সকল মেনু

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ দায়িত্ববোধ বাড়িয়ে দিয়েছে

হটনিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারের অর্জন অনেক। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ একদিকে যেমন গৌরবের, অন্যদিকে আমাদের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ। এই উত্তরণ আমাদের দায়িত্ববোধ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এবার আমাদের শুরু হবে নতুন লক্ষ্যের দিকে যাত্রা। উন্নত দেশের কাতারে শামিল হতে চাই আমরা। যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে এ লক্ষ্য অর্জনে সকলে কাজ করে যাব আরো বেশি উৎসাহ এবং উদ্দীপনা নিয়ে- এই হোক আমাদের শপথ। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশের উত্তরণের সাফল্য ২২ মার্চ থেকে জাতীয়ভাবে উদযাপন উপলক্ষে আজ বুধবার দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।তিনি বলেন , ‘ভিশন ২০২১’-এ আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সকলের প্রচেষ্টায় নির্ধারিত সময়ের তিন বছর পূর্বেই আমরা এ লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছি। এ অর্জন সকলের, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এ অর্জন ব্যতিক্রমধর্মী। বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেটি উত্তরণের জন্য জাতিসংঘ নির্ধারিত তিনটি নির্ণায়কই সফলভাবে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের জাতীয় মাথাপিছু গড় আয় বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১,৬১০ মার্কিন ডলারে। গত দুই বছর ধরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ অতিক্রম করেছে। উল্লেখ্য, মাথাপিছু গড় আয় বিবেচনায় বিশ্বব্যাংকের সূচক অনুযায়ী ২০১৫ সালেই আমরা ‘নিম্ন আয়ের’ তালিকা থেকে বের হয়ে ‘নিম্নমধ্যম আয়ের’ দেশে পরিণত হয়েছি।”

এছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতসহ অন্যান্য আর্থসামাজিক খাতে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্জন রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশেষ করে গত এক দশকে পাঁচ বছর বা তার কম বয়সের শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে এবং মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি ও বয়স্ক শিক্ষার হারও সন্তোষজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার মেয়েদের জন্য স্নাতক পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এখন বছরের প্রথম দিনেই প্রায় ৩৬ কোটি বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার চালু করেছে কমিউনিটি ক্লিনিক। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় প্রতি বছর প্রায় দুই কোটি অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয়। সমন্বিত এ সকল কার্যক্রমের ফলে গত এক দশকে দারিদ্র্যের হার কমে গেছে আশানুরূপভাবে। এ ছাড়াও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারী-পুরুষ বৈষম্য হ্রাস, পরিবেশ সুরক্ষা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস প্রভৃতি খাতে সাফল্যের ফলে বাংলাদেশ বারবার আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী ।

‘তবে, আমাদের অর্জন এখানেই থেমে থাকবে না’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার নতুন গন্তব্য আমরা নির্ধারণ করেছি। এখন সে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাব আমরা। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়। এরপর শান্তিতে সংগ্রামে সকল ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার পথে এগিয়ে চলেছি আমরা। আর এ পথ-পরিক্রমায় গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ছিল স্বল্পোন্নত তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ।

আজ সেই ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। জাতির এই আনন্দঘণ মুহূর্তে তিনি নিজের এবং সরকারের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এ দিনটি উদযাপন উপলক্ষে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ সমন্বিতভাবে ২২-২৩ মার্চ ২০১৮ দুই দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে জেনে তিনি আনন্দিত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top