সকল মেনু

খুলনায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৬ বাঘ শিকারি নিহত

cross-fire_151488নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ০৯ আগস্ট : গহীন সুন্দরবনে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইলিয়াস-জাহাঙ্গীর বাহিনীর ছয় বনদস্যু নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ সময় কয়রা থানার ওসিসহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি বাঘের চামড়া, চারটি বন্দুক, একটি বিদেশি পিস্তল ও ৫০ রাউন্ড গু

লি উদ্ধার করেছে। রোববার বিকাল পৌঁনে চারটার দিকে সুন্দরবনের মাদারবাড়িয়া খালের উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো- কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের চরামুখা গ্রামের আনসার সানা (৫৫), সিদ্দিক সানা (৪৪), বাপ্পী হোসেন (২৫), রফিকুল ইসলাম (৩৮), মামুন গাজী (২৫) ও একই ইউনিয়নের জোড়সিং গ্রামের মজিদ গাজী (৪৮)। আহত পুলিশ সদস্যরা হলো- কয়রা থানার ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার, এসআই  আব্দুল আজিজ, এসআই মনিরুজ্জামান, এএসআই মিজান এবং কনস্টেবল ওলিয়ার ও আল আমীন। খুলনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ত ম রোকনুজ্জামান জানান, সকালে সুন্দরবন সংলগ্ন চরামুখা গ্রামের গাজী বাড়ি এলাকা থেকে নাজমা বেগম নামে এক নারীসহ ইলিয়াস-জাহাঙ্গীর বাহিনীর সাত সদস্যকে তিনটি বাঘের চামড়াসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের বনদস্যু ইলিয়াস-জাহাঙ্গীর বাহিনীর সদস্য বলে জানায় এবং তাদের অস্ত্র ভান্ডার সুন্দরবনের গহীনে রয়েছে বলে স্বীকার করে।
দুপুরের পর পুলিশ তাদের নিয়ে সুন্দরবনের মাদারবাড়িয়া খালের উত্তর পাশে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে বনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা তাদের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও বনদস্যুদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি চালায়। ঘন্টাব্যাপী ‘বন্দুকযুদ্ধে’র একপর্যায়ে ক্রসফায়ারে পড়ে আটক বনদস্যু আনসার সানা, সিদ্দিক সানা, বাপ্পী হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মজিদ গাজী ও মামুন গাজী নিহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনটি বাঘের চামড়া, চারটি একনলা বন্দুক, একটি বিদেশি পিস্তল, ৫০ রাউন্ড গুলি এবং ৮ রাউন্ড গুলির খোসা ও কয়েকটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ হরেন্দ্রনাথ সরকারসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তবে আটক নাজমা বেগমকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
পাচার হচ্ছে সুন্দরবনের বাঘের হাড়
সুন্দরবন থেকে চোরা শিকারিরা শুধু বাঘই হত্যা করছে না। বাঘের হাড়ও বিদেশে পাচার করছে। গত শুক্রবার সকালে নগরীর নতুন বাজার লঞ্চ ঘাট থেকে বাঘের ৬৯টি হাড়সহ এনায়েত হোসেন (২২) ও বাবু (১৮) নামে দুই চোরা বাঘ শিকারিকে আটক করে। এনায়েত কয়রা উপজেলার গিলাবাড়ী গ্রামের আকরাম সরদারের ছেলে ও বাবু একই গ্রামের সালাম সানার ছেলে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা বাঘ হত্যা ও বাঘের হাড় পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, বাঘের চামড়া ও হাড় পাচারের সঙ্গে খুলনাসহ রাজধানী ঢাকার শক্তিশালী সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে। এই সিন্ডিকেট চীনসহ বিভিন্ন দেশে বাঘের চামড়া ও হাড় পাচার করে থাকে। খুলনায় ‘দালান বাড়ির মালিক’ বাঘের চামড়া পাচারকারী বুলবুল সুন্দরবনের বাঘের চামড়া ও হাড় পাচারকারীচক্রের মূলহোতা মজনু ও আসাদুজ্জামান বুলবুল। এদের মধ্যে মজনুর বাড়ি বরিশাল ও বুলবুলের বাড়ি কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি গ্রামে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মজনু ও বুলবুল দীর্ঘদিন ধরে বাঘের চামড়া ও হাড় পাচারের সঙ্গে জড়িত। বাঘের চামড়া ও হাড় পাচার করে এক সময়ের হত দরিদ্র বুলবুল খুলনা মহানগরীর জিরো পয়েন্টে ‘ দালান বাড়ি’ তৈরি করেছে। এছাড়া এলাকায় তিনি চলেন রাজার হালে। এলাকাবাসী জানান, পুলিশের ছেড়ে দেয়া চরামুখা গ্রামের নাজমা বেগমসহ বেশ কয়েকজন যুবক বাঘের চামড়া পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত।
জেল খেটেছে আনসার ও সিদ্দিক
পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত আনসার সানা ১৪ বছর ও সিদ্দিক ১০ বছর জেল খেটেছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মারধর, ডাকাতি, অপহরণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। নিহত বাকি চারজনও একাধিক মামলার আসামি।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top