সকল মেনু

শিশু সন্তানকে বিক্রি করলেন এক মাদকাসক্ত দম্পতি

download (8).নুরুন্নবী বাবু দিনাজপুর প্রতিনিধি:কের নেশার টাকা জোগার করতে না পেরে নিজের শিশু সন্তানকে হিজড়ার কাছে বিক্রি করে দিলেন এক মাদকাসক্ত দম্পতি। মাত্র এক হাজার একশত এক টাকা এবং দুটি শাড়ীর বিনিময়ে এই শিশুটিকে বিক্রি করা হয়। হাকিমপুর উপজেলার মধ্যবাসুদেবপুরের চুড়িপট্টি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে । এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চ্যলের সৃষ্টি হয়েছে।

চুরিপট্টি গ্রামের রেজাউল করিম এই প্রতিনিধি নুরুন্নবী বাবুকে জানান, দুলালি(কালি)হিজড়া (৪০) দীর্ঘ ৫-৬ বছর ধরে আমার বাড়ীতে ভাড়া থাকে। গতকাল শনিবার বিকেলের দিকে মাদকাসক্তস্বামী-স্ত্রী দুইজনই বাড়ীতে ঢুকে তাঁর কোলের শিশুপুত্রকে আমার বাড়ির ভাড়াটিয়া দুলালি হিজড়ার কাছে বিক্রি করে।

 

দুলালি (কালি)হিজড়া বলেন, বাচ্চার মা ও বাবা দুইজনই হেরোইন খায়। তাঁরা হেরোইন খাওয়ার টাকা না পেয়ে তাদের শিশু সন্তানকে আমার কাছে বিক্রি করে। আমার বড় বোনের কোনো ছেলে মেয়ে না থাকায় আমি বাচ্চাটিকে তাদের জন্য কিনে নেয়। এক হাজার একশত এক টাকা এবং দুটি শাড়ীর বিনিময়ে বাচ্চাটিকে আমি কিনি।
তিনি আরও জানান, বাচ্চাটিকে ঠিকমত দুধসহ অন্যান্য খাবার দিতে না পারায় বাচ্চাটি ওই সময় খুব কান্নাকাটি করছিল। এ কারণে আমার মায়া লাগায় আমি বাচ্চাটিকে লালন-পালনের জন্য কিনে নেয়। গতকাল বাচ্চা টিকে কিনে নেওয়ার পর থেকে কৌটার দুধ, গরুর দুধ কিনে খাওয়ায়েছি। যতœ করায় বাচ্চাটি খুব ফুটফুটে হয়েছে।

 

প্রতিবেশি মোফাজ্জল হোসেন বলেন, নেশার টাকা যোগাড় করতে না পেয়ে মাদকাসক্ত স্বামী-স্ত্রী তাদের ফুটফুটে শিশু সন্তানটিকে বিক্রি করেছে। প্রতিদিন তাঁরা এই চুড়িপট্টিতে এসে হেরোইন খেয়ে আবার চলে যায়। বাচ্চার বাবার নাম শামছুল আর মায়ের নাম নুরজাহান বলে তিনি জানান।
দুলালি(কালি) হিজড়ার ভগ্নিপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল শনিবার রাতে দুলালির ফোন করে জানায় তোমাদের জন্য একটা বাচ্চা কিনেছি। তোমরা কাল (আজ রোববার) চলে আসো। তাই নাটোরের বাগাতিপাড়ার বাটিকামারী থেকে তীতুমীর ট্রেন ধরে বাচ্চাটিকে নিতে এসেছি।

দুলালি (কালি) হিজরার বোন আলেয়া বেগম (৪৫) আবেগাপ্লাতু হয়ে বলেন, বাচ্চাটিকে পেয়ে আমার উজার কোল আলোকিত হয়েছে। আমার জীবন এখন পূর্ন হলো। আমরা বাচ্চার নাম রেখেছি শাহা আলম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মাদকসেবি বলেন, আমরা জানি বাচ্চার মা ও বাবার বাড়ী দিনাজপুরের পার্বতীপুরে। সেখান থেকে তাঁরা প্রতিদিন ট্রেনে করে হিলিতে এসে এপার-ওপারে (ভারত) খালি বোতল, পলিথিনসহ কাগজ কুড়ে বিক্রি করে যা জুটতো তাই দিয়ে দুইজনেই হেরোইন খায়। কোনোদিন এখানে থাকে, আবার কখনও পার্বতীপুরে চলে যায়।

স্থানিয় এলাকাবাসী রাশেদা বেগম ও মাছুদা বেগম বলেন, গত শীতের সময় হেরোইন খেতে এসে বাচ্চাটি পাশের একটি জায়গায় জন্ম নেয়। ওই সময় থেকে বাচ্চাটিকে দেখে আসছি। তাদের নেশার টাকা ও বাচ্চার খাবারের টাকা যোগাড় করতে না পারায় তারা বাচ্চাটিকে বিক্রি করেছে।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আহসান হাবীব বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top