সকল মেনু

কেউ ফেভারিট মানছে না রাসেলকে

57405_s1খেলাধূলা ডেস্ক: বাংলাদেশে এবারের সুপার কাপ খেলা নিয়ে সন্দেহ জমেছিল প্রথমে। ক্লাবগুলো বলছিল, ঘরোয়া কঠিন মওসুম শেষে সুপার কাপে খেলতে প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় হাতে নেই। তবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এ আসর আয়োজনে আলাদা মনোযোগ দেখালে সুপার কাপ ঠিক ঠিক মাঠে গড়াচ্ছে তৃতীয়বারের মতো। আর এ আসরকে ঘিরে ভিন্ন স্বপ্ন দেখছেন খেলোয়াড়-কোচেরাও। সামনের সপ্তাহে সুপার কাপের উদ্বোধন রেখে দুই গ্রুপে আট দলের রাউন্ড রবিন পর্বের বাছাই চূড়ান্ত হয়েছে গতকাল। মহানগীর এক হোটেলে সুপার কাপে আট দলের এ ড্র হয় জাঁকজমক অনুষ্ঠানে। নাচ-গানে সুরেলা ও বর্ণিল এ ড্র অনুষ্ঠানে সুপার কাপে বাফুফের আগাম মনোযোগ দেখা গেছে স্পষ্ট। এ’ গ্রুপে লড়বে দ্বিতীয় সুপার কাপের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড, বাংলাদেশে এবারের ফুটবলে ত্রিমুকুট বিজয়ী শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র ও ফেনী সকার ক্লাব। বি’ গ্রুপের লড়াই সূচনা সুপার কাপের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেড, শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব, টিম বিজেএমসি ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের। এবারের সুপার কাপ ঘিরে এবার খেলোয়াড়রাও দেখছেন আলাদা স্বপ্ন। এবারের সুপার কাপে বিদেশী ফুটবলার নেই কোন দলেই। আর এ কারণে এবারের সুপার কাপ আসরকে পরবর্তী জাতীয় ফুটবল দলে ঢোকার দরজা মনে করছেন ফুটবলাররা। আর বিদেশী ফুটবলারের অবর্তমানে এ আসরে শিরোপা স্বপ্ন দেখছেন প্রতি দলের নেপথ্য কুশীলবরাও। বিদেশী ফুটবলারবিহীন এ আসরে নৈপুণ্য-সামর্থ্যে আট দলকে কাছাকাছি শক্তির মনে করছেন কোচেরা। ক্লাব ফুটবলে সুপার কাপ খেলা হয় বিশ্বের শীর্ষ খেলুড়ে সব দেশেই। ওটা ফুটবলের পরিপূর্ণ কোন আসর নয়। এতে বছরের সফল দুই দলের এক ম্যাচের লড়াই শেষে বিজয়ী দল নিয়ে যায় সুপার কাপ। পেশাদার মওসুম শেষে সুপার কাপে মোকাবিলায় নামে প্রতি দেশের লীগ ও ঘরোয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন দল। তবে বাংলাদেশে সুপার কাপ সব দিক দিয়েই ভিন্ন। এটি রীতিমতো বহু দলের অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতামূলক এক আসর। স্পেন-ইতালি-জার্মানি-ইংল্যান্ড অথবা ইউরোপিয়ান সুপার কাপ খেলা দিয়ে ফুটবলে মওসুম শুরু করার রেওয়াজ। তবে বাংলাদেশে ফুটবলের সুপার কাপটি মওসুম সমাপনী আসর। দলগুলোর জন্য আকর্ষণীয় প্রাইজমানি ও গ্যালারিতে দর্শক টানতে নানা পুরস্কার-উপহার বিনিময়ের ঘটনাও বাংলাদেশের ফুটবলে প্রথম দেখা যায় এই সুপার কাপেই। আর বিশাল বাজেট নিয়ে বিরাট অর্থ পুরস্কারে আসরটির নামই হয়ে গেছে ‘কোটি টাকার সুপার কাপ।’ তবে এক্ষেত্রে এবারেরটিকে আধা-কোটি টাকার সুপার কাপ বলতে হবে। এবার সুপার কাপে পুরস্কারের অর্থের অঙ্কটা নেমেছে অন্যবারের তুলনায় অর্ধেকে। চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য এবার কোটি টাকার বদলে রাখা হয়েছে ৫০ লাখ। দেশের ফুটবল যখন মুমূর্ষু তখনই বাংলাদেশে সুপার কাপের আবির্ভাব। এ আসর আয়োজনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-এর সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন দেখিয়েছেন বিশেষ ভূমিকা। ২০০৯-এ প্রথম সিটিসেল সুপার কাপ ও এক কোটি টাকার চেক নিয়ে যায় মোহামেডান। দ্বিতীয় দফায় ২০১১’র গ্রামীণফোন সুপার কাপ ঘরে তোলে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে মোহামেডানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেডই। মওসুমে ট্রেবলজয়ী শেখ রাসেলকে সুপার কাপেও ফেভারিট ভাবতে চান না জায়ান্ট অপর দলগুলোর কোচেরা। যেমন- মোহামেডান স্পোর্টিংয়ের কোচ সাইফুল বারি টিটু বলেন, বিদেশী ফুটবলার না থাকায় সুপার কাপে কোন দলই একক ফেভারিট। ভাল মানের দেশী ফুটবলার রয়েছে প্রতিদলেই। আসরে যারা তাল-ছন্দ ভাল দেখাবে, শিরোপা জয়ে তারাই থাকবে এগিয়ে। দেশী খেলোয়াড়দের নিয়ে এবারের আসরে ফুটবলারদের ভিন্ন লক্ষ্যের কথা বলেন আবাহনী অধিনায়ক ওয়ালি ফয়সালও। বলেন, সুপার কাপে ভাল খেলতে সবাই জান বাজি রাখবে নিশ্চিত। বিদেশী খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতিতে এতে আমরা বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মাঠে সুযোগ বাড়বে। আর পরবর্তী জাতীয় দলে জায়গা পেতে সুপার কাপে নিজেদের সেরা নৈপুণ্য দেখাতে চাইবেন ফুটবলাররাও। শুধুমাত্র দেশী ফুটবলারের এ আসরে দলগুলোর শক্তির ফারাক কম দেখছেন আবাহনী কোচ অমলেশ সেনও। আর বলেন, আমি মনে করি বড় আসরে নামার আগে একটি দলের কমপক্ষে তিন সপ্তাহের নিবিড় প্রস্তুতির প্রয়োজন। যা দলগুলো এবার পায়নি। গতকাল সুপার কাপের ড্রতে দলগুলোর নাম বাছাই করেন ইলিয়াস হোসেন, রহীম, আরিফ খান জয়, সালাম মুর্শেদীর মতো ফুটবলের সাবেকরা। এতে দলের পরিচয় পর্বে আট দলের জার্সি গায়ে একজন করে মডেলের পাশে মঞ্চে হাজির হন অধিনায়করা। তবে মডেলের গায়ে মোহামেডানের জার্সিটি ছিল চিরচরিত সাদা-কালোর বদলে গাঢ় সবুজ। পরে জানানো হয় এটি মোহামেডানের দ্বিতীয় জার্সি। বাংলাদেশের ফুটবলে ম্যাচের রেফারিং নিয়ে অসন্তুষ্ট-অপ্রীতিকর ঘটনা দেখো গেছে আগে। এ আসরে রেফারিং নিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বাড়তি মনোযোগ আছে কি? গতকাল সুপার কাপের ড্র শেষে এমন প্রশ্নে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ম্যাচ শেষে রেফারিং নিয়ে দু’দলের পরস্পর বিতর্ক বিশ্বে যে কোন বড় ম্যাচ শেষে নিয়মিতই দেখতে পাই। আমি নিজেও খেলোয়াড় ছিলাম। বড় ম্যাচ হারার হতাশা থেকেই এমন হয়। তবে এ আসরে বাফুফে সব বিষয়েই তীক্ষ্ম নজর রাখবে। কিন্তু খালি গ্যালারি দেখতে চান না কোন খেলোয়াড়ই। আমি বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমী দর্শকদের আমন্ত্রণ জানাতে চাইছি- আপনারা মাঠে এসে খেলা দেখুন! এবারের সুপার কাপ শুরু আগামী ১৪ই জুন। আর ২৫শে জুন ফাইনাল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top