সকল মেনু

একনেকে ২,৬৫৮ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ৭ প্রকল্প অনুমোদন

3037

ঢাকা, ১৩ অক্টোবর ২০১৫, নিরাপদনিউজ : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পদ্মা সেতুর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর একটি নতুন ব্রিগেড প্রতিষ্ঠাসহ ২,৬৫৮ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ সাতটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সরকার পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন ‘পদ্মা বহুমুখী সেতুর’ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাজিরা প্রান্তে একটি ব্রিগেড স্থাপন করবে। একইসাথে সেতুর মাওয়া প্রান্তের নিরাপত্তা ও তদারকির জন্য স্থাপনাও নির্মাণ করা হবে।
এ লক্ষ্যে আজ একনেক সভায় ‘পদ্মা বহুমুখী সেতুর’ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ‘নির্মাণাধীন পদ্মাসেতু বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ স্থাপনা। এর নিরাপত্তার জন্যই সেতুবিভাগ থেকে প্রাপ্ত ১১৫ একর জমিতে ‘৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড’ স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২০১৯ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।’
একনেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চলতি বছরে একনেকের ১০ম বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
একনেক সভায় জাতীয় সংসদ ভবনের নকশা প্রণয়নকারী বিখ্যাত স্থপতি লুই আই কানের মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী আরো পর্যালোচনার জন্য শেরে বাংলানগরে জাতীয় সচিবালয় স্থানান্তরের প্রকল্পটি ফেরৎ দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফিং দেন। তিনি বলেন, মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ২ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৫০৪ কোটি টাকা।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান প্রেস ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন।
সচিবালয় স্থানান্তর প্রকল্প সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে লুই আই কানের মূল নকশা সংগ্রহ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে যে, দেশে এই মুহূর্তে সেই পরিকল্পনা থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে অথবা বিগত বছরগুলোতে অন্য কোন ধরনের পরিবর্তন ঘটে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করতে চাইছেন যে, জাতীয় সংসদ ভবনের মূল পরিকল্পনা যেন কোনভাবেই বদলানো না হয়।
কামাল বলেন, মূল নকশা না পাওয়া পর্যন্ত, সচিবালয় স্থানান্তরের কর্মকা- স্থগিত থাকবে।
তিনি জানান, পরিকল্পনার মূল কপি পাওয়ার পর পরই তারা প্রকল্প চূড়ান্ত করবেন।
একনেক সভায় নগরীর বেইলী রোডে ‘মন্ত্রীদের এপার্টমেন্ট-৩ নির্মান’ সংক্রান্ত আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ তলা বিশিষ্ট এপার্টমেন্ট নির্মাণের প্রস্তাব করেছিল।
তবে, প্রধানমন্ত্রী এপার্টমেন্টগুলো ছয়তলা পর্যন্ত সীমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী হেয়ার রোড ও মিন্টু রোডের জন্য একটি মিনি-মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করার নির্দেশ দেন যাতে ভবিষ্যতেও এই এলাকার গাছগাছালির সবুজ দৃশ্যপট ও সৌন্দর্য সংরক্ষিত থাকে।
কামাল আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, এই এলাকায় বহুতল ভবন নির্মান করা হলে গাছপালা ও সৌন্দর্য বিনষ্ট হতে পারে। এখনও এই এলাকায় বহুতল ভবন হয়নি।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য বসতভিটা তৈরি এবং মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসন ভবন নির্মাণে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) পৃথক তিনটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।
সভায় জানানো হয়, ‘গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায় (ক্লাইমেট ভিকটিমস্ রিহ্যাবিলিটেশন)’ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ঘূর্ণিঝড় ও নদীভাঙ্গনের ফলে ভূমিহীন ১০ হাজার পরিবারের মধ্যে বসতবাড়ি বিতরণ করা হবে।
অপরদিকে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা দূর করতে ১০৬৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য আজকের একনেক সভায় ৮৫২ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। গণপূর্ত ও স্থাপত্য অধিদপ্তর ২০১৯ সালের জুন নাগাদ এ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করবে।
মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে আজকের একনেক সভায় ৬০২ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ আরো একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
এছাড়া একনেকে ৪৫ কোটি টাকায় ‘খুলনা (রূপসী)-শ্রীফলতলা-তেরখাদা সড়ক উন্নয়ন’ এবং ৮৫২ কোটি টাকায় ‘নাজিরহাট-মাইজভান্ডার সড়ক উন্নয়ন’ নামক প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ সভায় যোগ দেন। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।-বাসস

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top