সকল মেনু

ফাঁসিই বুদ্ধিজীবী হত্যার একমাত্র সাজা: এটর্নি জেনারেল

1449488867

নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ০৭ ডিসেম্বর : মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড সীমাহীন অপরাধ বলে উল্লেখ করে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘সর্বোচ্চ শাস্তি ফাসিঁই এ অপরাধের একমাত্র সাজা। ফাঁসি ছাড়া এর অন্য কোনো বিকল্প সাজা নেই।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যে সকল মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় দিয়েছে তা যেন বহাল থাকে সোমবার এর স্বপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন এটর্নি জেনারেল।
মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের প্রাক্কালে জাতির মেধাবী সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড এবং হত্যা-গণহত্যাসহ সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) মোট চারটি অপরাধের দায়ে নিজামীর ফাঁসির আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। নিজামীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন আনীত মোট ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে ৮টি অর্থাত্ ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৮ ও ১৬ নম্বর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।
এর মধ্যে চারটি অর্থাৎ সাঁথিয়া উপজেলার বাউশগাড়িসহ দু’টি গ্রামে প্রায় সাড়ে ৪’শ মানুষকে গণহত্যা ও প্রায় ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ (২ নম্বর অভিযোগ), করমজা গ্রামে ১০ জনকে গণহত্যা, একজনকে ধর্ষণসহ বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ (৪ নম্বর অভিযোগ), ধুলাউড়ি গ্রামে ৫২ জনকে গণহত্যা (৬ নম্বর অভিযোগ) এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড ও সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (১৬ নম্বর অভিযোগ) দায়ে নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। অন্য চার অভিযেগি-পাবনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাওলানা কছিমুদ্দিন হত্যা (১ নম্বর অভিযোগ), মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র (৩ নম্বর অভিযোগ), বৃশালিখা গ্রামের সোহরাব আলী হত্যা (৭ নম্বর অভিযোগ) এবং রুমী, বদি, জালালসহ সাত গেরিলা যোদ্ধা হত্যার প্ররোচনার (৮ নম্বর অভিযোগ) দায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। ৫ ও ৯ থেকে ১৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এসব অভিযোগ থেকে তাকে খালাসদেয় ট্রাইব্যুনাল।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদন্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীর আনা আপিল মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন সোমবার শেষ করেছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চে নিজামীর আপিল মামলায় আজ দশম দিনের মতো শুনানি হয়। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। আজ সোমবার সকালে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্তি এটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজউদ্দিন ফকির।
অপরদিকে নিজামীর পক্ষে তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনসহ এডভোকেট এস এম শাহজাহান, শিশির মনির, নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ আপিল মামলার শুনানি গত ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হয়। গত ২৫ নভেম্বর ষষ্ঠ দিনের মতো শুনানি শেষে ৩০ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শুরুর দিন ধার্য করা হয়। সে অনুযায়ি নিজামীর আপিল মামলায় ৩০ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শুরু হয়। গত ২ ডিসেম্বর তৃতীয় দিনের মতো আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক পেশ শেষ করে। ট্রাইব্যুনালে নিজামীর বিরুদ্ধে প্রমাণিত আটটি অভিযোগে সাক্ষ্য-প্রমাণ বিষয়ে তিন কার্যদিবস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে আসামিপক্ষ। এর বিপরিতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক পেশ শুরু করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে আপিল বিভাগ এক আদেশে ৩০ নভেম্বর, ১ ও ২ ডিসেম্বর আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ধার্য করে দেয়। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আজ ৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করে দেয়। এরপর উভয়পক্ষে পরস্পরের যুক্তিখন্ডনের জন্য কাল ৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য রয়েছে। আপিল মামলাটির শুনানির শুরুতে গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ছয় কার্যদিবস মামলার পেপার বুক উপস্থাপন করা হয়।
খবর বাসসের।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top