সকল মেনু

বাংলাদেশ চায় পানি, ভারত প্রতিরক্ষা চুক্তি

হটনিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরের প্রস্তুতিমূলক আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শংকর।

পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময়সূচি ও দ্বিপক্ষীয় আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করবেন জয়শংকর। বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। রাতে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন তিনি।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর দু’দফা স্থগিত হয়েছিল। তবে এবার এই সফর হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এপ্রিলের প্রথমভাগে এ সফরের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

প্রধানমন্ত্রীর সফরে কী বিষয়ে আলোচনা হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পানি বন্টন ও অভিন্ন অববাহিকা ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হবে। ২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফরের সময়  তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য সময় চেয়েছিলেন। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এবারও মোদি একই রাস্তায় হাঁটবেন।

পানি বন্টনের মধ্যে তিস্তা চুক্তি ও পানি সংরক্ষণের জন্য গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

২০১১ সালে বাংলাদেশ ও ভারত তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে একমত হয়েছিল। কিন্তু তখন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে এ চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের গণমাধ্যমের কাছে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আবারও আপত্তি জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, অনেক সময় সরকার সংবাদপত্রের মাধ্যমে বার্তা দিতে চায়।

গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, ভারতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্পের পক্ষে বাংলাদেশ এরই মধ্যে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ভারতকে সরবরাহ করেছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৯৬ সালে গঙ্গা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর বাংলাদেশ গঙ্গা ব্যারাজ তৈরি করার উদ্যোগ নেয়। এই ব্যারাজ নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ও ভারত মিলে যৌথ টেকনিক্যাল টিমও গঠন করেছে।

এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি যৌথ টেকনিক্যাল টিম গঠন করার বিষয়ে দুই দেশ একমত হয়েছে। ঢাকা চায় শিগগিরি তারা কাজ শুরু করুক।

প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে বাংলাদেশ পানি চাইলেও ভারত কী চায় জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেন, দিল্লির প্রথম অগ্রাধিকার নিরাপত্তা এবং তারা সেটি বাংলাদেশের কাছ থেকে পেয়েছে। এখন তারা নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করার মাধ্যমে তাদের প্রস্তুতকৃত সামরিক সরঞ্জাম বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করতে চায়। এজন্য তারা বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি করার প্রস্তাব দিয়েছে।

গত বছর ঢাকা সফরের সময় এই চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশের কাছে প্রস্তাব করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর।

গত বছর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর ঢাকা সফরের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর সফল ঢাকা সফরের পরে ভারত নড়েচড়ে বসে এবং তারপরই ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশের সামনে প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়টি উপস্থাপন করেন।

শুধু প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক নয়, ভারত প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় করার জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার লাইন অফ ক্রেডিট দিতে চায় বাংলাদেশকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারের আরেক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিরক্ষা বিষয়ে প্রায় ১০টির মতো চুক্তি আছে। কিন্তু তার মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর অনেক শক্তিশালী দেশ অনেকবার বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ কারো সঙ্গে এ চুক্তি স্বাক্ষর করে নাই। কিন্তু এবারে বাংলাদেশ ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top