সকল মেনু

ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে উচ্চ গতিসম্পন্ন এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর মহাপরিকল্পনা

ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে উচ্চ গতিসম্পন্ন এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর মহাপরিকল্পনা
ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে উচ্চ গতিসম্পন্ন এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর মহাপরিকল্পনা

ঢাকা, ১৩ অক্টোবর ২০১৫, নিরাপদনিউজ : সরকার দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুট ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে মাত্র দু’ঘন্টায় যাতায়াতের লক্ষে উচ্চ গতিসম্পন্ন এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে এ রুটে যাতায়াত করতে ছয়-সাত ঘন্টা সময় লাগে।
মহাপরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা জানান, পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রকল্প সম্পন্ন করা হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা চালানোর জন্য চীন রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপকে দায়িত্ব দিয়েছিল সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারের কাছে এর প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে তাঁর সামনে গত ৮ অক্টোবর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফিরোজ সালাহ উদ্দিন ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেস রেলওয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পের একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন।
এ সময় রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র মতে, প্রস্তাবিত প্রকল্পে ঘন্টায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে একযোগে ১০টি ট্রেন চালানোর জন্য ৩০০০ একর জমি ও নিরবচ্ছিন্ন ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহের প্রয়োজন হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত ট্রেনে যাত্রী ও পণ্য উভয় পরিবহন করা হবে, কিন্তু যাত্রী পরিবহন অগ্রাধিকার পাবে।
এই ট্রেনে ভ্রমণে যাত্রীদের সময় এবং খরচ উভয় কমবে সেই সাথে যাত্রা আরামদায়ক করলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম রুটে ভ্রমণকারী মোট যাত্রীর ৮০ শতাংশ উচ্চ গতির ট্রেনের যাত্রী হতে আগ্রহী হবে।
এক্সপ্রেস রেলওয়ের সাথে কক্সবাজার যুক্ত থাকলে পর্যটন শহরে ভ্রমণ সহজ হবে।
সূত্র জানায়, এক্সপ্রেস রেলওয়ে স্থাপন করা হলে যোগাযোগের ক্ষেত্র ব্যাপক সম্প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে আন্তঃরাষ্ট্রীয় যোগাযোগের একটি সুযোগ তৈরি হবে।
রাজধানী কেন্দ্রিক একমুখী রেল ব্যবস্থার পরিবর্তে মাল্টিডিরেকশনাল রেল লিংক স্থাপন করা হবে। এক্সপ্রেস রেলওয়েতে ভ্রমণের খরচ বিমান ও বাস রুটের তুলনায় কম হতে হবে।
বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে যাতায়াতের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ঘুরে যেতে হয়, কিন্তু এক্সপ্রেস লাইন প্রবর্তন হলে এই রুটের দুরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার কমে যাবে।
প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, উচ্চ গতির এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথমে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা, কুমিল্লার দাউদকান্দি ও মোহনপুর হয়ে কুমিল্লার ময়নামতি পর্যন্ত যাবে এবং এরপর বিদ্যমান কুমিল্লা-চট্টগ্রাম রেল লাইনের পাশ দিয়ে সমান্তরালভাবে চালাবে।
প্রস্তাবিত রুটে, ১১০ কিলোমিটার নতুন রেললাইনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে, এটি শুধুমাত্র ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে এবং বিদ্যমান রেললাইনের ভূমিতে অবশিষ্ট অংশের রেলপথ নির্মান করা হবে।
কর্মকর্তারা জানান, ডিজেল দিয়ে স্ট্যান্ডার্ড গেজের পথে ট্রেন চালানো হলে এর গতি ঘন্টায় ১৬০ কিলোমিটার হতে পারে, কিন্তু এটা বিদ্যুতের দিয়ে চালানো হলে ঘন্টায় গতি ২০০ কি.মি. পর্যন্ত বেড়ে যাবে।
কর্মকর্তারা আরো জানান, দেশের দুই প্রধান শহরের মধ্যে এক্সপ্রেস রেলপথ নির্মাণের জন্য কয়েকটি চীনা কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উচ্চ গতির এই ট্রেন চালু হলে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এটি একটি নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচিত হবে।
প্রস্তাবিত ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেস রেলওয়ের পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার পরে প্রধানমন্ত্রী, দেশ ও জনগণের দীর্ঘমেয়াদী সুবিধার কথা বিবেচনা করে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, খরচ যাই হোক না কেন ভবিষ্যতে দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য সেরা প্রস্তাবনাই বেছে নিতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার যা প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করায় সহায়ক হবে।-বাসস

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top