকে ৩৫ দিন পরে বীজতলা থেকে চারা তুলে খেতে লাগাতে হতো। এ কাজে ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক লাগত। অথচ ড্রাম সিডারের মাধ্যমে এক একর জমিতে সরাসরি ধান বপন করতে একজন শ্রমিকই যথেষ্ট। যেখানে সনাতন পদ্ধতিতে বীজ লাগত ২০ কেজি, সেখানে ড্রাম সিডার পদ্ধতিতে বীজ লাগবে ১০ কেজি। জমি ও পরিবেশভেদে আউশ, আমন ও বোরো তিন মৌসুমেই এই প্রযুক্তিতে চাষ করা যায়। তবে আউশ ও বোরো ধান চাষের জন্য এটি বেশি উপযোগী। সম্প্রতি উপজেলায় ড্রাম সিডারের সাহায্যে সরাসরি ধানের চারা রোপণের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে চিরিরবন্দরের নশরতপুর ইউনিয়নের ডাক্টারপাড়া গ্রামে এই প্রদর্শনী হয়। এ উপলক্ষে একটি কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মাহমুদুল হাসান জানান, বোরো মৌসুমে চিরিরবন্দর উপজেলায় বেশ কিছু জমিতে রসুন চাষাবাদ করা হয়। কৃষক ঘরে রসুন তোলার পরপরেই জমিতে আউশ নেরিকা ধান বপনের জন্য অল্প সময়ে ড্রাম সিডার পদ্ধতি খবই লাভবান। তিনি আরও বলেন, এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হওয়ায় আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পুরো উপজেলাতেই ড্রাম সিডারে ধান চাষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top