সকল মেনু

স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকল্প ‘স্বপ্ন’ এর জাতীয় কর্মশালা সম্পন্ন

হটনিউজ ডেস্ক: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং ইউএনডিপি সরকারী সম্পদ রক্ষণাবেক্ষনের মাধ্যমে উপকূলবর্তী, দুর্যোগ ঝুঁকিপ্রবণ এবং দারিদ্র পীড়িত ২২ টি জেলায় উৎপাদনশীল ও সম্ভাবনাময় কর্মে ও সুযোগ গ্রহণে নারীর সামর্থ্য উন্নয়ন প্রকল্প ‘স্বপ্ন’ এপ্রিল ২০১৫ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ৮৫৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে মোট ১০৩০ টি ইউনিয়নে প্রকল্পটির কাজ চলছে। আজ সকালে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও-এ আয়োজিত এক জাতীয় কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অতিথি হিসেবে ঢাকাস্থ স্পেনের রাষ্ট্রদূত আলেজ্যান্ড্রা লোপেজ গার্সিয়া, ইউএনডিপি’র বাংলাদেশস্থ কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদিপ্ত মুখার্জি এবং আইএলও-র বাংলাদেশস্থ কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিবাস বি. রিডি সহ দেশী-বিদেশী সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক সভাপতির বক্তব্যে বর্তমান সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে অতিদরিদ্র নির্মূলের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে গ্রামীণ পর্যায়ে নারীদের ক্ষমতায়নে ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে উপার্জনক্ষম করে গড়ে তুলতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ২৬ মে প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছেন। ইউএনডিপি ছাড়াও এসডিজিএফ, আইএলও এবং বিএসআরএম প্রকল্পটিতে উন্নয়ন সহযোগি হিসেবে কাজ করেছে।
কর্মশালায় বক্তারা প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবন দেশে জনসংখ্যা জনশক্তিতে রূপান্তরিত করা না গেলে অর্থনীতির বুনিয়াদ শক্তিশালী করা সম্ভব নয়। উপকূলীয় অঞ্চলে নারীরা সবচেয়ে বেশি অসহায়। এ প্রকল্প গ্রামীণ দরিদ্র ও অসহায় নারীদের কারিগরী ও কর্ম সহায়ক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের সাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পারবে।
কর্মশালায় জানানো হয়, প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ইউনিয়নে বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, অসহায়, স্বামী কাজ করতে অক্ষম মোট ৩৬ জন মহিলাকে ১৮ মাসের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট মেরামত, পুকুর ও মাঠ সংস্কার, বাধ সংস্কার ও মেরামত, বৃক্ষরোপন ইত্যাদি বিবিধ কাজে দৈনিক দুইশত টাকা মজুরী প্রদান করা হবে যা থেকে পঞ্চাশ টাকা বাধ্যতামূলক সঞ্চয় হিসেবে স্থানীয় ব্যাংকসমূহে সংরক্ষিত ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়। মহিলাদেরকে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, নারী-পুরুষ সম্পর্ক উন্নয়ন, নারী অধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন ও দূর্যোগ মোকাবেলা, স্বশিক্ষণ সহজ হিসাব, নেতৃত্ব উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের করণীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ে কুড়িগ্রাম ও সাতক্ষীরা জেলার ১৪ টি উপজেলার ১২৪ টি ইউনিয়নের মোট ৪ হাজার ৪ শ ৬৪ জন মহিলা উপকারভোগীকে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, সারাদেশে ৬৫ হাজার দুস্থ নারীর ক্ষমতায়ন ও একটি অনুকরণীয় মডেল প্রতিষ্ঠা করা।
কর্মশালায় জানানো হয়, দেশের দারিদ্র ও অতিদরিদ্র দূরীকরণে বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পের চেয়ে এ প্রকল্পটি ভিন্ন মাত্রা আনবে। উপকারভোগীদের আয়ের একটি অংশ সঞ্চয় হিসেবে জমা থাকার কারণে কাজের মেয়াদ শেষে তারা সে অর্থ দিয়ে ক্ষুদ্র আকারে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পারবে। এছাড়াও বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি পোশাক শিল্পসহ নানা খাতে কাজ করে দরিদ্রতার অভিশাপ হতে মুক্তি পাবে।
কর্মশালায় উপকারভোগী আঞ্জুমান আরা বলেন, “স্বপ্ন আমাকে দিনের আলোয় স্বপ্ন দেখাতে শিখিয়েছে”। স্বামী পরিত্যাক্তা বা নানা কারণে সমাজ যখন আমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার কারণে অসহায় ছিলাম, তখন এ প্রকল্প আমাদের নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছে। আমরা এখন স্বাবলম্বী। সমাজও আমাদের সমীহের চোখে দেখে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top